Migraine Pain: মাইগ্রেন একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা যা বিশ্বের প্রতি সপ্তম ব্যক্তিকে প্রভাবিত করে। মাইগ্রেন পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের মধ্যে তিনগুণ বেশি সাধারণ। যখন একজন ব্যক্তির মাইগ্রেন হয়, তখন তিনি মাথার একপাশে জোড়ালো বা মাঝারি মাথাব্যথা অনুভব করেন। এই মাথাব্যথা ৪-৭২ ঘন্টা স্থায়ী হতে পারে। এই সময়, ব্যক্তির বমি বমি ভাব, বমি, মাথা ঘোরা, আলো ও শব্দ সহ্য করতে না পারার মতো সমস্যা হয়।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, 'মাইগ্রেন একটি স্নায়বিক রোগ। যাদের মাইগ্রেনের সমস্যা আছে, তাদের মাসে কয়েকবার মাইগ্রেনের ব্যথা হতে পারে। মাইগ্রেনের কিছু দীর্ঘস্থায়ী ঘটনাও রয়েছে যেখানে ব্যক্তির মাসের ১৫ দিনের বেশি মাথাব্যথা হতে পারে।'
মাইগ্রেনের ব্যথার জন্য কারা দায়ি?
পনির, অ্যালকোহল, চকোলেট, বাদাম, প্রক্রিয়াজাত খাবার, নির্দিষ্ট গন্ধ, উজ্জ্বল আলো, ঘুমের ব্যাঘাত, পিরিয়ড, মেনোপজ, ভ্রমণ, আবহাওয়ার পরিবর্তন এবং মানসিক চাপ সবই মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু করতে পারে।
মাইগ্রেনের চারটি পর্যায়
মাইগ্রেনের চারটি ধাপ রয়েছে। মাথাব্যথা শুরু হওয়ার কয়েক ঘন্টা আগে প্রড্রোম ফেজ নামক প্রথম ধাপটি শুরু হয়। এই সময় ব্যক্তি খিটখিটে এবং হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়বে। সে বারবার হাঁচি দেবে এবং তার খাওয়া-দাওয়ার ইচ্ছে বাড়বে।
দ্বিতীয় পর্যায়টি হল অরা পর্ব ( Aura Phase) যেখানে একজন ব্যক্তি তার চোখের সামনে আলোর তির্যক রেখা দেখতে পান। এই সময়ে, ব্যক্তির মনে হয় যেন তার শরীর অসাড় হয়ে গেছে এবং ঝাঁকুনি দিচ্ছে।
তৃতীয় পর্যায় হল মাথাব্যথার পর্যায় যা ৪-৭২ ঘন্টা স্থায়ী হয় এবং চতুর্থ পর্যায় হল মাইগ্রেন হ্যাংআউট ফেজ যেখানে ব্যক্তি সাধারণত অসুস্থ, খিটখিটে এবং বিভ্রান্ত বোধ করেন।
চিকিৎসকদের মতে, 'পিরিয়ডের সময় মহিলাদের মাইগ্রেন হতে পারে কারণ এই সময়ে ইস্ট্রোজেন হরমোন কমে যায়। দুই তৃতীয়াংশ ক্ষেত্রে, মেনোপজের পর মাইগ্রেন কমে যায়। কিন্তু কিছু রোগীর ক্ষেত্রে এটি মেনোপজের পরেও শুরু হতে পারে।'
শিশুদেরও মাইগ্রেন হয়
মাইগ্রেনের সমস্যা ছোট বাচ্চাদেরও হতে পারে। শিশুদের মাইগ্রেনের সঙ্গে মাথাব্যথা হয় না, তবে তাদের বমি এবং পেটব্যথা হয়। খুব ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে, মাইগ্রেনের প্রথম লক্ষণ হতে পারে পেটব্যথা। অভিভাবকদের মধ্যে কেউ যদি মাইগ্রেনে আক্রান্ত হয়ে থাকেন, তাহলে তাদের সন্তানের এই সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়। অন্যদিকে, বাবা-মা উভয়েরই যদি মাইগ্রেনের সমস্যা থাকে, তাহলে সন্তানের মাইগ্রেনের ঝুঁকি ৭৫ শতাংশ বেড়ে যায়।
কীভাবে রক্ষা পাবেন?
চিকিৎসকরা বলছেন, মাইগ্রেন কোনো বিপজ্জনক সমস্যা নয়, তবে কিছু ব্যবস্থার মাধ্যমে এটি প্রতিরোধ করা যায়। এর মধ্যে রয়েছে ধূমপান ত্যাগ করা, অ্যালকোহল থেকে বিরত থাকা, অতিরিক্ত ক্যাফেইন কমানো এবং মাইগ্রেনে ভুগছেন এমন মহিলারা জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি এড়িয়ে চলা। চিকিৎসকদের বক্তব্য, ওষুধ ছাড়াও মাইগ্রেন বন্ধ করা যায়। এর মধ্যে রয়েছে গভীর শ্বাস নেওয়া এবং যোগব্যায়াম করা। শরীরকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দিয়েও মাইগ্রেন প্রতিরোধ করা যায়।