Heart Failure: হার্টফেল এর ঘটনা পৃথিবীতে সব জায়গাতেই বেড়ে চলেছে। বর্তমান সময়ে ৬৫ বছরের বেশি মানুষ পুরুষ এবং মহিলা উভয়ই হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সবচেয়ে বেশি। কারণ হলো হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়া। এক্সপার্ট এর হিসেব অনুযায়ী গত কিছু সময় থেকে ৪০ বছর বয়সী মানুষদের বেশি লোকেরাও হার্ট ফেলে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে গিয়েছে। কয়েক গুণ হার্ট ফেলার সম্ভাবনা বেড়ে যাওয়ার কারণে বারবার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় এবং কিছু বিষয় মৃত্যু হয়। এই কারণে হার্টফেল হওয়ার জন্য যে সমস্ত কারণ এবং আভাস লুকিয়ে আছে, সেগুলির চিনে নেওয়া খুব জরুরি যাতে হার্টফেল হওয়ার সম্ভাবনা কম করা যায়।
সচেতনতার অভাব
নিউজ এজেন্সিতে প্রেস রিলিজ অনুযায়ী ভারতে হার্টফেলের প্রায় ২৫ শতাংশ রোগী ৪৫ বছর বয়সে চেয়ে কম বয়সী। সেখানে ৬৭ শতাংশ লোক এ রকম রয়েছে, যাদের বয়স ৫৫ বছরের কম এবং তাদের মধ্যে হার্টফেল এর যে আভাস যে তার সূত্র খুঁজে বার করা হয়েছে। সাধারণত রোগীর মধ্যে হাঁটছেন হওয়ার সম্ভাবনা এবং তাদের আক্রান্ত হবার ভয় কম করা যেতে পারে। কিন্তু ভারতে এই রোগের লক্ষণ এবং চিকিৎসা বিষয়ে খুব বেশি সচেতনতা নেই।
হার্টফেল আটকানো সম্ভব
নিউজ এজেন্সির সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ডাক্তার করুণ, (ইন্টারন্যাশনাল কার্ডিওলজিস্ট, ফোর্টিস হাসপাতাল মোহালি) তিনি জানিয়েছেন হার্ড এটাকে চিকিৎসার চেয়ে সবচেয়ে ভালো হলো তা আগেই আটকে দেওয়া। তার জন্য যা যা করা দরকার সহজেই করা যেতে পারে। হার্টফেল হওয়ার লক্ষণ খুব ছোট থেকে ছোট, সূক্ষ্ম হতে পারে। যদি কোনও ব্যক্তি হার্টফেল না হয়ে থাকে, কিন্তু তার মধ্যে হার্টফেল হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। তাই সেই সময়ে ওষুধ খেয়ে এবং লাইফস্টাইলে বদলাতে এই কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট আটকানো যেতে পারে। যাতে তার জীবন যাত্রার মান উন্নত করা যেতে পারে।
হার্টফেল হওয়ার কারণ
ডাক্তার আরকে জয়সওয়াল (ইন্টারন্যাশনাল কার্ডিওলজিস্ট, ফোর্টিস হাসপাতাল, মোহালি) তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী যে আমাদের হৃদয় শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি শরীরের সমস্ত অঙ্গ রক্ত সঞ্চালনের কাজ করার জন্য সব সময় স্পন্দিত হতে থাকে। হার্টফেল তখন হয়, যখন হৃদয় শরীরের প্রয়োজনীয় রক্ত পাম্প করতে পারে না। এটি খুব ধীরগতিতে বৃদ্ধি পাওয়া একটা রোগ। বিভিন্ন কারণে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে। হার্টফেল তখন হয় যখন হার্টের ক্ষতি হয়। যখন সে সমস্ত শরীরের ক্ষতিকারক জিনিসগুলোকে চিকিৎসা শাস্ত্রের দ্বারা ঠিক করা যায় না। নিঃশ্বাসের হালকা সমস্যা যদি দেখা যায়, তাহলে চিকিৎসকের সঙ্গে অবিলম্বে পরামর্শ করা উচিত। জীবনযাত্রায় বদলানো অত্যন্ত জরুরি। দুনিয়ার বাকি এলাকার তুলনায় ভারতে বংশানুক্রমিক হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। কারণ আমরা বেশিরভাগই আনহেলদি লাইফস্টাইল পালন করে। ইদানিং যুবকদের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি দেখা গিয়েছে।
অনেক সময় বোঝাই যায় না
ডক্টর করুণ (ইন্টারন্যাশনাল কার্ডিওলজিস্ট, ফোর্টিস হাসপাতাল, মোহালি) জানিয়েছেন, করোনারি ধমনী রোগ হার্টফেল এর প্রাথমিক কারণ। করোনারি ধমনী রোগের অর্থ হলো হৃদয় এর মাংস পেশীগুলি পর্যন্ত রক্ত পৌঁছাতে বাধা প্রাপ্ত হওয়া। যেমনভাবে রক্তের সরবরাহ ধীরে ধীরে কম হতে থাকে, ততো রক্ত চলাচলের রাস্তা বন্ধ হতে থাকে হৃদয়ের মাংসপেশি। সেই সঙ্গেই আস্তে আস্তে কমজোর হতে শুরু করে হৃদয়ের কাজ। যাতে এক সময় এগিয়ে গতি আটকে যায়, অনেক সময় একেবারে আটকে যাওয়ার আগে পর্যন্ত তেমন কোনও লক্ষণও খুব একটা বোঝা যায় না। বোঝা গেলেও তা আমরা বুঝতে পারি না।
অন্যান্য রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি
যে সমস্ত রোগীদের আগে থেকে ব্লাড প্রেসার স্থূলতা, ডায়াবেটিস, ধূমপান, জাঙ্কফুড খাওয়া এবং ইরোটিক লাইফস্টাইল থাকে, তাদের হার্ট ফেলার সম্ভাবনা কয়েক গুণ বেশি থাকে। মানুষের মধ্যে সোশ্যাল সাইকোলজিকাল প্রেসার অনেক বেড়ে গিয়েছে। যারা করোনারি ধমনী রোগে বাড়িয়ে দেওয়ার এবং তার পরের হার্টফেল এর কারণ এ পরিণত হচ্ছে। এরই মধ্যে হার্ট ফেল করার কারণ হিসেবে যে সমস্ত বিষয়গুলি রয়েছে, তাতে গুরুত্ব দেওয়া দরকার।
ডায়েবেটিস ও হাই ব্লাড প্রেসার
ডক্টর রজত শর্মা (কার্ডিয়াক এলেক্ট্রোফিজিওলজিস্ট), তিনি সতর্ক করেছেন যে ভারতে যেভাবে হৃদরোগের সংখ্যা বাড়ছে, ভারত সে সমস্ত দেশের মধ্যে শামিল, যেখানে হৃদয় গতি আটকে যাওয়ার ঘটনা অনেক বেশি। ভারত দ্বিতীয় সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা দেশ। দেশের জনসংখ্যা একটা বড় অংশ আগে থেকেই হাই ব্লাড প্রেসার এবং ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে রয়েছে। এছাড়া বহু ভারতীয় বংশানুক্রমিকভাবে করোনারি ধমনী রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। যাতে হার্টফেল এর বেশি সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
ডক্টর রাজেশ শর্মা আরো জানিয়েছেন যে আজকের সময়ে যুব সম্প্রদায়ের পরামর্শ দেওয়া এবং তাদের ভালো লাইফস্টাইল যাপন করার ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে। এই প্রতিবেদন, বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলে তাদের বক্তব্য অনুযায়ী করা হয়েছে।