মধ্যপ্রদেশে কোল্ড রিফ কাফ সিরাপ খেয়ে শিশুমৃত্যুর জের। তার পর গোটা দেশেই সিরাপটিকে নিয়ে হইচই পড়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই সব রাজ্যকে কোল্ড রিফ কাফ সিরাপ ব্যবহার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র।
তবে সমস্যা শুধু কাফ সিরাপেই আটকে নেই। বরং তার শিকড় ছড়িয়ে গিয়েছে ওষুধের অন্দরেও। এই যেমন আমাদের আশপাশে এমন কিছু ওষুধ রয়েছে, যেগুলি আদতে জাল। আর সেগুলিই নিয়মিত খেয়ে যেতে হচ্ছে। ভাবছেন, এটা আবার কী বলছি? তাহলে শুনুন, গত ১ বছরে রাজস্থানের ল্যাবরেটরিতে এমন একশোর বেশি ওষুধের নমুনা গিয়েছে, যেগুলি সুরক্ষার পরীক্ষায় পাশ করতে পারেনি। এগুলির মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক, পেইনকিলার, অ্যান্টিঅ্যালার্জিক, অ্যান্টিডায়বেটিক থেকে শুরু করে একাধিক ওষুধ রয়েছে। আর এই ওষুধগুলি টেস্টের আগে নিয়মিত বিক্রিও হচ্ছে বাজারে।
যদিও এটা শুধু রাজস্থানের সমস্যা নয়। পশ্চিমবঙ্গ থেকে শুরু করে দেশের অধিকাংশ রাজ্যতে এমন জাল ওষুধের কারবার রমরম করে চলছে বলে অভিযোগ।
জাল ওষুধ কি চেনা সম্ভব?
এই প্রশ্নের উত্তর জানতে আমরা যোগাযোগ করেছিলাম কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ফার্মাকোলজির প্রফেসর এবং এমএসভিপি ডাঃ অঞ্জন অধিকারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, 'জাল ওষুধ কোনও সাধারণ মানুষের পক্ষে ধরা সম্ভব নয়। এমনকী ডাক্তারেরাও এটা ধরতে পারবেন না। এটা যাচাই করার নির্দিষ্ট লোক রয়েছে ড্রাগ কন্ট্রোলে। তাঁরা জনগণের ট্যাক্সের টাকায় মাইনে পান। তাঁদেরই কাজ হল জাল ওষুধ যাতে মার্কেটে না থাকে, সেটা নিশ্চিত করা। এটা সাধারণ মানুষের কাজই নয়।'
একই মত কলকাতা শহরের বিশিষ্ট মেডিসিনের চিকিৎসক ডাঃ আশিস মিত্রের। তিনি বলেন, 'জাল ওষুধ নিয়ে সাধারণ মানুষ ছাড়ুন, আমি নিজেই বুঝতে পারিনি। কিছুদিন আগে একজনকে বড় সংস্থার হজমের ওষুধ দিই। কিন্তু তাতে কাজ হচ্ছিল না। আমার সন্দেহ হওয়ায় ওষুধটিকে নির্দিষ্ট সংস্থার মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভদের দিই। তারা জানায় ওষুধটি জাল। এই হল অবস্থা। আর এটা আমি নিজেও ধরতে পারিনি।'
তাই তিনি মনে করেন, ড্রাগ কন্ট্রোলারদের আরও বেশি করে সতর্ক থাকতে হবে। মার্কেটে যাতে কোনও জাল ওষুধ না থাকে, সেটা করতে হবে নিশ্চিত। এটা সাধারণ মানুষের পক্ষে জানা সম্ভব নয়।
কী কী বিপদ হতে পারে?
তাই জাল ওষুধ মার্কেট থেকে তুলে নেওয়ার ব্যাপারে হতে হবে সচেষ্ট।