
ইদানিং কালে লিভারের রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে, বিশ্বজুড়েই নন অ্যালকোহলিক লিভার ডিজিজ এখন সবচেয়ে দ্রুতহারে বাড়তে থাকা রোগ। লক্ষ লক্ষ রোগ এই লিভারের রোগে আক্রান্ত। এর চিকিৎসা এবং ওষুধের খরচ বেশি হলেও খাদ্যাভ্যাস ও লাইফস্টাইল লিভারের স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে। সঠিক মাত্রায়, সঠিক ডায়েট করলে লিভার ভাল থাকে। জনপ্রিয় চিকিৎসক ডা: সাইরিয়েক এবি ফিলিপ্স নিজের ইনস্টাগ্রাম পোস্টে জানিয়েছেন, কোন কোন খাবার ডায়েট থেকে বাদ দিলে লিভার ভাল থাকবে।
মিষ্টি পানীয় থেকে দূরে থাকুন
সোডা, প্যাকেটজাত জুস, মিষ্টি চা কিংবা কফির মতো পানীয়ে অত্যন্ত বেশি চিনি থাকে। এই সুগার লিভারে ফ্যাট জমা করে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর থেকেই ফ্যাটি লিভারের মতো রোগ বাসা বাঁধে। মিষ্টি খেতে হলে ঘরেই বিনা চিনির ফ্রেশ জুস বা লেবুর জল খান। এমনটাই বলছেন বিশিষ্ট চিকিৎসক।
নারকেল তেলের ব্যবহার কমান
নারকেল তেল ভারতীয়দের রান্নাঘরে থাকেই। তবে এতে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের মাত্রা বেশি থাকে। এটি লিভারে ফ্যাট জমা করতে থাকে। যদি রোজ রান্না করেন তবে সরষের তেল, অলিভ ওয়েল কিংবা বাদাম তেলের মতো হাল্কা অপশন বেছে নিন।
পাম অয়েল প্রোডাক্ট খাবেন না
পাম অয়েল সাধারণত ফ্রায়েড বা প্যাকেটজাত খাবারে থাকে। যেমন বিস্কুট, চিপস, নুডলস। এই তেল লিভারে ফ্যাট জমায়। লো প্রসেসড খাবার খাওয়াই শ্রেয়।
মাখন এবং ঘি খাওয়া কমান
মাখন এবং ঘিতেও স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে। অল্প মাত্রা খেলেও বেশি না খাওয়াই ভাল। এতে লিভারে চাপ পড়ে। ডা: ফিলিপ্সের মতে, লিভারের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে চাইলে মাখন বা ঘি কমিয়ে ফেলুন।
মদ খাওয়া ভয়ঙ্কর হতে পারে
ডা: ফিলিপ্সের মতে, মদ লিভারের সবচেয়ে বড় যম। এতে লিভারের ক্ষতি হয়। অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। যদি লিভারের স্বাস্থ্য আগে থেকেই দুর্বল থাকে তবে মদ ছোঁয়াও উচিত নয়।
ব্ল্যাক কফি খান
লিভারের জন্য উপকারী পানীয় হল ব্ল্যাক কফি। চিনি ছাড়া ব্ল্যাক কফি লিভারের জন্য ভাল। এতে ফ্যাট জমে না। লিভার এনজাইম বাড়ে। প্রতিদিন এক কাপ ব্ল্যাক কফি লিভারের জন্য কার্যত একটি হেলথ ডোজ।
কী এই ফ্যাটি লিভার
বেঙ্গালুরুর সকরা ওয়ার্ল্ড হাসপাতালের চিকিৎসক ডা: লরেন্স পিটার বলেন, 'আমাদের লিভারে ৫% ফ্যাট থাকে। যখন সেই মাত্রা বেড়ে যায় তখনই ফ্যাটি লিভার হয়।' সোনোগ্রাফির মাধ্যমে ফ্যাটি লিভার ধরা পড়ে। ফ্যাটি লিভার দু'রকমের হয়। AFLD (Alcoholic Fatty Liver Disease)- মূলত মদ খেলে হয়। NAFLD (Non-Alcoholic Fatty Liver Disease)- মদ যারা খান না মূলত তাদের হয়। স্থূলতা, ডায়বেটিস কিংবা হজমের সমস্যা থাকলে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। বর্তমানে চিকিৎসকরা এই রোগকে MASLD (Metabolic Dysfunction-associated steatotic liver disease) বলছেন।