বর্তমান যুগে শরীরচর্চা, সঠিক গঠনের শরীর এবং সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব তরুণ প্রজন্মকে প্রোটিন সাপ্লিমেন্টের দিকে আরও বেশি করে আকৃষ্ট করছে। বিশেষ করে যারা জিমে যান বা পেশী গঠন করতে আগ্রহী, তাদের মধ্যে প্রোটিন পাউডার খাওয়ার প্রবণতা দ্রুত বাড়ছে। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, শরীর গঠনের তাগিদে অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণের ফলে কিডনির মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
কিডনির ক্ষতির আশঙ্কা বাড়ছে তরুণদের মধ্যে
শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ শিবরঞ্জনী সন্তোষ সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে জানান, অনেক তরুণের রক্তে ক্রিয়েটিনিন মাত্রা অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাচ্ছে। এই মাত্রা প্রতি ডেসিলিটারে ১.৪১ বা ১.৫ মিলিগ্রাম পর্যন্ত পৌঁছচ্ছে, যা কিডনির উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করছে। এতে কিডনি স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারছে না। অনেকেই প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি প্রোটিন খাচ্ছেন, যার মধ্যে প্রোটিন পাউডারও রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কতটা প্রোটিন যথেষ্ট?
মুম্বাইয়ের জেন মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালের সিনিয়র নেফ্রোলজিস্ট ডাঃ বিশ্বনাথ বিল্লা জানাচ্ছেন, প্রতিদিন একজন সক্রিয় ব্যক্তির শরীরের প্রতি কেজি ওজনের জন্য ১.৮ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণই যথেষ্ট। এর বেশি হলে তা কিডনির ক্ষতির কারণ হতে পারে। সিরাম ক্রিয়েটিনিন মাত্রা ১.২ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার অতিক্রম করলেই কিডনি পরীক্ষার প্রয়োজন পড়ে।
হাইড্রেশন ও সুষম খাদ্যই বাঁচাতে পারে
ডাঃ বিল্লা আরও বলেন, অনেক সময় যথেষ্ট জল না খাওয়াও কিডনির সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তোলে। তাই উচ্চ প্রোটিন গ্রহণকারীদের নিয়মিত জলপান, সুষম খাদ্যগ্রহণ ও কিডনির পরীক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি।
প্রোটিন পাউডার নয়, প্রাকৃতিক উৎসে মনোযোগ দিন
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, তরুণদের প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে প্রোটিন পাউডারের চেয়ে প্রাকৃতিক উৎসে জোর দেওয়া উচিত। ডিম, মাছ, দুধ, দই, মাংস, বাদাম, ছোলা, ডাল, পনির, ব্রকলি, পালং শাক এবং মাশরুম—এগুলো প্রোটিনের প্রাকৃতিক উৎস, যা শরীরের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী সহজেই খাওয়া যায়।
চিকিৎসকদের পরামর্শ:
শরীরচর্চা করলেও অতিরিক্ত কিছু নয়। প্রোটিন খাওয়ার আগে শরীরের চাহিদা বুঝে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই খাদ্যতালিকা তৈরি করা উচিত। অতিরিক্ত সচেতনতা ভবিষ্যতের কিডনি সমস্যা থেকে আপনাকে রক্ষা করতে পারে।