আজকাল ছোট ছোট বাচ্চাদের হাতে মোবাইল তুলে দেন তাদের মা বাবারাই। নিজেরা নানা কাজে ব্যস্ত থাকায়, সন্তানদের দিকে মন দেওয়ার সময় বেশ কম পান তাঁরা। দেড় থেকে দুই বছরের শিশুরাও এখন মোবাইলে মগ্ন। বৃন্দাবন-মথুরার একজন বিখ্যাত সাধু প্রেমানন্দ মহারাজকে একজন ভক্ত এই বিষয়টি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন।
ভক্তের প্রশ্ন ছিল, 'ছোট শিশুরা কাঁদলে তাদের থামাতে মোবাইল ফোন দেওয়া কি ঠিক? কারণ ছোট পরিবারে বাচ্চাদের লালন-পালন করা একটা বিশাল দায়িত্ব।' প্রেমানন্দ মহারাজ এর সুন্দর জবাব দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, '৩৫ বছর আগেও শিশু ছিল, এবং মানুষ এখনও কাজে যেত, ভারতে এবং বিদেশে কাজ করত।'
মহারাজ আরও বলেন, 'অতীতেও, সাধারণ মানুষ কাজে ব্যস্ত থাকত, তাই সন্তানের যত্ন নেওয়ার জন্য একজন আয়া নিয়োগ করা হত। তিনি সন্তানের সেবা করতেন এবং সুরক্ষা দিতেন, যখন বাবা-মা তাদের দায়িত্ব থেকে ফিরে আসতেন এবং তাদের পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতেন। কিন্তু সেই সময় ফোন ছিল না। ফলে শুধু একান্নবর্তী পরিবার নয়, ছোট পরিবারেও শিশুর হাতে ফোন দেওয়ার রেওয়াজ ছিল না। কিন্তু তারপরেও কোনও সমস্যা হত না।
আজকের যুগে, বাচ্চাদের মোবাইল ফোন দেওয়া তাদের মূল্যবোধ নষ্ট করছে। এই কারণেই আজকাল বাচ্চারা তাদের বাবা-মায়ের পা স্পর্শ করে না বা তাদের নমস্কার করে না। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে, মাটির পা ছুঁয়ে, বাবা-মায়ের পা ছুঁয়ে, ঈশ্বরকে স্মরণ করে, আজকের সময়ে কোনও সন্তানেরই এমন দৈনন্দিন রুটিন নেই।
আজকাল শিশুরা সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ঘুমানোর আগে অবধি মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকে। এর ফলে কেবল পশুত্বই ফুটে উঠবে, মানবতা নয়। প্রেমানন্দ মহারাজ আরও বলেন, 'দেড় থেকে দুই বছরের শিশুকে মোবাইল ফোন দেওয়া কোনও বাধ্যবাধকতা নয়, বরং এটা একটা অভ্যাস। বাবারা মনে করেন যে, তাদের সন্তানদের ফোন দেখালে তারা ব্যস্ত থাকবে, কিন্তু এটি নতুন রোগেরও জন্ম দিচ্ছে।'