বয়স থেমে থাকে না। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষ যেতে থাকে বার্ধক্যের দিকে। যৌবনে যে কাজ করা যেত, তা আর হয়ে ওঠে না। শরীরও জবাব দিতে থাকে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে বাসা বাঁধে নানা অসুখ। ধীরে ধীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নারী-পুরুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যেও বিবিধ পরিবর্তন আসে। ৩৫-৪০ বছর পার হওয়ার পর হরমোনের পরিবর্তন শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য প্রভাবিত হয়। খাওয়াদাওয়ার অনিয়ম ও তেল-মশলাদার খাবার স্বাস্থ্যকে বিপদে ফেলে। যৌবনে সেই সব খাবার হজম হলেও বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা শরীরকে স্থূলতার দিকে নিয়ে যায়। তাই ৩৫ বছর পার হলেই সতর্ক থাকতে হবে নারী-পুরুষকে। চলুন জেনে নেওয়া যাক ৩৫ বছরের পর কী কী রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি-
কিডনিতে পাথর- কিডনিতে পাথর হতে পারে ৩৫ বছর বয়সের পর। মূত্রনালিতে জমে খনিজ। তা খুবই বেদনাদায়ক অবস্থা। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। পুরুষদের কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বেশি। তবে মহিলাদেরও এখন কিডনিতে পাথর হচ্ছে। এই অসুখের লক্ষণগুলি হল- তীব্র পিঠে ব্যথা, প্রস্রাবে রক্ত, জ্বর ও ঠান্ডা, বমি, প্রস্রাবের দুর্গন্ধ এবং প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া।
বাত- বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নারী-পুরুষের আর্থ্রাইটিস হওয়ার প্রবণতা বেশি। বয়স বাড়লে কমে হাড়ের ঘনত্ব। যা গাঁটে ব্যথা এবং শক্ত হওয়ার কারণ। এছাড়া এই বয়সে উল্টো-পাল্টা খাওয়ার জন্য শরীরে জমে অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড। অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড পরিশ্রুত করতে পারে না কিডনি। তখন তা স্ফটিক আকারে জমে গাঁটে গাঁটে। তাই ৩৫ বছরের পর অ্যালকোহল, ধূমপান, রেড মিট ছেড়ে দেওয়াই শ্রেয়।
আরও পড়ুন- রাতে ঘুমোনোর আগে খান এই ঘরোয়া পানীয়, দ্রুত কমবে ভুঁড়ি
ডায়াবেটিস- ৩৫-৪০ বছর বয়সে খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাত্রা সঠিক না হলে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে পারে। ডায়াবেটিস হলে শুরুতেই সতর্ক হতে হবে। ডায়াবেটিস হলে যে লক্ষণগুলি দেখা দেয়- অত্যাধিক ক্লান্তি-তৃষ্ণা, ঘনঘন প্রস্রাব, ঝাপসা দৃষ্টিশক্তি, ওজন হ্রাস, মাড়ির সমস্যা।
হাড়ের ক্ষয়- ৩৫-৪০ বছর বয়স থেকে কমতে থাকে হাড়ের ঘনত্ব। হরমোন পরিবর্তনের কারণে শরীরের গঠন ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়। বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে হাড়ের ক্ষয় বেশি। তাই ৩৫ বছর বয়সের পর থেকে মহিলাদের উচিত ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া। এছাড়া পরিমিত ভিটামিন ডি নেওয়া। দীর্ঘস্থায়ী গাঁটে ব্যথা ভঙ্গুর হাড়ের লক্ষণ।
উচ্চ রক্তচাপ- হাই ব্লাড প্রেসার একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা। যা শরীরের উপর প্রাণঘাতী প্রভাব ফেলে। উচ্চ রক্তচাপ হার্ট অ্যাটাক, কিডনি ফেইলিওর এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। রক্তচাপের জন্য দায়ী খারাপ খাদ্যাভ্যাস। তাই ৩৫ পেরোলেই নজর দিন ডায়েটে। পরিমিত আহার করুন। পর্যাপ্ত ঘুমোন। অ্যালকোহল, ধূমপান ও তেলমশালাদার খাবার খাওয়া ছাড়ুন।