সর্ষের তেল ছাড়া জমে না বাঙালি রান্না। ও যতই অলিভ অয়েল আসুক বৃষ্টিদিনে ইলিশ ভাজতে সর্ষের তেল ছাড়া আর কিছু মাথায় আসে না। বাঙালি বাড়িতে বিশেষ দিন তো বটেই সাধারণ দিনেও সর্ষের তেলেই রান্না হয়। সর্ষের তেলের ঝাঁঝ বাংলার রসনায় আলাদা মাত্রা যোগ করে। শুধু রান্নাতেই নয় সর্ষের তেলের রয়েছে বিবিধ গুণ। ম্যাসাজ, সিরাম ও হেয়ার ট্রিটমেন্টেও ব্যবহার করা হয় সর্ষের তেল।
দূরে রাখে জীবাণু -গবেষণা বলছে, সর্ষের তেল জীবাণু প্রতিরোধে সক্ষম। যা ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিতে বাধা দেয়। একটি টেস্ট-টিউব সমীক্ষা অনুযায়ী, সর্ষের তেল এসচোরিচিয়া কোলাই, স্টেফিলোকোকস এবং বেসিলস সেরেসের মতো ব্যাকটেরিয়াকে রোধ করে। তাই স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
ত্বক ও চুল- চুলে ও ত্বকের জন্য সর্ষের তেল খুবই উপকারী। সেজন্য এই তেল ফেস বা হেয়ার প্যাকেও ব্যবহার করা হয়। সর্ষের তেল ফাটা গোড়ালি সারিয়ে তোলে। সর্ষের তেল ত্বক সংক্রান্ত সমস্যা দূর করে। শিশুদের হাড় মজবুত করে। তাই প্রায়ই দুধের শিশুদের এই তেল দিয়ে মালিশ করা হয়। সর্ষের তেল বলিরেখা কমাতেও কাজ করে। সর্ষের তেলে রয়েছে ভিটামিন ই। ত্বক নরম রাখে।
ক্যানসার প্রতিরোধে- গবেষণা অনুযায়ী সর্ষের তেল নির্দিষ্ট ধরনের ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি ও বিস্তারকে শ্লথ করে দেয়। আর একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, খাঁটি সর্ষের তেল কোলন ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধিকে বাধা দেয়। আর একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে এই তেলে থাকা অ্যালিল আইসোথিওসাইনেট মূত্রাশয় ক্যানসারের বিকাশে প্রায় ৩৫% রুখে দিতে পারে।
হার্টের জন্য ভাল- সর্ষের তেলে থাকে উচ্চ পরিমাণে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। যা হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভাল। গবেষণা অনুসারে, সর্ষের তেল থাকা ট্রাইগ্লিসারাইড রক্তচাপ এবং রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি খারাপ কোলেস্টেরল কমায়, যা হার্টকে নিরাপদ রাখে।
ব্যথা কমাতে- গাঁটের ব্যথা দূর করতে সক্ষম সর্ষের তেল। ব্রঙ্কাইটিসের ব্যথাও কমায়। সরিষার তেলে থাকে অ্যালাইল আইসোথিওসায়ানেট রাসায়নিক। যা শরীরের ব্যথা কমাতে কাজ করে। এই তেলে আলফা-লিনোলিক অ্যাসিডের মতো ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে যা বাতের ব্যথায় উপশম দেয়।
সর্দি-কাশিতে উপশম- সর্দি-কাশি হলে বিশুদ্ধ সর্ষের তেল প্রাকৃতিক প্রতিকার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কর্পূরের সঙ্গে সর্ষের তেল মিশিয়ে বুকে লাগালে কফ ও ব্যথা উপশম হয়। গরম জলে কয়েক ফোঁটা সর্ষের তেল মিশিয়ে ভাপ নিলেও ঠাণ্ডা ও মাথাব্যথা থেকে নিস্তার মেলে।
হাঁফানির সমস্যা- হাঁফানির সমস্যা থাকলেও উপযোগী সর্ষের তেল। সর্ষের তেলে থাকে ম্যাগনেশিয়াম।
দাঁতের ব্যথা- দাঁতে ব্যথা হলে নুন আর সর্ষের তেল মিশিয়ে হাত দিয়ে ঘষলে উপশম মেলে।
তাই সীমিত পরিমাণে সর্ষের তেল খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন- টিকটিকির উৎপাতে অতিষ্ঠ? এই ৮ ঘরোয়া উপায়ে তাড়ান