মানুষের সামনে নিজের বক্তব্য পেশ করা সবার পক্ষে সহজ নয়। অনেক লোক এমন রয়েছেন যারা নিজেদের মনের ভাব প্রকাশ করতে গিয়ে ঘাবড়ে যান। সামনে যদি লোকের সংখ্যা বেশি থাকে, তাহলে তাঁদের উদ্বেগের পরিমাণও বেড়ে যায়।যদিও কিছু লোক এমন রয়েছেন, যাঁরা খুব সহজেই নিজের বক্তব্য হাজার হাজার লোকের সামনে তুলে ধরতে পারেন, কিন্তু স্কুল-কলেজ হোক বা চাকরি। নিজেকে জাহির করা, নিজের কথা সঠিকভাবে প্রেজেন্ট করা এটা একটা আলাদা বিষয় এবং এতে মুন্সিয়ানার প্রয়োজন। নিজেকে সঠিকভাবে প্রেজেন্ট করা বা সঠিকভাবে নিজের বক্তব্য তুলে ধরতে জানলে আমাদের জীবনকে তা অনেক উচ্চতা পর্যন্ত পৌঁছে দিতে পারে। বেশ কিছু জায়গাতে নিজের কথা সঠিকভাবে আরেকজনের কাছে পৌঁছে দেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। যা ছাড়া আপনার কাজ চলতে পারে না। আসুন আজকে আমরা আলোচনা করে জেনে নিই যে নিজের বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে হওয়া সমস্যা থেকে কিভাবে বাঁচা সম্ভব?
আরও পড়ুনঃ ঘামের দুর্গন্ধ দূর হয় লেবু আর নিমে, Deodorant লাগবে না, কীভাবে?
১. স্টাডি করুন যে কোনও বিষয়ে বলার আগে আপনাকে ওই বিষয় সম্পর্কে সঠিক এবং বিস্তারিত তথ্য জানা জরুরি। বিনা তথ্যে আপনি কোনও বিষয় আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে পারবেন না। এছাড়া আপনার বিষয়ের সঙ্গে জড়িত সওয়াল-জবাব করা হলে আপনি তাহলে খুব সহজেই তা উত্তর দিতে পারবেন।
২. নিজেদের লোকের সামনে প্রথমে বলার অভ্যাস করুন বিষয় সম্পর্কে ধারণা করে নেওয়ার পর আপনি নিজেদের লোকের সামনে প্রথমে বলতে পারেন। তাতে আপনার আত্মবিশ্বাস ধীরে ধীরে বাড়বে। এটিকে প্র্যাকটিস হিসেবে নিতে হবে। প্রথমে একজন-দুজনের সামনে বলে তারপর শ্রোতার সংখ্যা বাড়লে আপনার অসুবিধে হবে না। তারা আপনার ভুল ত্রুটিগুলিও আপনাকে ধরিয়ে দিতে পারবেন।
৩. আয়নার সামনে বলুন প্র্যাকটিসের জন্য সবচেয়ে ভাল পদ্ধতি হলো আয়নার সামনে নিজেকে প্রস্তুত করে বলার অভ্যাস। এটি অত্যন্ত কার্যকর এবং অনেক বড় বড় ব্যক্তিরা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বক্তব্য পেশ করার অভ্যাস করেন। নিজেকে ফেস করাও কনফিডেন্স বৃদ্ধি করে।
৪. রেকর্ড করে শুনুন নিজের বক্তব্য একবার বলার পর মোবাইল বা রেকর্ডারে রেকর্ড করে সেটিকে শুনুন। আপনার কতটা ভালো লাগছে সে বিষয়টি যাচাই করুন। কোন কোন জায়গায় খামতি রয়েছে সে জায়গাগুলি আপনি শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করুন।
৫. নিজের পছন্দের বিষয় বাছাই করুন লোকের সঙ্গে কথা বলার আগে আপনি কিছু সম্ভাব্য প্রশ্ন এবং আলোচনা নিজের মাথায় ঢুকিয়ে নিন এবং বিষয়গুলি সম্পর্কে একটা সম্যক ধারণা করুন। সেই বিষয়ে একটু ভাল করে স্টাডি করুন এবং নিজের পছন্দের বিষয়ের সঙ্গে সেগুলোকে সম্পৃক্ত করে সম্ভাব্য প্রশ্নের উত্তর তৈরি করুন। যে সমস্ত প্রশ্নে আপনি ঘাবড়ে যেতে পারেন বলে মনে হয় সে সমস্ত টপিকগুলিকে এড়িয়ে যাওয়া শিখুন।
আরও পড়ুনঃ ধস এড়িয়ে কীভাবে পৌঁছবেন দার্জিলিং-গ্যাংটক
৬. দর্শকদের দিকে মনোযোগ দেবেন না প্রেজেন্টেশন বা স্পিচের সময় কারও দিকে পার্টিকুলার মনোযোগ দেবেন না। শূন্য দৃষ্টিতে তাকান। নিজের ফোকাস নিজের বিষয়ের উপর রাখুন। আমি কি বলছি, কতটা সামনের জনকে বোঝাতে পারছি, আমাদের এক্সপ্রেশন কেমন রয়েছে, আমাদের মনোযোগ এর উপরে থাকতে হবে।
৭. কোনও বিষয়ে অতিরিক্ত বলবেন না ইন্টারভিউ হোক বা পাবলিক স্পিচ, যে কোনও বিষয়ে যে বিষয়ে আপনার দখল কম সে বিষয়টিতে বাড়তি বলতে যাবেন না। যত বেশি বলতে যাবেন তত সেটি ছড়িয়ে ফেলার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের বক্তব্য শুনি। কারও কারও বক্তব্য অত্যন্ত ভাল, যুক্তিপূর্ণ এবং হৃদয়গ্রাহী হয়। আবার কেউ কেউ বিষয় সম্পর্কে না জেনে বলতে গিয়ে ভুল করে ফেলেন। যা হাসির খোরাকে পরিণত হয়। তাই কোনও বিষয়ে না জেনে সে বিষয়ে বাড়তি কথা বলার প্রয়োজন নেই।