কোলাজেন আমাদের ত্বকের একটি প্রধান উপাদান যা ত্বকের উজ্জ্বলতা, স্থিতিস্থাপকতা এবং গঠন উন্নত করে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে কোলাজেনের উৎপাদন কমে যায়, যার ফলে ত্বকের বলিরেখা, রুক্ষতা এবং স্থিতিস্থাপকতা হ্রাস পায়। কোলাজেন শরীরে প্রায় ৩০% প্রোটিন এবং ত্বক, হাড়, পেশী ইত্যাদিতে আঠা হিসেবে কাজ করে। আমাদের শরীরে ২৮ ধরণের কোলাজেন রয়েছে, যা বিভিন্ন অঙ্গ এবং কার্যকারিতা সমর্থন করে।
বয়স বৃদ্ধি, সূর্যের আলোর সরাসরি সংস্পর্শে আসা, ভারসাম্যহীন খাদ্যাভ্যাস, ঘুমের অভাব, অতিরিক্ত চিনি খাওয়া এবং ধূমপানের মতো অভ্যাসগুলি কোলাজেনের পরিমাণ হ্রাস করে। সেক্ষেত্রে আপনার এই অভ্যাসগুলি উন্নত করা গুরুত্বপূর্ণ। জানুন, শরীরে কোলাজেন বাড়ানোর কিছু উপায়।
আমিষ খাবারের উৎস: মুরগি, মাছ এবং হাড়ের ঝোল কোলাজেনের ভাল উৎস। কারণ এতে অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে যা কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায়।
নিরামিষ খাবারের উৎস: কমলালেবু, মৌসুম্বি লেবু, পাতি লেবু ইত্যাদি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ, যা কোলাজেন উৎপাদনে সহায়তা করে।
সবুজ শাকসবজি: ভিটামিন এ এবং সি এর উৎস যেমন পালং শাক, ব্রকলি কোলাজেন বাড়ায়।
বাদাম এবং বীজ: আখরোট, আমন্ড, চিয়া বীজ, শণের বীজের মতো জিনিসগুলি স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং অ্যামিনো অ্যাসিডের কারণে কোলাজেনকে উন্নত করে।
বেরি: ব্লুবেরি, ব্ল্যাকবেরি, আমলকীর মতো ফল কোলাজেন ভাঙন রোধ করে এবং ত্বকের প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা বজায় রাখে।
রসুন: এতে সালফার রয়েছে যা কোলাজেন উৎপাদনকে উৎসাহিত করে।
কোলাজেন সাপ্লিমেন্ট: বাজারে পাওয়া যায় এমন উদ্ভিদ-ভিত্তিক কোলাজেন পেপটাইড সাপ্লিমেন্ট যা আমিষ কোলাজেনের মতোই কার্যকর হতে পারে। ভিডিওটিতে একটি উদ্ভিদ-ভিত্তিক সাপ্লিমেন্টের পর্যালোচনাও করা হয়েছে যা নিয়মিত সেবন করলে বলিরেখা কমায় এবং ত্বকে উজ্জ্বলতা দেয়।
সূর্য সুরক্ষা: ইউভি রশ্মি কোলাজেনের ক্ষতি করে। ইউভি-এ রশ্মি ত্বককে বৃদ্ধ করে এবং ইউভি-বি রশ্মি ত্বককে পুড়িয়ে দেয়। ব্রড স্পেকট্রাম সানস্ক্রিন (SPF ৩০ বা তার বেশি) প্রতিদিন ব্যবহার করা অপরিহার্য, পাশাপাশি সর্বোচ্চ রোদের সময় (সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪ টে) সরাসরি সূর্যালোক এড়ানোও অপরিহার্য।
চিনি নিয়ন্ত্রণ: অতিরিক্ত চিনি রক্তে গ্লুকোজকে তার তন্তুর সঙ্গে আবদ্ধ করে কোলাজেনকে দুর্বল করে দেয়, যা ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা হ্রাস করে এবং বার্ধক্যের লক্ষণগুলি তাড়াতাড়ি দেখা দেয়। প্রাকৃতিক চিনি গ্রহণ ভালো।
পর্যাপ্ত ঘুম: প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতিদিন ৭-৯ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। কারণ ঘুমের সময় শরীর নিজেকে বিষমুক্ত করে, কোষগুলি মেরামত করে এবং কোলাজেন উৎপাদন সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকে। কম ঘুমের ফলে এই সমস্ত ব্যবস্থা প্রভাবিত হয়।
ধূমপান থেকে দূরে থাকুন: ধূমপান রক্ত প্রবাহ বন্ধ করে দেয়, অক্সিজেন সরবরাহ হ্রাস করে, যা ত্বককে স্বাস্থ্যকর পুষ্টি থেকে বঞ্চিত করে। এটি কোলাজেন উৎপাদন হ্রাস করে এবং বার্ধক্য প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে। অতএব, ধূমপান ত্যাগ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।