প্রতি বছর ২৫ মে দিনটি বিশ্ব থাইরয়েড দিবস (World Thyroid Day) হিসেবে সারা বিশ্বে উদযাপিত হয়। এই দিনটি পালনের উদ্দেশ্য হল থাইরয়েড সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা। থাইরয়েড গ্রন্থি সঠিকভাবে কাজ করতে না পারার কারণে এই সমস্যা হয়। বিশেষ করে ৬০ বছরের বেশি বয়সী মহিলাদের মধ্যে থাইরয়েডের সমস্যা বেশি দেখা যায়।
থাইরয়েড হল একটি প্রজাপতি আকৃতির গ্রন্থি যা গলার সামনে দিকে অবস্থিত। এটি একটি হরমোন তৈরি করে যার সাহায্যে মেটাবলিজম নিয়ন্ত্রণে থাকে। হরমোনের মাত্রা খুব কম বা খুব বেশি হয়ে গেলে শরীরে নানা ধরনের উপসর্গ (Thyroid Symptoms) দেখা দিতে শুরু করে।
অত্যধিক ওজন বৃদ্ধি বা হ্রাস - ওজনের পরিবর্তন থাইরয়েড ডিসঅর্ডারের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণগুলির মধ্যে একটি। ওজন বৃদ্ধি থাইরয়েড হরমোনের হ্রাসকে নির্দেশ করে, যাকে হাইপোথাইরয়েডিজম বলা হয়। অন্যদিকে, থাইরয়েড যদি শরীরে অনেক বেশি হরমোন নিঃসরণ করে, তাহলে ওজন অনেকটাই কমতে শুরু করে। একে হাইপারথাইরয়েডিজম বলে। হাইপোথাইরয়েডিজম বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে পাওয়া যায়।
ঘাড় ফোলা - ঘাড় ফুলে যাওয়া বা এর বৃদ্ধি থাইরয়েড ডিজঅর্ডারের স্পষ্ট লক্ষণ। এতে গলায় গলগন্ড তৈরি হয়। এটি হাইপোথাইরয়েডিজম বা হাইপারথাইরয়েডিজম উভয় ক্ষেত্রেই ঘটতে পারে। অনেক সময় থাইরয়েড ক্যান্সারের কারণেও ঘাড় ফুলে যেতে পারে।
হৃদস্পন্দনের পরিবর্তন - থাইরয়েড হরমোন শরীরের প্রায় প্রতিটি অঙ্গকে প্রভাবিত করে। এই কারণে, হৃদস্পন্দনেও পরিবর্তন হয়। হাইপোথাইরয়েডিজম আক্রান্তদের হৃদস্পন্দন স্বাভাবিকের চেয়ে ধীর হয়ে যায়। আবার হাইপারথাইরয়েডিজমের কারণে এই গতি দ্রুত হয়ে যায়। এটি রক্তচাপও বাড়ায়।
এনার্জি এবং মেজাজের পরিবর্তন - থাইরয়েড ডিসঅর্ডার এনার্জি স্তর এবং মেজাজের উপর দারুণ প্রভাব ফেলে। হাইপোথাইরয়েডিজমে মানুষ ক্লান্ত, অলস এবং বিষণ্ণ বোধ করেন। আবার হাইপারথাইরয়েডিজমের কারণে উদ্বেগ, ঘুমের সমস্যা, অস্থিরতা এবং বিরক্তি তৈরি হয়।
চুল পড়া - চুল পড়া থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্যহীনতার আরও একটি লক্ষণ। হাইপোথাইরয়েডিজম এবং হাইপারথাইরয়েডিজম উভয় ক্ষেত্রেই এই সমস্যা অনুভূত হতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, থাইরয়েড রোগের চিকিৎসার পরে চুল আবার বৃদ্ধি পায়।
খুব ঠান্ডা বা গরম অনুভব করা - থাইরয়েড ডিসঅর্ডার শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতাকে ব্যাহত করে। হাইপোথাইরয়েডিজমে আক্রান্ত ব্যক্তিরা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঠান্ডা অনুভব করেন। আবার হাইপারথাইরয়েডিজমে আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রচুর ঘাম হয়।
অন্যান্য উপসর্গ - শুষ্ক ত্বক, নখ ভাঙা, হাত-পা অসাড় হয়ে যাওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং অস্বাভাবিক পিরিয়ডের মতো অন্যান্য উপসর্গও হাইপোথাইরয়েডিজমে অনুভূত হতে পারে। অন্যদিকে, হাইপারথাইরয়েডিজমের অন্যান্য লক্ষণগুলি হল পেশী দুর্বলতা বা হাত কাঁপা, চোখের সমস্যা, ডায়রিয়া এবং অনিয়মিত পিরিয়ড।
আরও পড়ুন - ব্যারাকপুরে সোনার দোকানের ডাকাতিতে এখনও অধরা দুষ্কৃতীরা, কোনদিকে পালাল ডাকাতরা?