আজকাল অনেকেই হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকের কারণে প্রাণ হারাচ্ছেন। অনেকের ধারণা, হার্ট অ্যাটাকের আগে শরীর কোনও ইঙ্গিত দেয় না, হঠাৎ করেই ঘটে। কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন, এটা পুরোপুরি সঠিক নয়। আসলে, হৃদপিণ্ড বহু বছর আগে থেকেই আসন্ন বিপদের সংকেত দিতে শুরু করে। প্রায়ই আমরা সেই সংকেতগুলো চিনতে ব্যর্থ হই। বিশেষজ্ঞদের মতে, কখনও কখনও হার্ট অ্যাটাকের ১০-১২ বছর আগেও শরীর সতর্কবার্তা দিয়ে দেয়।
বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন?
হায়দ্রাবাদের অ্যাপোলো হাসপাতালের স্নায়ুবিশেষজ্ঞ ডাঃ সুধীর কুমারের মতে, হৃদরোগ ধরা পড়ার প্রায় ১২ বছর আগে থেকেই দ্রুত হাঁটা, সাঁতার কাটা বা সাইকেল চালানোর মতো শারীরিক কার্যকলাপের পরিমাণ কমতে শুরু করে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হালকা অস্বস্তি হওয়া স্বাভাবিক, কিন্তু যারা ভবিষ্যতে হৃদরোগে আক্রান্ত হতে যাচ্ছেন, তাদের ক্ষেত্রে এই কার্যক্ষমতা হঠাৎ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়—বিশেষ করে রোগের আগের শেষ দুই বছরে।
গবেষণার তথ্য
JAMA Cardiology-তে প্রকাশিত CARDIA নামের দীর্ঘমেয়াদি এক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব তরুণ ও মধ্যবয়সী ব্যক্তিরা পরবর্তীতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের শারীরিক সক্রিয়তা রোগ শুরু হওয়ার প্রায় ১২ বছর আগেই কমতে শুরু করেছিল। এর মধ্যে শেষ দুই বছরে কার্যক্ষমতার পতন সবচেয়ে বেশি ছিল। গবেষণায় আরও দেখা গেছে, কৃষ্ণাঙ্গ মহিলাদের গড় শারীরিক কার্যকলাপের মাত্রা সবচেয়ে কম এবং তাদের ঝুঁকি বেশি।
সক্রিয় থাকার গুরুত্ব
বিশেষজ্ঞরা প্রতি সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট শারীরিক কার্যকলাপের পরামর্শ দেন। ডাঃ কুমার বলেন, হৃদরোগের পরে ব্যায়াম শুরু করলে অনেক সময়ই দেরি হয়ে যায়। তাই শৈশব থেকেই সক্রিয় জীবনযাপন শুরু করা এবং তা ধরে রাখা জরুরি।
যাদের ইতিমধ্যে হৃদরোগ রয়েছে, তাদের উচিত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ধীরে ধীরে শারীরিক কার্যকলাপ পুনরায় শুরু করা। এটি দ্রুত আরোগ্য এবং দীর্ঘমেয়াদে হৃদপিণ্ডকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।