রোজকার কর্মব্যস্তময় জীবনে আমরা আমাদের স্বাস্থ্যের কথা ভাবতে একেবারেই ভুলে গিয়েছি। তার ওপর আবার চলছে যা ইচ্ছে তাই খাওয়া। যার ফলে শরীরের মেদ বাড়ছে। কিন্তু আমরা বুঝে উঠতে পারছি না এই মেদ কীভাবে ঘটানো যায়। কাজের চাপে সঠিকভাবে শরীরচর্চা বা জিমে যাওয়া কিছুই হয় না। অথচ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে অন্তত ৩০ মিনিট যদি শরীরচর্চা করে থাকি তাহলে অনেকটাই উপকার পাওয়া যায়। আর সেই শরীরচর্চার মধ্যে অন্যতম হল ওয়াকিং বা জোরে হাঁটা। ডায়াবেটিস হোক বা গ্যাস অম্বল! জোরে হাঁটার সমান ব্যায়াম নেই। সকালে বা বিকালে শহরাঞ্চলের পার্কগুলি দেখলেই তা বোঝা যায়। চিকিৎসকদের মতে, সকালে বা বিকালে প্রতিদিন বা সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন জোরে হাঁটা রক্ত প্রবাহকে উন্নত করতে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।
হাঁটা-জগিং জনপ্রিয়
অনেক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাই দ্রুত হাঁটার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কারণ এটি স্ট্যামিনা তৈরি করতে সাহায্য করে এবং এটা হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। জোরে হাঁটার মতই আরেকটি ব্যায়াম হল জগিং। হাঁটার চেয়ে বেশি গতি থাকবে কিন্তু দৌড়ানোর চেয়ে কম।এখন প্রশ্ন হল হাঁটা নাকি জগিং কোনটা বেশি কার্যকরী ? অতিরিক্ত ওজন এখন বেশিরভাগ মানুষেরই সমস্যা। এই সমস্যা টেনে আনতে পারে নানা রোগ। নিয়মিত হাঁটা, জগিং, সাইকেল চালানো এগুলির সাহায্যে ওজন কমানো সম্ভব। এগুলির মধ্যে হাঁটা এবং জগিং বেশি জনপ্রিয়।
হাঁটা এবং জগিং-এর পার্থক্য
জোরে জোরে হাঁটাচলা করলে প্রতি ঘন্টায় কমপক্ষে ৫-৬ কিমি দূরত্বে যাওয়া যায়। জগিং-এর গতি দৌড়ানোর চেয়ে কম কিন্তু হাঁটার চেয়ে বেশি। দৌড়ানোর তুলনায়, জগিং-এ কম শক্তি খরচ হয়। চাপও কম থাকে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জোরে জোরে হাঁটলে হৃদস্পন্দন ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ বেড়ে যায়। অন্যদিকে জগিং-এর ক্ষেত্রে হৃদস্পন্দনের মাত্রা আরও বেশি বৃদ্ধি পায়। হাঁটুতে ব্যথা থাকলে জগিং-এর ক্ষেত্রে অসুবিধার কারণ হয়। তাই বয়স, শারীরিক অসুবিধা এসব কিছুই মাথায় রেখেই জগিং বা হাঁটা যে কোনও একটা বাছা উচিত আমাদের। এমনটাই মত রয়েছে, চিকিৎসকদের।
হাঁটবেন নাকি জগিং করবেন
হাঁটাচলায় পা সর্বদা মাটিতে স্পর্শ করে থাকে। অন্যদিকে জগিং-এ মাটি থেকে একটা পা সবসময়ই উপরে থাকে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, পেশীর বৃদ্ধি, ওজন কমানো হোক বা ক্যালোরি কমানো সবক্ষেত্রেই হাঁটা এবং জগিং দুটোই কার্যকরী। হাঁটা আর দৌড়ানোর মধ্যে পার্থক্য হলো হাঁটতে সময় বেশি লাগে। ১৫ মিনিট দৌড়ালে যে পরিমাণ ক্যালরি পোড়ে আধ ঘন্টা হাঁটলেও একই পরিমাণে ক্যালরি ঝরে।
চিকিৎসকের পরামর্শ
তবে মনে রাখবেন, বেশি দৌড়াদৌড়িতে আহত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কারণ দৌড়ানো শরীরের উপর বেশি চাপ দেয়, বিশেষ করে অস্থিসন্ধিতে। কারও যদি হৃদরোগে বা বাতের সমস্যা থাকে তাহলে দৌড়ানোর আগে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলা জরুরি।