খাওয়াদাওয়ায় অনিয়ম। শরীরচর্চার অভাব। সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত ঘুম নেই। সবমিলিয়ে কর্মব্যস্ত জীবনের প্রভাব পড়ছে মানুষের শরীরে। যে কারণে কোলেস্টেরল, ইউরিক অ্যাসিড থেকে ডায়াবেটিসের সমস্যা কম বয়সেই মাথাচাড়া দিচ্ছে। এটি রক্তে থাকা একটি মোম জাতীয় পদার্থ। শরীরে কোলেস্টেরল দরকার। তা কোষের ঝিল্লি, টেস্টোস্টেরন এবং ইস্ট্রোজেনের মতো হরমোনের নিঃসরণে কার্যকর ভূমিকা নেয়। তবে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে শুরু হয় সমস্যা। জীবনের ঝুঁকি পর্যন্ত থাকে। কারণ শিরায় কোলেস্টেরল জমার রক্ত প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয়। হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। খারাপ কোলেস্টেরল (LDL কোলেস্টেরল) স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। তাই কোলেস্টেরল কমাতে মানুষ অনেক কিছু করেন। তবে মাত্র ২ টাকার ওষুধেই কমতে পারে কোলেস্টেরল।
সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ভারতের ২৫-৩০% শহরের নাগরিক এবং ১৫-২০% গ্রামের বাসিন্দা উচ্চ কোলেস্টেরলে ভুগছেন। বেশির ভাগ মানুষই চিন্তিত যে কীভাবে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানো যায়? প্রথমেই যেটা করতে হবে তা হল অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়িয়ে চলা। এর মধ্যে রয়েছে ভাজাভুজি, প্রক্রিয়াজাত খাবার, ফাস্ট ফুড, উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার। এতে খারাপ কোলেস্টেরল বাড়ে। কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকলে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করা উচিত। প্রতিদিন ৩০-৪৫ মিনিট ব্যায়াম করা দরকার। কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে ওষুধও পাওয়া যায়। তবে ওষুধ খাওয়ার আগে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
২ টাকার দাওয়াই
হার্ভার্ড হেলথের মতে, খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ অতিরিক্ত হয়ে গেলে ওষুধের দরকার পড়ে। কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে স্ট্যাটিন ওষুধ (Statin Drug) খাওয়া যায়। এই ওষুধের ১০টি ট্যাবলেট পাওয়া যায় ২৪ টাকায়। তাই কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায় মাত্রা ২.৫ টাকায়। এই ওষুধগুলি ধীরে ধীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেয়। স্ট্যাটিন এইচএমজি-কোএ রিডাক্টেস ইনহিবিটর (HMG-CoA) নামেও পরিচিত। এর মধ্যে রয়েছে লোভাস্ট্যাটিন , সিমভাস্ট্যাটিন, প্রভাস্ট্যাটিন, ফ্লুভাস্ট্যাটিন, অ্যাটোরভাস্ট্যাটিন এবং রোসুভাস্ট্যাটিন। HMG-CoA রিডাক্টেস নামক একটি এনজাইমকে বাধা দেয় স্ট্যাটিন, যা কোলেস্টেরল উৎপাদন করে।
স্বাভাবিক কোলেস্টেরলের মাত্রা
কোলেস্টেরলের স্বাভাবিক মাত্রা হল এলডিএল এবং এইচডিএল কোলেস্টেরলের একত্রে ২০০ মিলিগ্রাম/ডিএল (মিলিগ্রাম প্রতি ডেসিলিটার। কোলেস্টেরলের মাত্রা ২০০ থেকে ২৩৯ mg/dL উচ্চ সীমার কাছাকাছি। ২৪০ mg/dL এবং তার উপরে উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রা। এই স্তরে এথেরোস্ক্লেরোসিস, হৃদরোগ এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি রয়েছে। কোলেস্টেরলের মাত্রা সবসময় পরীক্ষা করুন। চেষ্টা করুন এটি স্বাভাবিক রাখতে।
আরও পড়ুন- খালি পেটে খান এই সবুজ পাতা, প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে যাবে ইউরিক অ্যাসিড