সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে অনেকেরই পায়ে ব্যথা হয়ে থাকে বা অনেকে হাতের আঙুল ভাঁজ করতে পারেন না। অনেকের আবার অস্থিসন্ধিগুলো ফুলে যায়। বিশেষজ্ঞরা একে ইউরিক অ্যাসিডের লক্ষণ বলে চিহ্নিত করেন। ব্লাডপ্রেসার, ডায়াবিটিসের মতো এখন ঘরে ঘরে ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা রয়েছে। রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে খাদ্যতালিকা থেকে বাদ পড়ে যায় অনেক কিছুই। কিন্তু ইউরিক অ্যাসিড থাকলে ঠিক কী কী ডায়েট অনুসরণ করতে হয় তারই সন্ধান দিলেন ক্লিনিকাল ডায়েটিশিয়ান অর্পিতা রায় চৌধুরী (Arpita Roy Chowdhury)।
কোন প্রোটিন জাতীয় খাবার খাওয়া যায়
অর্পিতা এ বিষয়ে জানান যে যাঁদের ইউরিক অ্যাসিড রয়েছে তাঁদের লো পিউরিন ডায়েট দেওয়া উচিত। সাম্প্রতিক গবেষণায়, যাঁদের ইউরিক অ্যাসিড রয়েছে তাঁদের টোটাল প্রোটিন ইনটেকটাকে দেখা হয়। অর্থাৎ সারাদিনে সে কতটা প্রোটিন খাচ্ছে সেটা দেখা হয়। সেক্ষেত্রে ফার্স্ট ক্লাস প্রোটিন সেকেন্ড ক্লাস প্রোটিন সবটাই উনি খেতে পারেন।
আরও পড়ুন: এই ধরনের মাংস হার্টের জন্য খুবই বিপজ্জনক, আজই সাবধান হোন
কী কী খেতে পারবেন না
ইউরিক অ্যাসিড যাঁদের রয়েছেন তাঁরা কফি, কোকোয়া পাউডার, চকোলেট এগুলি একদম খাবেন না বলেই জানান অর্পিতা রায় চৌধুরী। কারণ এগুলিতে হাই ইন পিউরিন হয়। আর প্রোটিনটাকে মেপে যদি দেখা যায় যে অনেকটা প্রোটিন নেওয়া হয়ে গিয়েছে, সেক্ষেত্রে চেষ্টা করা হয় যে হাই ক্লাস প্রোটিনকে রেখে সেকেন্ড ক্লাস প্রোটিন অর্থাৎ ডালকে ডায়েট থেকে সরিয়ে দেওয়া। তবে মাছের ডিম খাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কারণ এটার মধ্যে এমন অনেক উপাদান আছে যা পরে ইউরিক অ্যাসিডে পরিণত হয়। তাই মাছের ডিম বাদে সারাদিনে গোটা একটা ডিম খাওয়া যেতে পারে। এছাড়া মদ, নরম পানীয়, কর্ন সিরাপ, মাংস (রেড মিট) এগুলো তো একেবারেই বন্ধ।
আরও পড়ুন: শুধু ঝাল নয়, পেটের চর্বি গলাতেও দারুণ কাজ দেয় কাঁচা লঙ্কা
গোটা ডিম খাওয়া যেতে পারে
অনেকেরই ধারণা আছে যে ইউরিক অ্যাসিড থাকলে ডিমের কুসুম খাওয়া চলে না। তবে এই প্রচলিত মিথকে ভেঙে দিয়ে অর্পিতা জানান যে ইউরিক অ্যাসিডে ভুক্তভোগী যাঁরা, তাঁরা গোটা দিনে একটা ডিম খেতেই পারেন। এমনকী মুসুর ডালও খাওয়া যেতে পারে। কারণ বীজ জাতীয় কোনও খাবারের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই।
প্রোটিন জাতীয় খাবারের ওপর নিষেধাজ্ঞা
ডায়েটিশিয়ানের মতে, আর কোনও সমস্যা যদি না থাকে তবে একজন ইউরিক অ্যাসিডের রোগী কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট সারাদিনে খেতেই পারেন। ডায়াবেটিক না হলে সাধারণ কার্বোহাইড্রেট সে খেতেই পারে। মাঝারি পরিমাণে ফ্যাট জাতীয় খাবারও খেতে পারেন। ইউরিক অ্যাসিডে প্রধানত প্রোটিন জাতীয় খাবারের ওপরই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
শাক খাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা নেই
অর্পিতা এও জানান যে ইউরিক অ্যাসিডের সঙ্গে যদি পটাশিয়াম থাকে তবে সেক্ষেত্রে কোনও শাকই খাওয়া যায় না। এমনকী ফল খাওয়ার ওপর বাধা-নিষেধ থাকে। তবে এক-একেকটা ব্লাড প্যারামিটার অনুযায়ী ইউরিক অ্যাসিডে কী খাওয়া যেতে পারে তা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু যিনি নিরামিশাষী অর্থাৎ যাঁরা মাছ, মাংস ও ডিম খান না, তাঁদের ক্ষেত্রে সেকেন্ড ক্লাস প্রোটিন বন্ধ করা যায় না। কারণ সারাদিনে প্রোটিন ইনটেক করতেই হয় ইউরিক অ্যাসিডের রোগীকে।