পিরিয়ড, একজন মহিলার শরীরের অত্যাবশ্যকীয় প্রক্রিয়াগুলির মধ্যে একটি। পিরিয়ডের (Period) সময়ে সঠিক পরিচ্ছন্নতা এবং সঠিক খাবার খাওয়া খুবই জরুরি। এই সময় কিছু নিয়ম মেনে চলাই পেটে ব্যথা (Period Cramp), মাথা ঘোরা, গা বমি ভাব ইত্যাদি নানা সমস্যা কমানোর চাবিকাঠি হল। অনেক মহিলারই পিরিয়ডের (Menstrual Cycle) সময় মাথা বা পেটে ব্যথা, শরীরের অন্যান্য স্থানে ব্যথা এবং অনিদ্রার মতো সমস্যা থাকে।
এমনকি পিরিয়ড শুরু হওয়ার আগে এবং পিরিয়ডের শেষের সময়কালে অনেকের শারীরিক, আচরণগত এবং মনস্তাত্ত্বিক নানা সমস্যা দেখা দেয়। যাকে প্রিমেনস্ট্রুয়াল সিনড্রোম (Premenstrual Syndrome/ PMS) বলে। সাধারণত ওজন বৃদ্ধি, ফুলে যাওয়া, স্তন পূর্ণতা, মেজাজের পরিবর্তন, মাথাব্যথা, বিষন্নতা, তলপেটে, পিঠে এবং উরুতে ব্যথা দেখা দিতে পারে। এই লক্ষণগুলি ব্যক্তি বিশেষে হালকা, মাঝারি বা গুরুতর হতে পারে। তাই তীব্রতার উপর নির্ভর করে চিকিৎসকের পরামর্শ দেওয়া উচিত।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এই সময়ে প্রাকৃতিক পুষ্টি যা, শারীরিক প্রদাহ কমায় তা পেটে ব্যথা কমাতে সাহায্য করবে৷ এই খাবারগুলির মধ্যে রয়েছে ফল, শাকসবজি, লেবু, বাদাম এবং গোটা শস্য৷ দুধ, মাংস ইত্যাদির মতো প্রাণীজ পণ্যগুলি এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয় এই সময়কালে৷ কিছু তেল আছে যা, ইস্ট্রোজেনের মাত্রা বাড়ায়। শরীরের ইস্ট্রোজেনের মাত্রা বৃদ্ধির ফলে জরায়ুর আস্তরণ অস্বাভাবিকভাবে পুরু হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এর ফলে পিরিয়ডের সময় বেশি ব্যথা হয়। ম্যাগনেসিয়াম, ফাইবার, ভিটামিন বি, ক্যালসিয়ামের মতো পুষ্টি উপাদান অন্তর্ভুক্ত করাও প্রয়োজন ডায়েটে।
ডায়েটে কী রাখবেন?
* কলায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন B6, পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে। পিরিয়ডের পেটে ব্যথা এবং ফোলাভাব কমাতে পারে।
* সবুজ শাক-সবজি যেমন- ব্রকলি, পালং শাক ইত্যাদি পিরিয়ডের সময় ডায়েটে ভাল পুষ্টির অন্তর্ভুক্ত।
* ৮৫ % কোকো সহ ডার্ক চকোলেট ম্যাগনেসিয়াম এবং ফাইবার সমৃদ্ধ। কোকো পিরিয়ড ক্র্যাম্প কমাতে সাহায্য করতে পারে। কোকো মেজাজ উন্নত করতেও সাহায্য করে।
* কমলালেবু ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। এগুলি ক্লান্তি কমায় এবং মেজাজ উন্নত করে।
* এক মুঠো বাদাম, পেস্তা এবং সূর্যমুখীর বীজ পিরিয়ডের সময় ভাল স্ন্যাকস।
* ক্যামোমাইল এবং আদা চায়ের দারুণ উপকার রয়েছে। গা বমি ভাব এবং ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে এই ধরণের পানীয়।
* পর্যাপ্ত জল পান করলে শরীর হাইড্রেটেড থাকে এবং ক্লান্তি কমে।
কোন খাবার এড়িয়ে চলবেন?
পিরিয়ডের সময় যে সব খাবার এড়িয়ে চলতে হবে তা হল ভাজাভুজি, ফাস্ট ফুড, উচ্চ লবণযুক্ত খাবার, ক্যাফেইন, দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবার।