চিকিৎসা বিজ্ঞানের জন্য তো বটেই ক্যান্সারের চিকিৎসায় একটি যুগান্তকারী সাফল্যের মুখোমুখি হতে চলেছে মানব সভ্যতা। এক রক্ত পরীক্ষাতেই ধরা পড়বে একাধিক উপসর্গহীন ক্যান্সার। ফলে বাঁচানো যাবে একাধিক প্রাণ। গবেষণার প্রাথমিক পর্যায়ে ইতিমধ্যেই সাফল্যের মুখ দেখেছেন বিজ্ঞানীরা।
স্বাস্থ্যসেবা সংস্থা GRAIL মূলত ক্যান্সার স্ক্রীনিং উন্নত করার জন্য কাজ করে। সম্প্রতি এই GRAIL রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে উপসর্গহীন ক্যান্সার শনাক্ত করতে একটি গবেষণা চালিয়েছে। এই গবেষণায় অংশ নেন ক্যান্সারের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা ৬,৬৬২ জন ব্যক্তি।
গবেষণাটি ৫০ বছর বা তার বেশি বয়সী রোগীদের মধ্যে পরিচালিত হয়েছিল। এর ফলাফল প্যারিসে ইউরোপীয় সোসাইটি ফর মেডিকেল অনকোলজি (ESMO) কংগ্রেস ২০২২-এ প্রকাশিত হয়েছিল।
গবেষণায় প্রায় ১ শতাংশ অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ক্যান্সার শনাক্ত হয়েছে। এই গবেষণায় মোট ৯২ জন রোগীর মধ্যে ক্যান্সারের উপসর্গ শনাক্ত হয়েছে। মাল্টি-ক্যান্সার আর্লি ডিটেকশন (MCED) পরীক্ষাটি এর পূর্ববর্তী সংস্করণ (MCED-E) এবং এর একটি পরিমার্জিত সংস্করণ (MCED-Scr)— উভয় ব্যবহার করেই নির্ধারিত হয়েছিল।
গবেষকরা বলেছেন যে, পরীক্ষার আগের সংস্করণটি প্রাক-ম্যালিগন্যান্ট হেমাটোলজিক অবস্থার সনাক্তকরণে পরিমার্জিত হয়েছিল। এর পাশাপাশি এই গবেষণায় ক্যান্সার সংকেতের উৎপত্তির পূর্বাভাস উন্নত করা গিয়েছে। এই গবেষণায় যে ৯২ জন রোগীর মধ্যে ক্যান্সারের উপসর্গ শনাক্ত হয়েছে, তাদের মধ্যে ৩৫ জনের শরীরে ৩৬ রকম উপসর্গহীন ক্যান্সার ধরা পড়েছে। এই ৯২ জন রোগীর মধ্যে ৭১ শতাংশই নিয়মিত ক্যান্সারের স্ক্রিনিং করান না। কারণ, তাঁরা কোনও রকম সমস্যা বা উপসর্গ বুঝতে পারেননি।
এই গবেষণার ফলাফল ৯৭ শতাংশ নির্ভুল বলে দাবি করেছেন এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানী-গবেষকরা। তিন মাসেরও কম সময়ে ক্যান্সার নির্ণয়ের ক্ষেত্রে এই মাল্টি-ক্যান্সার আর্লি ডিটেকশন (MCED) পরীক্ষাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে প্রমাণিত হবে বলে আশা বিজ্ঞানীদের।