থাইরয়েডের সমস্যায় বর্তমানে অনেকেই ভুগে থাকেন। থাইরয়েড একটি প্রজাপতি আকৃতির গ্রন্থি যা ঘাড়ের সামনের দিকে থাকে। এই গ্রন্থিটি T3 এবং T4 হরমোন নিঃসরণ করে। শরীরে এই হরমোনগুলো বিপাকক্রিয়াকে অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করে। সাহায্য করে বৃদ্ধিতে। আবার কোষ মেরামতিতেও সহায়ক এই হরমোনগুলি। কোনও কারণে এই হরমোন ক্ষরণ মাত্রায় তারতম্য হলেই সমস্যা। থাইরয়েড দুই রকম। হাইপোথাইরয়েড (hypothyroidism ), হাইপারথাইরয়েড (hyperthyroidism) । দেখা গিয়েছে থাইরয়েডে আক্রান্ত বেশিরভাগই হাইপোথাইরয়েডিজমে আক্রান্ত।
থাইরয়েডে আক্রান্ত হলে সবসময় ক্লান্তি লাগা, কোষ্ঠকাঠিন্য, ত্বক শুষ্ক বোধ হওয়া, ওজন বেড়ে যাওয়া, চুল পড়ে যাওয়া, নখ ক্ষয়ে যাওয়া, মানসিকভাবে ভেঙে পড়া, হৃদস্পন্দন ধীর হয়ে আসা , মেনস্ট্রুয়েশন সংক্রান্ত সমস্যা, মেজাজ ক্ষণে ক্ষণে পরিবর্তন হওয়ার মতো সমস্যা হয়। এই রোগের চিকিৎসায় যেমন ওষুধও খেতে হয় তেমনি রোজকার খাবার থেকে কিছু খাবারও বাদ দিতে হয়।
কী কী খাবার খাবেন না
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য চেষ্টা করতে হবে ফ্যাটজাতীয় খাবার না খেয়ে। এছড়াও ব্রকলি, ফুলকপি, সয়াবিন, বাঁধাকপি, রাঙা আলু, পিচ এগুলো খাওয়া চলবে না। আয়োডাইজড নুন খেতে হবে এবং জিঙ্ক-রিচ ডায়েট খেতে হবে।
এড়িয়ে চলুন এইগুলো
গ্লুটেন ফ্রি ডায়েট করতে হবে। এড়িয়ে চলতে হবে ময়দা, আটা, পাঁউরুটি, নুডলস ইত্যাদি। বদলে খাওয়া যায়, কুইনোয়া কিংবা ব্রাউন রাইস। এছাড়া অনেকরকম ফল ও সবজি খেতে পারেন। যেমন, কর্ন, স্কোয়াশ, গাজর, বিনস, ফুলকপি, মিষ্টি আলু, ভুট্টা,মটরশুঁটি, সবুজ শাকসবজি ইত্যাদি। মাছ, চিকেন, টোফু , ডাল, বাদাম, এগুলোও চলতে পারে। থাইরয়েড হলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় ভিটামিন ডির ঘাটতি, ম্যাগনেশিয়াম ও সিলিনিয়ামের ঘাটতি হতে পারে। ডায়েটে যাতে এই জিনিসগুলি থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
থাইরয়েডের উপসর্গ
থাইরয়েড হলেই মোটা হয়ে যায় মানুষ, শুধু তাই কিন্তু তা নয়। থাইরয়েডের জন্য মুখ বা হাত পায়ে ফোলাভাব আসতে পারে, কিন্তু কেউ অতিরিক্ত মোটা হয়ে গেলে জানতে হবে, সেই ওবেসিটির কারণ আলাদা। হাইপোথাইরয়েড থেকে সেরে ওঠা সম্ভব নয়। ওষুধের মাধ্যমে হরমোন রিপ্লেসমেন্টই এর একমাত্র সমাধান। অবশ্য হাইপার থাইরয়েডিজম সেরে যায়। হাইপার থাইরয়েডিজম চিকিৎসা না করে ফেলে রাখলে হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে মৃত্যুও ঘটতে পারে।