গরমে নাজেহাল সাধারণ মানুষ। ঘর থেকে অফিস কোথাও যেন শান্তি নেই। এই রকম গরমে কোনও খাবারই যেন মুখে দিতে মন চায় না। তবে এই গরমে একটা খাবারই খেতে বারবার মন চায়, যা খেতেও দারুণ আর খেয়েও শান্তি। সেটা হল পান্তাভাত। ঠান্ডা ভাতে জল ঢেলে, পোড়া শুকনো লঙ্কা, কাঁচা পেঁয়াজ, লেবু ও নুন দিয়ে পান্তাভাত অনেকেই এই গরমে খেয়ে থাকেন। এই তীব্র গরমে পান্তাভাত মন ও পেট দুটোকেই ঠান্ডা রাখে। চিকিৎসকদের মতে, গরম ভাতের তুলনায় পান্তার উপকারীতা অনেক বেশি। এখন তো গ্রামবাংলার পাশাপাশি শহরের মানুষও এই পান্তাভাতের প্রেমে পড়ে গিয়েছেন। অনেকে যেমন পান্তাভাত এমনিই খেয়ে ফেলেন আবার অনেকেই রয়েছেন যাঁরা পান্তাভাতের সঙ্গে অনেক মুখোরোচক খাবার নিয়ে খান। আসুন জেনে নিই এই পান্তাভাতের সঙ্গে আর কী কী খেলে তা আরও সুস্বাদু ও মজাদার হয়ে উঠবে।
কী কী ভাবে পান্তা খাওয়া যায়?
-পান্তার সঙ্গে আলুর যে কোনও পদ খুব ভাল যায়। কড়াইতে সর্ষের তেল ঢেলে শুকনো লঙ্কা, কাঁচা লঙ্কা আর পেঁয়াজ ভেজে নিয়ে তুলে রাখুন। এ বার একটি পাত্রে সেদ্ধ করা আলু, নুন আর ভেজে রাখা পেঁয়াজের সঙ্গে খুব ভাল করে মেখে নিন। পান্তার সঙ্গে আলু মাখা, ডালের বড়া ভাজা, মাছ ভাজা আর কাঁচা পেঁয়াজ দিয়ে জমে যাবে ভোজ!
-একটু ভিন্ন ভাবে পান্তা খেতে চাইলে পান্তার সঙ্গে আলু ভাজা, কাঁচা ছোলা মাখা, ছাতু মাখা, মাছের ডিমের বড়া আর কাঁচা পেয়াজ আর কাঁচা লঙ্কা খেতে পারেন।
-অনেকে পান্তাভাতের সঙ্গে ইলিশ মাছ ভাজা, নানান ধরনের ভর্তা খাওয়া হয়ে থাকে বাংলাদেশে। তবে এই চল এখন এপার বাংলাতেও চলে এসেছে।
-বাংলা ছাড়িয়ে যদি ওড়িশার দিকে যাওয়া যায় তবে এখানে পান্তাভাতের সঙ্গে খাওয়া হয়ে থাকে শুঁটকি মাছ, আম্বুলা (শুকনো আমের আঁটিতে মশলা দেওয়া)। এটা ওড়িশায় বেশ জনপ্রিয় এক খাবার।
পান্তাভাত কীভাবে খাবেন
-পান্তা বানাতে রাতের বেঁচে যাওয়া ভাতে জল ঢেলে দেওয়া হয়। পুরো ভাতটাই যেন জলের তলায় থাকে। তবে, খুব বেশি জল নয়। পরদিন সকালে তৈরি পান্তা। পান্তার অনেক রকমফেরও আছে। যেমন, পান্তার ভাত একটু শক্ত ও অবিকৃত যাঁরা পছন্দ করেন, তাঁরা রাতে ভাতটা একটু শক্ত অবস্থায় নামিয়ে নেন। ভাত ঠান্ডা হওয়ার পর (দু-তিন ঘণ্টার মধ্যে) জল ঢালেন।
-অনেকে আবার একটু বেশি মজে যাওয়া পান্তা পছন্দ করেন। মানে ভাতটা একটু নরম থাকবে সেই পান্তায়। এর জন্য রাতের ভাতটা একটু বেশি সিদ্ধ করতে পারলে ভাল। অল্প গরম থাকতে থাকতেই ভাতে জল ঢেলে দিতে হয় সে ক্ষেত্রে।
-ইষৎ ‘টোকো’ স্বাদের করতে চান যাঁরা, তাঁরা গরম ভাতেই জল ঢেলে দেন আলাদা করে তুলে তাতে একটু নুন মিশিয়ে দেন। সামান্য গরম ফ্যান মিশিয়ে দিলে পরদিন ভাত টকে যাবে নিশ্চিত। কেউ কেউ সকালের ভাতে জল দিয়ে পরদিন খান। কেউ আরও একদিন রেখে দেন। তাতে ভাতে আরও বেশি পচন ধরে, স্বাদও বেড়ে যায়।