
ফ্যাটি লিভার আজকাল অত্যন্ত সাধারণ কিন্তু একইসঙ্গে বিপজ্জনক একটি স্বাস্থ্যসমস্যা। সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় হল, বেশিরভাগ মানুষ জানতেই পারেন না যে তাঁদের লিভারে চর্বি জমছে। বিশ্বজুড়ে ৩২-৪০% মানুষ নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারে ভুগছেন, যার অনেকেই পরবর্তী গুরুতর পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছেন। উন্নত অবস্থায় গিয়ে লিভার প্রতিস্থাপনই হয়ে ওঠে শেষ উপায়, যা সময়সাপেক্ষ এবং ঝুঁকিপূর্ণ।
এই কারণেই ডাক্তাররা বারবার বলেন, ফ্যাটি লিভারের প্রাথমিক লক্ষণগুলো দ্রুত চিহ্নিত করা খুবই জরুরি। স্ট্যানফোর্ড, হার্ভার্ড ও এইমস-প্রশিক্ষিত লিভার বিশেষজ্ঞ ড. সৌরভ শেঠি জানিয়েছেন এমন পাঁচটি সহজ লক্ষণের কথা, যেগুলো বাড়িতে বসেই কয়েক মিনিটে খেয়াল করা যায়।
১) পেটের চারপাশে চর্বি বৃদ্ধি
ড. শেঠির মতে, পেটের চারপাশে দ্রুত চর্বি জমা হওয়া ফ্যাটি লিভারের প্রথম সতর্কবার্তা। যাদের BMI ২৭-এর বেশি বা যাদের পেটে বেশি চর্বি জমে তাদের ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি তুলনামূলক অনেক বেশি। অন্যদিকে, যাদের চর্বি মূলত কাঁধ বা নিতম্বে জমে, তাঁদের ঝুঁকি কম।
২) সবসময় অস্বাভাবিক ক্লান্তি
কোনো কারণ ছাড়াই যদি দিনভর দুর্বলতা বা ক্লান্তি অনুভব করেন, তবে সেটিও ফ্যাটি লিভারের মূল লক্ষণ।
লিভার ঠিকমতো কাজ না করলে শরীর শক্তি তৈরি করতে পারে না, ফলে, মনোযোগে ঘাটতি, শরীরে ভারী ভাব, দৈনন্দিন কাজ করতে অনীহা, এসব দেখা যেতে পারে।
৩) ডানদিকের পাঁজরের নিচে ব্যথা বা চাপ অনুভব
লিভার শরীরের ডানদিকের উপরের অংশে থাকে। সেই জায়গায় হালকা ব্যথা, চাপ লাগা, ভারী ভাব অনুভূত হলে তা লিভারের প্রদাহ বা ফ্যাটি লিভারের ইঙ্গিত হতে পারে। যদিও সব ব্যথাই লিভারের কারণে হয় না, তাই স্থায়ী হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অবশ্যই জরুরি।
৪) মুখে ব্রণ, ঘাড়ে কালো দাগ, চুল পড়া
ফ্যাটি লিভারের সঙ্গে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের সরাসরি সম্পর্ক আছে। সে কারণে ঘাড়, বগল বা শরীরের ভাঁজে ত্বক কালো হয়ে যাওয়া (Acanthosis Nigricans), মুখে অতিরিক্ত ব্রণ, অস্বাভাবিক চুল পড়া, এসব লক্ষণ দেখা যায়। হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হলে এই উপসর্গগুলো আরও বেড়ে যায়।
৫) বমি বমি ভাব, ক্ষুধামন্দা
ফ্যাটি লিভার বাড়লে লিভারের উপর চাপ বেড়ে যায়। ফলে খাবারে অনীহা, বমি বমি ভাব, পেটে অস্বস্তি, ক্লান্তি, অযৌক্তিক ওজন কমে যাওয়া এসব লক্ষণ চোখে পড়তে পারে।