বইছে হিমেল বাতাস। সূর্যের আলোর তেজও নেই। ঋতুবদলের এই সময় মনের বদলও ঘটে। অবসাদ জাঁকিয়ে বসে। বর্তমানে মনোরোগ বা অবসাদে ভুগছেন গোটা বিশ্বের বহু মানুষ। বাইরে থেকে হাসিখুশি দেখতে লাগলেও ভিতরে ভিতরে গুমরে মরছেন। মনের কথা বলার মতো কেউ নেই। অনেকে তো বুঝতেও পারেন না তাঁরা অবসাদে। আসলে কাজের চাপ, সম্পর্কের টানাপোড়েন,পারিবারিক বিবাদ, আর্থিক অনটন কারণে মানসিক অবসাদ গ্রাস করতে পারে।
ঋতুবদলের সঙ্গেও মানসিক অবসাদের যোগ রয়েছে। একে বলে 'সিজনাল এফেফ্টিভ ডিসঅর্ডার' বা SAD। মানসিক অবসাদে শরীর দুর্বল হয়ে ওঠে। উদাস হয়ে ওঠে মন। গোটা শীতজুড়ে মন খারাপ থাকে এই ধরনের রোগীদের। শীত কমতে গরমকালে আবার স্বাভাবিক হয়ে ওঠেন। যে কোনও অসুখ সহজেই ধরা যায়। তবে মনের অসুখ জটিল। প্রথমত সেই ব্যক্তি বুঝতেই পারেন না তিনি মনোরোগে আক্রান্ত। বর্তমান প্রজন্মের বেশিরভাগ মানুষই ভুগছেন মনের সমস্যায়। কাউকে প্রকাশ করেন না। মনোরোগের চিকিৎসার জন্য দরকার পড়ে কাউন্সেলিং। কী কী লক্ষণ মানসিক অবসাদ বুঝতে পারবেন?
১। ঘুমোনোর সময় কমে যাওয়া বা বেড়ে যাওয়া। অর্থাৎ ঘুম না পাওয়া বা বেশি ঘুম পাওয়া মানসিক অবসাদের লক্ষণ।
২। কথাবার্তা কমিয়ে দেওয়া মানসিক অবসাদের লক্ষণ। সামাজিক মেলামেশা বন্ধ করে দেওয়া।
৩। হতাশা ঘিরে ফেরলে। আশা ছেড়ে দেওয়া। নিজের উপর আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলা।
মনে করা, নিজের দ্বারা কিছু হবে না। আমি কিছু করতে পারব না মাথায় আসলে।
৪। আচমকা ওজন কমে গেলে। কোনও কাজে এনার্জি না পাওয়া। দুর্বলভাব থাকে শরীরে।
৫। হঠাৎ খিদে পাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। অথবা অতিরিক্ত খেতে ইচ্ছে করে।
৬। আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়া। অবসাদ গ্রাস করলে বাঁচতে ইচ্ছে করে না। মৃত্যুই সব সমস্যার সমাধান মনে হয়।
৭। ছোটখাট বিষয়ে বিরক্ত হওয়া। হঠাৎ করে রেগে যাওয়া। স্বভাববিরুদ্ধ আচরণ। খিটখিটে স্বভাবের হয়ে যায়।
এই লক্ষণগুলি চিনলে নিজেকে আরও অবসাদে ডুবে যেতে দেবেন না। মনের সমস্ত কথা কারও সঙ্গে শেয়ার করুন। কথা বলতে ভাল লাগলেও কথা বলুন। মেলামেশা করুন লোকের সঙ্গে। খেলাধুলো করুন। শরীরচর্চায় মন দিন। বিনোদনের জন্য যা ভাল লাগে সেটা করুন। প্রিয় মানুষ থাকলে তাঁর সঙ্গে সময় কাটান। তা-ও অবসাদন না কাটলে মনোবিদ বা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। ওষুধ খান। তাহলে দ্রুত অবসাদ কাটিয়ে সুস্থ জীবনে ফিরে আসবেন।
আরও পড়ুন- Flesh Eating Bacteria: 'মাংসখেকো ভাইরাসে'র হানা কলকাতায়, আরজিকরে মৃত্যু