অনেকেই রাতে ঘুমানোর সময় ভয়াবহ স্বপ্ন বা দুঃস্বপ্নে কষ্ট পান। অনেক সময় এসবকে সাধারণ মানসিক অবস্থা বা ঘুমজনিত সমস্যা বলে এড়িয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এই ভয়াবহ স্বপ্ন আসলে আপনার জীবনের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে—এমনকি অকাল মৃত্যুর কারণও হতে পারে।
গবেষণায় কী উঠে এসেছে?
আমেরিকায় ২৬ থেকে ৭৪ বছর বয়সী প্রায় ৪,০০০ জনের উপর দীর্ঘ ১৮ বছরের এক গবেষণায় দেখা গেছে,
যেসব প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি প্রতি সপ্তাহে একাধিকবার দুঃস্বপ্ন দেখেন, তাঁদের ৭৫ বছর বয়সের আগেই মৃত্যুর সম্ভাবনা অনেক বেশি—তুলনামূলকভাবে তাঁদের থেকে যারা মাঝে মাঝে বা খুব কম দুঃস্বপ্ন দেখেন।
দুঃস্বপ্ন কীভাবে ক্ষতি করে?
গবেষণা বলছে, নিয়মিত দুঃস্বপ্ন দেখা ব্যক্তিদের জৈবিক বয়স (biological age) তুলনামূলকভাবে বেশি হয়। এর মানে, তাঁদের শরীরের কোষগুলো অনেক দ্রুত বুড়িয়ে যায়, যা দীর্ঘমেয়াদে মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ায়।
এছাড়া, ভীতিকর স্বপ্ন দেখা অবস্থায় মস্তিষ্ক সচল থাকলেও শরীর থাকে সম্পূর্ণ নিস্ক্রিয়—ফলে শরীর চিৎকার বা প্রতিক্রিয়া দিতে পারে না। এতে স্ট্রেস হরমোন বেড়ে যায়, ঘুম ভেঙে যায় এবং রাতে শরীর নিজেকে মেরামতের সময় পায় না।
এর ফলে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে। মানসিক চাপ দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। স্নায়বিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। দিনের বেলায় ক্লান্তি ও মনঃসংযোগে সমস্যা হতে পারে।
কতজন এই সমস্যায় ভোগেন? প্রায় ৫% প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি প্রতি সপ্তাহে একাধিকবার দুঃস্বপ্নে ভোগেন। প্রায় ১২.৫% মানুষ প্রতি মাসে একবার দুঃস্বপ্ন দেখেন
কী করবেন?
ঘুমাতে যাওয়ার আগে মোবাইল ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। ধ্যান, হালকা বই পড়া বা শান্ত সঙ্গীত শুনুন। ঘুমের নির্দিষ্ট রুটিন গড়ে তুলুন। বারবার দুঃস্বপ্ন দেখলে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।