মানবদেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ লিভার বা যকৃত। যার কাজ কেবল হজমে সাহায্য করা নয়। এটি রক্ত পরিশোধন, প্রোটিন উৎপাদন, বিষাক্ত পদার্থ অপসারণ এবং বিপাক প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণসহ ৫০০টিরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। কিন্তু এই অঙ্গের সামান্য ক্ষতিও শরীরে বড় ধরনের বিপদের ইঙ্গিত দিতে পারে। চিকিৎসকরা বলছেন, লিভারের সমস্যার প্রাথমিক লক্ষণ যদি চিহ্নিত করা যায়, তবে সময়মতো চিকিৎসা সম্ভব।
আমেরিকার স্বাস্থ্য সংস্থা ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক জানিয়েছে, প্রস্রাব, মল ও ত্বকের কিছু পরিবর্তন লিভারের ক্ষতির প্রাথমিক ইঙ্গিত হতে পারে। নিচে সেই লক্ষণগুলি তুলে ধরা হলো-
১. প্রস্রাবের রঙ পরিবর্তন:
যদি প্রস্রাবের রঙ ক্রমাগত গাঢ় বাদামী, কালচে বা কোলা রঙের দেখা যায়, তা লিভারের ক্ষতির লক্ষণ হতে পারে। এটি সাধারণত বিলিরুবিন নামক বর্জ্য পদার্থের কারণে ঘটে, যা লিভার ঠিকভাবে প্রক্রিয়াজাত করতে না পারলে রক্তে জমে যায় এবং প্রস্রাবের রঙ গাঢ় করে তোলে। এমন পরিস্থিতি দেখা দিলে অবিলম্বে লিভার ফাংশন টেস্ট করা উচিত।
২. মলের রঙের পরিবর্তন:
স্বাভাবিকভাবে লিভার থেকে নিঃসৃত পিত্তই মলের বাদামী রঙের জন্য দায়ী। যদি মলের রঙ হালকা, হলুদ বা মাটির মতো ফ্যাকাশে হয়ে যায়, তাহলে তা পিত্ত নিঃসরণে সমস্যা বা লিভারের দুর্বলতার ইঙ্গিত দেয়। এটি হেপাটাইটিস, ফ্যাটি লিভার বা পিত্তনালীর বাধা-র মতো সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।
৩. ত্বকে ক্রমাগত চুলকানি:
যদি ত্বকে কোনও দৃশ্যমান ফুসকুড়ি না থেকেও চুলকানি হয়, বিশেষত হাত, পা বা তালুতে, তাহলে সেটিও লিভারের সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। লিভার সঠিকভাবে কাজ না করলে রক্তে পিত্তলবণ জমে ত্বকের নিচে পৌঁছে জ্বালা সৃষ্টি করে, ফলে চুলকানি দেখা দেয়।
চিকিৎসকরা বলছেন, এই ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে তা উপেক্ষা করা বিপজ্জনক। দ্রুত লিভার ফাংশন টেস্ট (LFT) ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নেওয়া উচিত।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, সুষম খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত জলপান, অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকা এবং নিয়মিত ব্যায়াম লিভারকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।