শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি এখন করোনা থেকে বাঁচার একমাত্র উপায়। তবে এবার মানব শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়ক হবে ড্রাগন ফল (Dragon Fruit)। গোটা উত্তরবঙ্গ জুড়ে বর্তমানে বিভিন্ন জেলায় চাষ হচ্ছে ড্রাগন ফলের।করোনার আবহে গত মার্চ মাস থেকে এক ঝটকায় এই ফলের চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুণ। অন্যদিকে লাভের মুখ দেখছে শিলিগুড়ি মহকুমা ড্রাগন ফল চাষিরা। এই ফলের চাষ যেন দিশা দেখাচ্ছে নতুন কর্মসংস্থানের।
শুরুটা হয়েছে আজ থেকে ৭ বছর আগে, ২০১৩ সালে সুদূর আমেরিকা থেকে ৪ টি মূল নিয়ে পরীক্ষা থেকে। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেক বিভাগের অন্তর্গত কো ফার্ম এই পরীক্ষায় সাফল্য পেয়ে প্রথম ধাপে পরীক্ষামূলক ভাবে শিলিগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গের বেশ কয়েকজন কৃষক এই চাষ শুরু করেন। প্রথমদিকে মাত্র কয়েকটা গাছ দিয়ে শুরু করেন শিলিগুড়ি মহকুমা অন্তর্গত বেশ কয়েকজন কৃষক। আর সেই যা শুরু তারপর থেকে সময়ের সঙ্গে ক্রমশই বড় হয়েছে কৃষকদের ড্রাগন ফলের বাগান।
বর্তমানে শিলিগুড়ি মহকুমার অন্তর্গত হাতিঘিসা এলাকার কৃষক ভূষণ টোপো ও তার স্ত্রী আভা প্রায় ১০ কাঠা জমির উপরে চাষ করেছেন ড্রাগন ফলের। আর তাতেই লাভের মুখ দেখছে টোপো দম্পতি। বর্তমানে ড্রাগন ফলের বাজার মূল্য ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা প্রতি কেজি। তবে একবার গাছ লাগালে বেশ কয়েক বছরে ফল দেয় এক একটি গাছ। জানা গেছে একটি গাছে প্রতি বছর প্রায় ১০ থেকে ১৫ কিলো ফল পাওয়া যায়। যার মধ্যে একটি ড্রাগন ফলের ওজন কম করে ২৫০ থেকে ৩০০ গ্রাম হয়।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কো ফার্মের হর্টিকালচারালিস্ট অমরেন্দ্র কুমার পান্ডে জানিয়েছেন, একটি গাছে ফুল থেকে ফল হতে প্রায় ১০ থেকে ১৫ দিন সময় লাগে। তিনি আরও বলেন, প্রথম দিকে মাত্র কয়েকটি চারা দিয়েই পরীক্ষামূলক ভাবে শুরু করা হয়েছিল এই চাষ। বর্তমানে উত্তরবঙ্গের মানুষের কাছে ড্রাগন ফলের চাষ একটি লাভজনক চাষ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একই সঙ্গে এই চাষ বেকারদের কর্মসংস্থানের পথ সুগম করে দিচ্ছে।
অন্যদিকে শিলিগুড়ির প্রখ্যাত চিকিৎসক প্রেম দর্জি ভুটিয়া জানিয়েছেন, ড্রাগন ফলে অত্যাধিক পরিমাণে ভিটামিন সি, জিঙ্ক,ম্যাগনেসিয়াম ,অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি ভাইরাল প্রপার্টি, অ্যান্টি ডায়াবেটিক প্রপার্টিস ইত্যাদি রয়েছে। তাই এই ফল খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়ক হয়।
তবে চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে করোনার জেরে গোটা বিশ্ব এখনও প্রায় জুবুথুবু। দেশের অর্থনীতির পরিকাঠামো অনেকটাই ক্ষতির মুখে। ঠিক তখনই বিভিন্ন মাধ্যমে ড্রাগন ফলের এই গুণাগুণের কথা প্রচার হতেই, এক লহমায় গত কয়েক মাসে ড্রাগন ফলের বিক্রিও বেড়েছে অনেকটাই। যার ফলে এই পরিস্থিতিতেও এই ফল চাষিদের মুখে এখন চওড়া হাসি।