হানিমুন প্রত্যেক দম্পতির কাছের চিরদিনের স্মরণীয়। বিয়ের পর একান্তে স্বামী-স্ত্রীর কাটানো মুহূর্তগুলি ভুলতে পারেন না কোনও দম্পতিই। তাই হানিমুনকে স্পেশাল করে তুলতে নানা ধরনের ব্যবস্থা করেন নবদম্পতিরা। তবে এমন এক দম্পতি রয়েছেন, যাঁরা নিজেদের হানিমুনকে কখনোই মনে করতে চান না। কারণ সেই হানিমুনে ব্যক্তির সঙ্গে যা ঘটেছিল তা কোনওদিনই মনে করতে চান না তিনি। আর শুধু তাই নয়, হানিমুন থেকে ফিরে ওই ব্যক্তি এতটাই লজ্জিত হয়ে পড়েন যে তিনি নিজের ৩৮ কেজি ওজন কমিয়ে ফেলেন।
ইংল্যান্ডের উইন্সফোর্ড শহরের বাসিন্দা ফ্রেজিয়ার ক্যারোলের (Frazier Carroll) বয়স ৩০ বছর। তাঁর একটি মেয়েও রয়েছে। তিনি বিয়ের পর হানিমুনে যেতে পারেননি। কিন্তু মেয়ে হওয়ার পর তাকে নিয়েই স্ত্রীয়ের সঙ্গে হানিমুনে যান। সেই সময় ফ্রেজিয়ারের ওজন ছিল ১৭১ কিলো। হানিমুনে গিয়ে যখন তিনি ক্যান্ডেল লাইট ডিনারের জন্য তৈরি হচ্ছিলেন সেই সময় নিজের বর্ধিত পেটের জন্য প্যান্টের বোতামটিও লাগাতে পারছিলেন না। তাই দেখে তাঁর স্ত্রী তাঁকে প্যান্টের বোতাম লাগাতে সাহায্য করেন এবং তারপর তাঁরা ডিনারে যান। সেই ঘটনার পরেই নিজের ওজন নিয়ে রীতিমতো চিন্তিত ও লজ্জিত হয়ে পড়েন ফ্রেজিয়ার। এরপর একটা সময় ফ্রেজিয়ার তাঁর স্ত্রীকে কোনও কাজেই সাহায্য করতে পারতেন না। এমনকি তাঁর মেয়েকে স্নান করানো বা স্কুলে দিতে যেতেও পারতেন না। আর শুধু তাই নয় নিজের ওজনের জন্য বেশিক্ষণ দাঁড়িয়েও থাকতে পারতেন না ফ্রেজিয়ার।
জানা গিয়েছে চোখে ঠিক মতো দেখতে পেতেন না ফ্রেজিয়ার। ১৬ বছর বয়স থেকেই অ্যাংজাইটি ও ডিপ্রেশানের শিকার হন তিনি। যার জেরে তাঁর মুখটি খুবই বড় হয়ে যায়। একইসঙ্গে বাড়ি থেকে না বেরনোর কারণে তাঁর ওজনও বাড়তে থাকে। তবে যেদিন তিনি নিজের প্যান্টের বোতাম লাগাতে পারলেন না, সেই দিনটিই ছিল তাঁর জীবনে সবচেয়ে লজ্জার মুহূর্ত। এরপরেই তিনি ওজন কমাতে বদ্ধপরিকর হন এবং ১৮ মাসে ৩৮ কিলো ওজন কমান।
ওজন কমানোর জন্য তিনি ডায়েট পরিবর্তন করেন এবং সাইক্লিং শুরু করেন। এর ফলে ধীরে ধীরে উদ্বেগ ও হতাশা থেকে বেরোতে শুরু করেন ফ্রেজিয়ার। মাত্র দেড় বছরের মধ্যেই নিজের জীবনে বিরাট এক পরিবর্তন আনেন তিনি। এখন তিনি পরিবারের সঙ্গে ঘুরতে যান। এমনকি আগে যে কাজগুলি করতে পারতেন না, যেমন জুতোর ফিতে বাঁধা, বাসন ধোয়া, মেয়েকে বেড়াতে নিয়ে যাওয়া বা স্কুলে দিয়ে যাওয়া, সেগুলি করতে পারেন।
ফ্রেজিয়র ৩৮ কেজি ওজন কমানর পরেই তাঁর কাছে অনেকে এই বিষয়ে জানতে চান। যার জেরে একটি গ্রুপ তৈরি করেন তিনি। সেখানে তিনি এই বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেন। যাঁদের ডিপ্রেশান ও অ্যাংজাইটি রয়েছে তাঁদেরও প্রশিক্ষণ দেন ফ্রেজিয়ার। ক্লাসে সকলের সঙ্গে তিনি কথা বলেন এবং একটি মজাদার পরিবেশ তৈরি করেন। যার ফলে মানুষ ডিপ্রেশান ও অ্যাংজাইটি থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ পান।
আরও পড়ুন - উপহাস করেছিলেন আত্মীয়-বন্ধুরা, ৩০ কেজি ওজন কমালেন গৃহবধূ, কীভাবে?