আমাদের অনেকেরই দিন শুরু হয় চা কিংবা কফির কাপে চুমুক দিয়ে। কিন্তু আমাদের মধ্যে আবার অনেকেই আছেন যারা সারাদিনই একের পর এক কফি কিংবা চায়ের কাপে চুমুক দিতে থাকেন। এই দুই পানীয় আমাদের জন্য উপকারী, তবে কিছু সময়ে এগুলো পান না করাই ভালো। অনুপযুক্ত সময়ে চা এবং কফি পান করার ফলে হজম এবং পুষ্টির শোষণ সম্পর্কিত বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। কখন আপনার এই পানীয়গুলো এড়ানো উচিত?
চা বা কফি কতটা নিরাপদ?
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (ICMR) অনুসারে, চা এবং কফি দুটোতেই ক্যাফেইন থাকে, যা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে উদ্দীপিত করে এবং নির্ভরশীলতার দিকে পরিচালিত করে। প্রস্তাবিত দৈনিক সীমা ৩০০ মিলিগ্রাম ক্যাফেইনের বেশি নয়। ১৫০ মিলি কাপের কফিতে ৮০-১২০ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন থাকে, ইনস্ট্যান্ট কফিতে ৫০-৬৫ মিলিগ্রাম এবং চায়ে ৩০-৬৫ মিলিগ্রাম থাকে।
কখন চা বা কফি এড়িয়ে চলা উচিত?
তবে সব সময় চা-কফি খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। চা ও কফি খাওয়ার নির্দিষ্ট সময় আছে। সেটা মেনে চললেই সুস্থ থাকবেন।
সকালে খালি পেটে
ঘুম থেকে ওঠার পর যখন অনেকেই তাদের দিন শুরু করেন গরম এক কাপ চা বা কফি দিয়ে। সেটা কিন্তু শরীরের জন্য ভাল নয়। খালি পেটে ক্যাফেইন গ্রহণ করলে কর্টিসল উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটতে পারে, এটি প্রাথমিক স্ট্রেস হরমোন, যার ফলে দিন শুরু হওয়ার আগেই আপনি উদ্বিগ্ন এবং ভারসাম্যহীন বোধ করতে পারেন।
খাবারের সঙ্গে
আপনি কি খাবার বা প্রাতঃরাশের সঙ্গে আপনার চা বা কফি উপভোগ করেন? সেই অভ্যাসটি বাদ দেওয়ার সময় এসেছে। চা এবং কফি উভয়ই অম্লীয় এবং হজমে বাধা দিতে পারে। আপনি যখন চায়ের সঙ্গে প্রোটিন খান, তখন অম্লতা প্রোটিনকে শক্ত করে, এটি হজম করা কঠিন করে তোলে। খাবারের ঠিক পরে চা কিংবা কফি খাওয়া হলে তা আয়রন শোষণে হস্তক্ষেপ করতে পারে। হজম এবং পুষ্টি গ্রহণকে অনুকূল করতে, খাওয়ার অন্তত এক ঘণ্টা আগে এবং পরে চা এবং কফি এড়িয়ে চলুন।
বিকেল ৪টের পর
যারা সন্ধ্যায় চা কিংবা কফি পান করেন ক্যাফেইন তাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে। কমপক্ষে ১০ ঘণ্টা আগে এবং তা সম্ভব না হলে অন্তত ৬ ঘণ্টা আগে ক্যাফেইন এড়ানোর পরামর্শ দেন। বিকেল ৪টের পর ক্যাফেইন থেকে দূরে থাকার পরামর্শ অনেকেই দিয়ে থাকেন। এই অভ্যাস আপনার ঘুমের গুণমান উন্নত করতে, লিভারের ডিটক্সিফিকেশনকে সহায়তা করতে, কর্টিসলের মাত্রা কমাতে এবং ভালো হজমশক্তি বাড়াতে পারে।