আচার্য চাণক্যের কথা কে না জানে! তাঁর পরিচয় নতুন করে দেওয়ার নেই। শৈশব থেকেই তাঁর কথা জেনে এনেছেন ভারতবাসী। আচার্যকে ভারতের প্রধান কূটনীতিক হিসেবে ধরা হয়। দেশের রাজনীতির পরিবর্তন করে ছেড়েছিলেন চাণক্য। তাঁর নীতিকথা চাণক্যশাস্ত্র নামে খ্যাত। তাঁর দেখানো পথ অনুসরণ করলে কখনও পিছন ফিরে তাকাতে হয় না। আচার্য চাণক্যের নীতি আজও খুব কার্যকর। তিনি বিশ্বাস করতেন যে মানুষের জীবনে এমন কিছু জিনিস রয়েছে যা গোপন থাকা উচিত।
সব জিনিস সবাইকে বলতে নেই। তাতে নিজেরই ক্ষতি হয়। নারী ও পুরুষদের জীবনে এমন অনেক কথা থাকে যা কাউকে বলতে নেই। বললে ভবিষ্যতে ক্ষতি হতে পারে। তাই চাণক্য পই পই করে বারণ করে দিয়েছেন। এই সব গোপন কথা কারও কাছে ফাঁস করলে দুঃখের শেষ থাকে না।
দাম্পত্য-কথা অন্য় কাউকে নয়- দাম্পত্য জীবনে অনেক কিছুই ঘটে। কখনও স্বামী-স্ত্রী প্রেমে হারিয়ে যান আবার কখনও দু’জনের মধ্যে ঝগড়া হয়। স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক কথাবার্তা তৃতীয় কাউকে বলা উচিত নয়। এই জিনিসগুলি ব্যক্তিগত। অন্য ব্যক্তি জানলে দাম্পত্য সম্পর্ক বিষিয়ে যেতে পারে।
গোপন দান- আচার্য চাণক্য বলতেন, গুরু যদি কোনও ব্যক্তিকে বিশেষ মন্ত্র বা জ্ঞান দিয়ে থাকেন, তাহলে সেই কথা গোপন রাখা উচিত। কারও সঙ্গে শেয়ার করা উচিত নয়। কারণ বিপদ ঘটতে পারে। তবে দান পুণ্যের কাজ। কেউ যদি গোপনে দান করে তবে তার ভুলেও কাউকে বলা উচিত নয়। কাউকে ডান হাতে দান করলে বাম হাতও যেন জানতে না পারে।
বয়স- আচার্য চাণক্য বলেছেন যে আসল বয়স কাউকে বলা উচিত নয়। এতে আপনি অন্যদের তুলনায় নিজেকে তরুণ ও সুস্থ রাখতে পারবেন। আপনার দুর্বলতার সুযোগ কেউ নিতে পারবে না। তাই কারও সঙ্গে নিজের বয়স শেয়ার করবেন না। এতে মানসিক ফারাক গড়ে ওঠে। তাই তরুণ ও সুস্থ থাকতে আপনি বয়স গোপন রাখুন।
আগামীর পরিকল্পনা- আপনি ভবিষ্যতে কী করতে চলেছেন, আপনার পরিকল্পনা কী, তা কারও সঙ্গে শেয়ার করবেন না। এতে হওয়া কাজও হয় না। ভবিষ্যতের পরিকল্পনা নিজের কাছেই রাখুন। সেই লক্ষ্যে এগিয়ে চলুন। সাফল্য পাবেন। আর ব্যর্থ হলে মনে হতাশা থাকবে কিন্তু তা কেটেও যাবে। এটাই সবাইকে জানিয়ে দিলে ব্যর্থতার পর হতাশা বহুগুণ বেড়ে যাবে। আবারও এটাও হতে পারে, কোনও শত্রু আপনার হওয়া কাজ বিগড়ে দিল। কাছের লোকই ক্ষতি করে বেশি। তাই সাবধান! যা করবেন নিজের স্ত্রী, মা-বাবাকেও বলবেন না। এটা নিজের কাছেই রাখুন।
আয়- নিজের আয় কারও কাছে শেয়ার করবেন না। মাসে কত টাকা কামান সেটা ফলাও করে বলবেন না। নিজের সম্পত্তির কথাও জানাবেন না। এতে শত্রু বাড়ে। আপনার ক্ষতি করতে পারে লোকে। আয়ের কথা একান্ত ঘনিষ্ঠকেও জানাতে চাই। এটা শুধু আপনি জানবেন।