আধুনিক জীবনে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি একটি গুরুতর সমস্যা। কোলেস্টেরল বাড়লে স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। কোলেস্টেরল আদতে রক্তে উপস্থিত একটি মোমজাতীয় পদার্থ। রক্তে আটকে গিয়ে রক্তনালীগুলিকে ব্লক করে দেয় কোলেস্টেরল। কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়লে ধীরে হয়ে যায় রক্তের প্রবাহ। যার ফলে দেখা দিতে পারে রক্তচাপের সমস্যা। রক্ত প্রবাহে বাধা হৃদরোগ এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়। হৃদরোগের মতো গুরুতর অসুখের ঝুঁকি কমাতে, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।
কোলেস্টেরল বাড়ার লক্ষণগুলো কী কী?
শরীরে কোলেস্টেরল বৃদ্ধির কারণে নানা উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যেমন- ঘাম, ক্লান্তি, দুর্বলতা, ক্ষুধা হ্রাস ইত্যাদি। এগুলি ছাড়াও এমন কিছু লক্ষণ রয়েছে, যা চোখ বা তার চারপাশে লক্ষ্য করা যায়।
xanthelasma
কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে চোখে দেখা দেয় জ্যানথেলাসমা। এই অবস্থায় চোখের চারপাশে হলুদ হতে শুরু করে। ত্বকের নিচে কোলেস্টেরল জমা হওয়ার কারণে এমনটা হয়।
Arcus senilis
এই অবস্থায় চোখের সামনের অংশের চারপাশে নীল, সাদা বা হালকা ধূসর রিং তৈরি হতে পারে। কর্নিয়ার উপরের বা নিচে দেখা দিতে পারে শুরুতে। সময়ের সঙ্গে পরিস্থিতির অবনতি হয়।
Retinal vein occlusion
চোখের রক্তনালীতে বাধা পায় রক্ত। এতে গুরুতর দৃষ্টি সমস্যা হতে পারে। তা হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। এই লক্ষণগুলি দেখলে অবিলম্বে একজন ডাক্তারের কাছে পরামর্শ নিন।
কোলেস্টেরল কম করতে কী খাবেন?
বিনস- ২০২১ সালে জার্নাল অফ নিউট্রিশনে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, বিভিন্ন ধরণের বিনস ভাল কোলেস্টেরল বাড়াতে সহায়ক। কমায় খারাপ কোলেস্টেরল। গবেষকরা মনে করেন,প্রতিদিন এক কাপ (১৮০ গ্রাম) বিভিন্ন ধরণের বিনস খাওয়া উচিত। খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে এবং ভাল কোলেস্টেরল বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। শুধু তাই নয় হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে।
ওজন কমান - কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে চাইলে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে ওজন। স্থূলতা এবং ওজন কমানো জরুরি। পেটের চারপাশে চর্বি বাড়ার ফলে ভিসারাল ফ্যাট বাড়ে যা লিভারকে প্রভাবিত করে। ওজন কমানোর জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা উচিত। বেশি বেশি জল খান।
স্বাস্থ্যকর ডায়েট- কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে হলে অবিলম্বে প্রক্রিয়াজাত খাবার, অতিরিক্ত পরিমাণে নুন এবং চিনি খাওয়া বন্ধ করতে হবে। ওটমিল, আপেল এবং অঙ্কুরিত ছোলা রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। অন্যদিকে, আখরোট, ফ্ল্যাক্সসিডে মেলে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড।
অ্যালকোহল ও ধূমপান বন্ধ করুন- স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে হলে অ্যালকোহল ও ধূমপান ছাড়া জরুরি। অতিরিক্ত অ্যালকোহল খেলে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়।
ধূমপান হার্ট এবং হৃদস্পন্দনের উপর চাপ ফেলে। ধূমপান ত্যাগ করলে রক্ত সঞ্চালন এবং ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়ে।
শরীরচর্চা- কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে চাইলে সারাদিনে অন্তত একবার শরীরচর্চা করুন। সেটা সাঁতার, হাঁটা, সাইকেল চালানো, নাচ ইত্যাদির হতে পারে। বসে কাটাবেন না। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে আধ ঘন্টা হাঁটুন।
আরও পড়ুন- কিডনি স্টোনের লক্ষণ কী কী? এই ৫ জিনিস গলিয়ে দেবে বড় পাথরও