
পিঠের ব্যথাকে আমরা অনেক সময়ই সাধারণ সমস্যা বলে মনে করি-দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা, ক্লান্তি বা ভুল ভঙ্গির ফল। কিন্তু চিকিৎসকরা সতর্ক করছেন, এই ‘সাধারণ’ ব্যথা কখনও কখনও হতে পারে মারাত্মক রোগের নীরব ইঙ্গিত। ব্রিটিশ সার্জন ড. নেভিল মেনেজেস বলেন, বিশ্রাম বা ওষুধে না কমা পিঠের ব্যথা অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণও হতে পারে।
অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার বিশ্বে অন্যতম প্রাণঘাতী ক্যান্সার। পাকস্থলীর পিছনে অবস্থিত অগ্ন্যাশয় খাদ্য হজমে সাহায্যকারী এনজাইম ও রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণকারী হরমোন তৈরি করে। ক্যান্সারটি ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠে এবং শুরুতে লক্ষণগুলো খুব হালকা হওয়ায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেরিতে ধরা পড়ে। তাই শরীরের ক্ষুদ্র পরিবর্তনও গুরুত্ব সহকারে দেখা জরুরি।
অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারে কেন পিঠে ব্যথা হয়?
টিউমার বড় হয়ে গেলে মেরুদণ্ডের কাছাকাছি স্নায়ু বা আশপাশের টিস্যুতে চাপ দেয়। অগ্ন্যাশয়ের পিছনে থাকা সিলিয়াক প্লেক্সাস নামক বড় স্নায়ুগুচ্ছ চাপের কারণে ব্যথা অনুভূত হয়। ব্যথা সাধারণত পেটের উপরিভাগে শুরু হয়ে পেছনে ছড়িয়ে পড়ে।
ক্যান্সারজনিত পিঠব্যথা কেমন হয়?
ব্যথা উপরের পেট থেকে পিঠে ছড়ায়
হালকা বা মাঝারি মাত্রার ব্যথা ওঠানামা করতে পারে
শুয়ে থাকলে ব্যথা বাড়ে, সামান্য সামনে ঝুঁকে বসলে কমে
কখনও হঠাৎ তীব্র ব্যথা দেখা দিতে পারে
অগ্ন্যাশয় ক্যান্সারের অন্যান্য লক্ষণ
জন্ডিস বা চোখের হলুদাভাব
গাঢ় প্রস্রাব
ক্ষুধামান্দ্য ও হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া
বমি বমি ভাব
ত্বকের চুলকানি
পেট ফোলা বা গ্যাস
অতিরিক্ত ক্লান্তি
রক্ত জমাট বাঁধা
হঠাৎ ডায়াবেটিস ধরা পড়া
ড. মেনেজেস জোর দিয়ে বলেন, 'সব পিঠব্যথাই ক্যান্সারের লক্ষণ নয়। কিন্তু ব্যথা যদি দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং সাধারণ চিকিৎসায় না সারে, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। সময়মতো পরীক্ষা প্রাণ বাঁচাতে পারে।'