হরমোনাল গর্ভনিরোধক বড়ি নিয়ে মহিলাদের মধ্যে সচেতনতা ক্রমেই বাড়ছে। অবাঞ্ছিত গর্ভাবস্থা রুখতে অনেক নারী নিজেদের সিদ্ধান্তেই নিয়মিত বা জরুরি গর্ভনিরোধক বড়ি গ্রহণ করেন, যদিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই। তবে সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণায় উঠে এসেছে এই বড়ির সম্ভাব্য ঝুঁকির চাঞ্চল্যকর তথ্য।
২৫ বছর ধরে ২০ লক্ষেরও বেশি মহিলার উপর গবেষণা
ডেনমার্কের এক দীর্ঘমেয়াদী গবেষণায় দেখা গেছে, হরমোনাল জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি বিশেষত ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টিন মিশ্রণে তৈরি বড়ি, স্ট্রোক এবং হৃদ্রোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে দিতে পারে। গবেষণায় ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী ২০ লক্ষেরও বেশি ডেনিশ মহিলার উপর ২৫ বছর ধরে নজর রাখা হয়েছে।
গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত ছিল বিভিন্ন ধরনের গর্ভনিরোধক যেমন:
ইস্ট্রোজেন-প্রোজেস্টিন বড়ি
প্রোজেস্টিন-শুধুমাত্র বড়ি
যোনি রিং
প্যাচ
ত্বকের নিচে ইমপ্লান্ট
ইন্ট্রামাসকুলার ইনজেকশন
লেভোনরজেস্ট্রেল-রিলিজিং ইন্ট্রাইউটেরিন ডিভাইস (IUD)
গবেষণার চমকপ্রদ ফলাফল
ইস্ট্রোজেন-প্রোজেস্টিন বড়ি গ্রহণকারী মহিলাদের ক্ষেত্রে স্ট্রোকের ঝুঁকি ছিল ২.৪ গুণ বেশি এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি ছিল ৩.৮ গুণ বেশি।
প্রোজেস্টিন-শুধুমাত্র বড়ি এবং ইমপ্লান্টেও ঝুঁকি রয়েছে, যদিও তা তুলনামূলকভাবে কম।
যোনি রিং ও ত্বকের প্যাচ ব্যবহারকারীদেরও ঝুঁকি বেড়েছে।
একমাত্র ব্যতিক্রম লেভোনরজেস্ট্রেল-রিলিজিং IUD, যা দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারের পরও অতিরিক্ত ঝুঁকির সঙ্গে যুক্ত নয়।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
গবেষকরা জানিয়েছেন, হরমোনাল গর্ভনিরোধক গ্রহণের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। বিশেষ করে যেসব নারীর পূর্ব ইতিহাসে রক্ত জমাট বাঁধা, হৃদ্রোগ, ক্যান্সার, লিভার ও কিডনির রোগ, পলিসিস্টিক ওভারির মতো সমস্যা রয়েছে, তাদের এই বড়ি সেবনের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন।