আজ ২৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ব হার্ট দিবস। এই দিনটিকে মাথায় রেখেই অনুষ্ঠিত হয় আজতক হেলথ সামিট ২০২৫। এই অনুষ্ঠানে ভারতীয়দের স্বাস্থ্য এবং লাইফস্টাইল নিয়ে হয় আলোচনা।
এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জেপি নাড্ডা। তার পর শুরু হয় 'দিল হ্যায় কি জানতা নেহি' সেশন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ফর্টিস এসকর্টস হার্ট ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ডাঃ অশোক শেঠ, ইনস্টিটিউট অব লিভার অ্যান্ড বাইলারি সায়েন্সেসের ডিরেক্টর ডাঃ শিবকুমার সারান, এইমস-এর কার্ডিওলজির অধ্যাপক ডাঃ রাকেশ যাদব, ম্যাক্স হেলথকেয়ারের প্রিন্সিপাল ডিরেক্টর অব কার্ডিয়াক সায়েন্সেস ডাঃ মনোজ কুমার। তাঁরা হার্টের নানা সমস্যা সম্পর্কে বিশদে আলোচনা করেন। পাশাপাশি হৃৎপিণ্ডকে সুস্থ রাখতে এবং হার্টের অসুখ প্রতিরোধে কী করা উচিত, সেটাও জানান।
কেন ভারত হার্টের অসুখের রাজধানীতে পরিণত হচ্ছে?
এই বিষয়ে ফর্টিস এসকর্টস হার্ট ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ডাঃ অশোক শেঠ বলেন, 'গত ২০ ভারতে হার্টের অসুখে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ২০০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। আর এই পরিসংখ্যানই ভারতকে হার্টের অসুখের রাজধানী হিসাবে সামনে আনছে। আসলে লাইফস্টাইলে বদল কম বয়সীদের মধ্যে বিরাট নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। গত ২০ বছরে কোলেস্টেরল, ওবেসিটি, ডায়াবিটিসের সমস্যা বেড়েছে। আর এই অসুখগুলিই হল সাইলেন্ট কিলার। আগে এই অসুখগুলো বেশি বয়সে হয় বলে মনে করা হতো। যদিও এখন ২৫-৩০ বছরেও এ সব অসুখ নিচ্ছে পিছু।'
কম বয়সীদের মধ্যেই প্রভাব বেশি
জানলে অবাক হবেন, ৫০ শতাংশ হার্ট অ্যাটাক এখন ৫০ বছর বয়সের আগে হয়। শুধু তাই নয়, ২৫ শতাংশ ক্ষেত্রে ৪০ বছরের আগেই এই রোগ নিতে পারে পিছু।
আর আগে পুরুষের মধ্যে এই রোগ বেশি দেখা যেত। যদিও এখন মহিলারাও এই অসুখে ভালো সংখ্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন। কম ঘুমানো, বদলে যাওয়া জীবনযাত্রা ও স্ট্রেসই হার্টের অসুখের মূলে বলে মনে করেন চিকিৎসকেরা।
ধূমপান রয়েছে জড়িয়ে
ম্যাক্স হেলথকেয়ারের কার্ডিয়াক সায়েন্সেসের ডিরেক্টর ডাঃ মনোজ কুমার বলেন, 'ধূমপানের সঙ্গে হার্টের অসুখের সরাসরি যোগ রয়েছে। ধূমপানের সময় ৭ হাজার রাসায়নিক আমাদের শরীরে পৌঁছে যায়। এদের মধ্যে ৭০টি কার্সিনোজেন, যেগুলি ক্যানসারের কারণ। মনে রাখতে হবে স্ট্রেসের কারণেও নয়া প্রজন্ম স্মোক করছেন বা মদ্যপান করছেন। যদিও এই সব নেশা স্ট্রেস কমায় না। বরং স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। বেশি মদ খেলে হার্টে ব্লকেজ হতে পারে। এমনকী হার্টের মাসলের হতে পারে ক্ষতি। তাই হার্টের অসুখের থেকে দূরে থাকতে চাইলে ধূমপান ও মদ্যপান ছাড়ুন।'
বেশি মেনে লাভ নেই
ওদিকে ডাঃ রাকেশ বলেন, দিল্লির মতো জায়গায় দূষণের জন্য হার্টের অসুখে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে। তাই খুব খুব বেশি মানামানি করার প্রয়োজন নেই। আমরা বলতে পারি না যে একটা পিৎজা খেলেই হার্টের অসুখ হবে। তবে নিয়মিত খেলে নিশ্চয়ই হতে পারে। তাই লাইফস্টাইলে ব্যালেন্স আনতে হবে। হেলদি লাইফস্টাইলে অভ্যস্ত হন। স্বাস্থ্যকর খাবার খান।
কোমরের দিকে নজর দিন
ডাঃ সারিন বলেন, 'একজন পুরুষের কোমরের মাপ যদি ৯০ সেমি এবং মহিলার ৮০ সেমির বেশি হয়, তাহলে তাঁরা অস্বাস্থ্যকর। তাই এই দিকটা মাথায় রাখতে হবে। শুধু বিএমআই-এর কথা ভাবলে চলবে না।'