আমাদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর প্রভাব আমাদের ত্বকে দেখা দিতে শুরু করে। ত্বকের বলিরেখা, সূক্ষ্মরেখা দেখা দিলে, অনেক বেশী বয়সের দেখায় সে ব্যক্তিকে। যদিও বার্ধক্য একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া যা আপনি থামাতে পারবেন না। তবে কিছু জিনিসের সাহায্যে আপনি ত্বকে বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করতে পারেন।
ত্বকে বলিরেখা দেখা দেওয়ার সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে কেরাটিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। কেরাটিন আমাদের ত্বক, চুল এবং নখে পাওয়া যায়। এটি এমন এক ধরনের প্রোটিন যা ত্বকের জন্য খুবই উপকারী এবং শরীরের যে কোনও ধরনের সংক্রমণ রোধ করে।
এমন কিছু জিনিস রয়েছে, যাতে কেরাটিনের পরিমাণ অনেক বেশি। এই সমস্ত জিনিস প্রতিদিন খেলে বলিরেখা বা সূক্ষ্মরেখা দেখা যায় না। এছাড়াও, এই সমস্ত খাবার খাওয়ার ফলে, আপনার বার্ধক্য প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায়। জানুন কেরাটিন সমৃদ্ধ কিছু খাবার সম্পর্কে।
সূর্যমুখীর বীজ (Sunflower Seeds)
সূর্যমুখীর বীজ খুবই সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর যা কেরাটিনের উৎপাদন বাড়ায়। এই বীজ চুলকে মজবুত ও কন্ডিশন করে। সূর্যমুখী বীজে প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড, সেলেনিয়াম, কপার এবং ভিটামিন ই রয়েছে। আপনি এই বীজ, খাবার বা পানীয়তে যোগ করে খেতে পারেন।
ডিম (Eggs)
ডিম খেলে শরীরে প্রাকৃতিক উপায় কেরাটিন তৈরি হয়। কেরাটিন উৎপাদনের জন্য বায়োটিন প্রয়োজন, তাই ডিম বায়োটিনের একটি ভাল উৎস যা থেকে কেরাটিন তৈরি হয়। একটি বড় ডিমে ৬ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়। যা, কেরাটিন গঠন বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও ডিমে ভিটামিন এ এবং বি১২, রাইবোফ্লাভিন, সেলেনিয়ামের মতো উপাদান পাওয়া যায়।
রসুন (Garlic)
রসুনে এন-এসিটাইলসিস্টাইন নামক একটি উদ্ভিদ-ভিত্তিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। যা, চুলের কোষকে সূর্যের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে এবং স্বাস্থ্যকর চুলের বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করে। কেরাটিনে এল-সিস্টাইন নামক একটি অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে। রসুন খেলে এটি গঠিত হয়। এছাড়া রসুনে ভিটামিন সি, বি৬, ম্যাঙ্গানিজ এবং আরও অনেক খনিজ পাওয়া যায়।
পেঁয়াজ (Onion)
পেঁয়াজ খেলে শরীরে কেরাটিনের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও, পেঁয়াজে রয়েছে ফোলেট, যা চুলের ফলিকলকে শক্তিশালী করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন।
সবুজ শাক -সবজি (Green Leafy Vegetables)
সবুজ শাক-সবজি যেমন পালং শাক, বাঁধাকপি এবং লেটুসে প্রচুর পরিমাণে কেরাটিন থাকে। ১ কাপ রান্না করা সবুজ শাক-সবজিতে ১৫.৩ মিলিগ্রাম কেরাটিন পাওয়া যায়। এছাড়াও, এই সবুজ শাক প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ এবং আয়রনের দুর্দান্ত উৎস।
মিষ্টি আলু (Sweet Potato)
মিষ্টি আলু বা রাঙা আলুতে অনেক ধরনের পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়। যার কারণে একে সুপারফুড বলা হয়। এই সবজিতে রয়েছে বিটা-ক্যারোটিন, যা এক ধরনের প্রোভিটামিন এ। এটি কেরাটিন তৈরি করে এবং যখন শরীর এই কেরাটিন ব্যবহার করে, তখন তা ভিটামিন এ-তে পরিণত হয়। যার কারণে আপনার চুল খুব স্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে। সাধারণ আলুর চেয়ে মিষ্টি আলু অনেক বেশি উপকারী বলে মনে করা হয়।
গাজর (Carrots)
ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে এবং ভিটামিন বি-৮, প্যানটোথেনিক অ্যাসিড, ফোলেট, পটাসিয়াম, আয়রন, কপার এবং ম্যাঙ্গানিজ এবং অন্যান্য অনেক খনিজ ও ভিটামিন গাজরে পাওয়া যায়। গাজরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং বিটা ক্যারোটিন পাওয়া যায়। যা সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে এবং ক্ষতিগ্রস্ত ত্বক মেরামত করতে সাহায্য করে।