৪ আগস্ট ‘জাতীয় হাড় ও জয়েন্ট দিবস’ উদযাপন করে Indian Orthopaedic Association (IOA), যার মূল উদ্দেশ্য দেশের মানুষকে হাড় ও সন্ধি (Joint)-এর স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন করা। কিন্তু চিত্রটা চিন্তার। চিকিৎসকদের মতে, বর্তমানে শুধু প্রবীণরাই নয়, তরুণদের মধ্যেও হাড় দুর্বল হওয়ার সমস্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এর প্রধান কারণ ভিটামিন-ডি-এর ঘাটতি, ক্যালসিয়াম শূন্য খাদ্যাভ্যাস এবং শারীরিক পরিশ্রমের অভাব।
এক গবেষণা বলছে, ভারতে প্রায় ৬ কোটি মানুষ অস্টিওপোরোসিসে ভুগছেন, যার ৮০ শতাংশই নারী। শহরাঞ্চলে প্রায় ৮০% মানুষের শরীরে ভিটামিন-ডি-এর ঘাটতি রয়েছে। এর ফলে হাড় পাতলা হয়ে যায়, ঘনত্ব কমে যায় এবং ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
হাড় দুর্বল কেন হয়?
মানবদেহের গঠন হাড়ের উপর নির্ভরশীল। হাড় তৈরি হয় মূলত ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং কোলাজেন দিয়ে। ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস হাড়কে শক্তিশালী করে, আর কোলাজেন হাড়কে নমনীয়তা দেয়। তবে ভিটামিন-ডি-এর অভাবে শরীর পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম শোষণ করতে পারে না, যার ফলে হাড় দুর্বল হতে শুরু করে।
শারীরিক পরিশ্রমের অভাব, দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করা এবং পর্যাপ্ত সূর্যালোক না পাওয়াও হাড় দুর্বল করার বড় কারণ।
কীভাবে হাড় শক্তিশালী রাখবেন?
ডাঃ প্রমোদ ভোড়, ফোর্টিস হাসপাতালের অর্থোপেডিকস ডিরেক্টর, জানিয়েছেন, শুধু ব্যায়াম নয়, সঠিক খাদ্যাভ্যাসও জরুরি। দুধ, দই, ছানা, ডিম, গাজর, শাকসবজি, বাদাম ও কলা রোজ খাদ্যতালিকায় রাখুন। ভিটামিন-ডি সাপ্লিমেন্ট এবং দিনে অন্তত ২০ মিনিট রোদে বসা অত্যন্ত উপকারী।
ডাঃ সঞ্জীব গম্ভীর, এলবিএস হাসপাতালের অর্থোপেডিস্ট বলেন, 'প্রতি ৩০ মিনিট পরপর একটু হাঁটাহাঁটি করুন। দৈনিক ব্যায়াম ও পর্যাপ্ত জল পান করুন। ক্যালসিয়াম এবং প্রোটিনযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন এবং নিজে থেকে কোনও ওষুধ খাবেন না, আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।'
পরামর্শ
প্রতিদিন অন্তত ১৫-২০ মিনিট রোদে থাকুন। প্রতি ৩০ মিনিটে বসা ছেড়ে ২-৫ মিনিট হাঁটুন
ব্যায়াম করুন: হালকা স্ট্রেচিং, হাঁটা, সাইক্লিং
দুধ, পনির, শাকসবজি, বাদাম এবং ডিম খেতে হবে
ভিটামিন-ডি ও ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিন
বছরে অন্তত একবার হাড়ের ঘনত্ব পরীক্ষা করান (Bone Density Test)
হাড়ই শরীরের ভিত্তি। তাই আজ থেকেই ছোট ছোট অভ্যাস বদলে দীর্ঘমেয়াদী হাড়ের সুস্থতার দিকে এগোন। হাড় সুস্থ থাকলেই জীবন চলবে সাবলীলভাবে, শক্ত হাতে ভবিষ্যৎ গড়ার শক্তি মিলবে।