সময় পেলেই গান শোনা দারুণ একটা অভ্যাস। মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে গান দারুণ গুরুত্বপূর্ণ। তবে অনেকেই অনেকটা সময় কানে ইয়ারবাড বা হেড ফোন লাগিয়ে গান শুনতে থাকেন। পথে ঘাটে কানে হেডফোন বা ইয়ারবাড নিয়ে বেরোলে বিপদ তো হয়ই, সে খবরও বারবার শিরোনামে উঠে আসে। তবে শুধু তাই নয়, আরও নানা ধরণের সমস্যা দেখা যায় নিয়মিত হাই ভলিউমে ইয়ারবাডে গান শুনতে থাকলে।
ইয়ারফোনে গান শোনার সময় সর্বোচ্চ ভলিয়্যুমে রেখে কখনওই শুনবেন না। এতে কানের পর্দার খুব ক্ষতি হয়। যেহেতু এই আওয়াজ সরাসরি কানে ঢোকে, তাই এ বিষয়ে বিশেষ সচেতনতা অবলম্বন করুন। মোবাইলের ভলিয়্যুম কখনওই মাঝামাঝির বেশি রাখবেন না। তাতে কানের পর্দার ক্ষমতার সঙ্গে তা সামঞ্জস্য রাখতে পারে। গান চালিয়ে দেখে নিন ওই ভলিয়্যুমে বাইরের চিৎকার, আওয়াজ এ সবও কানে পৌঁছচ্ছে কি না। তা না হলে আওয়াজ আরও কমান। অনেক সময় মানুষ একে অপরের সাথে হেডফোনও আদান-প্রদান করে, এই ব্যাকটেরিয়া ইয়ারফোন স্পঞ্জের মাধ্যমে একজন থেকে আরেকজনের কাছে চলে যায়, এমন পরিস্থিতিতে কানে সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে। দীর্ঘক্ষণ কানে ইয়ারফোন রাখলে কানের স্নায়ুর ওপর চাপ পড়ে, শিরা ফুলে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। কম্পনের কারণে শ্রবণ কোষ তাদের সংবেদনশীলতা হারায়।
তবে কত সময় টানা গান শোনা যায়?
বিশেষজ্ঞদের মতে, এক্কেবারে হাই ভলিউম হলে ৩০ মিনিটের বেশি শোনা উচিত নয়। এর চেয়ে বেশি সময় আওয়াজের ধাক্কা কানের পর্দার জন্য সহ্য করা সম্ভব হবে না। ইয়ারবাডে ভলিউমের মাত্রা ৬০ শতাংশের বেশি হওয়া কখনই উচিত নয়। এতে কানের পর্দার উপর মারাত্মক চাপ পড়ে। ফলে যদি মনে করেন টানা দুই ঘন্টা সিনেমা দেখবেন ইয়ারবাড বা হেডফোন কানে দিয়ে তা হলে ৩০ মিনিট শুনে আবারও ১০ মিনিটের জন্য কান থেকে খুলে রাখুন। তারপরে আবার ব্যবহার করুন। তা হলে ক্ষতি কিছুটা হলেও কম হবে।
সম্ভব হলে অ্যাক্টিভ নয়েজ ক্যান্সেলেশন সহ ইয়ারবাড বা হেডফোন ব্যবহার করুন। এই ধরনের হাডফোন বাইরের আওয়াজকে ব্লক করে। ফলে আপনি যদি আওয়াজ কম দিলেও একদম স্পষ্ট শুনতে পাবেন। এর সঙ্গে সঙ্গে যা-ই ইয়ারফোন ব্যবহার করবেন না কেন, সেটিকে পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করুন। বাড়িতেই খুব সহজে পরিষ্কার করা যায়। সম্ভব হলে ইয়ারবাডের পরিবর্তে ওভার-দ্য-ইয়ার হেডফোন ব্যবহার করুন। এগুলি কানের ভিতরে ঢোকে না। ফলে অন্য সব ইয়ারফোনের থেকে তুলনায় অনেক নিরাপদ। আর চার্জ করার সময় ভুলেও কানে ইয়ারফোন লাগাবেন না। বেশিরভাগ হেডফোন এবং ইয়ারফোনে ৩.৫ মিমি জ্যাক থাকে। কিছু হেডফোনের ইউএসবিতে টাইপ-সি কানেকশন থাকে। ইউএসবি-টাইপ-সি হেডফোনগুলি চার্জ করার সময় ব্যবহার করা যায় না। কিন্তু অনেক ব্লুটুথ হেডফোন আছে, যেগুলি চার্জের সময় ব্যবহার করা যায়। কিন্তু তা কোনও ভাবেই করবেন না।