
ভারতীয়দের জন্য স্বাস্থ্যসংক্রান্ত একটি বড় চ্যালেঞ্জ হলো ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি। সম্প্রতি মেট্রোপলিস হেলথকেয়ার লিমিটেডের ৬ বছরের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ভারতীয়দের প্রায় অর্ধেকেরই ভিটামিন ডি-এর অভাব রয়েছে। গবেষণায় ২০১৯ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে ২০.২ মিলিয়নেরও বেশি মানুষের পরীক্ষা অন্তর্ভুক্ত ছিল।
গবেষণার মূল তথ্য
গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় ৪৬.৫% ভারতীয়ের ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি রয়েছে, যেখানে আরও ২৬% পর্যাপ্ত মাত্রা অর্জন করতে পারেনি। বিশেষ করে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ঘাটতি বেশি দেখা গেছে, কারণ তারা দীর্ঘ সময় ঘরের বা অফিসের মধ্যে থাকেন এবং সূর্যের আলো কম পান। কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে প্রায় ৬৬.৯% এই ঘাটতিতে ভুগছে।
লিঙ্গ ও আঞ্চলিক বৈষম্য
লিঙ্গের ভিত্তিতে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি মহিলাদের মধ্যে ৪৬.৯% এবং পুরুষদের মধ্যে ৪৫.৮%। আঞ্চলিকভাবে দক্ষিণ ভারতে ঘাটতির হার সর্বোচ্চ, প্রায় ৫১.৬%। মধ্য ভারত এবং উত্তর ভারতের হার যথাক্রমে ৪৮.১% ও ৪৪.৯%। পশ্চিম ভারতের মানুষ তুলনামূলকভাবে কিছুটা ভালো অবস্থায় (৪২.৯%), আর উত্তর-পূর্ব ভারতের মানুষের মধ্যে ঘাটতি সবচেয়ে কম (৩৬.৯%)।
ঘাটতির কারণ
ভিটামিন ডি-এর ঘাটতির মূল কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে শহুরে জীবনযাত্রা, সীমিত সূর্যের আলো এবং অসম্পূর্ণ খাদ্যাভ্যাস। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শুধু ভৌগোলিক অবস্থান নয়, এসব সামাজিক ও জীবনধারার কারণে ভারতের জনগণ এই ঘাটতিতে ভুগছে।
প্রভাব ও সতর্কতা
ভিটামিন ডি হাড়ের স্বাস্থ্য, পেশী কার্যকারিতা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মেট্রোপলিস হেলথকেয়ার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুরেন্দ্রন চেমেনকোটিল বলেন, 'ভিটামিন ডি-এর অভাব ধীরে ধীরে প্রভাব ফেলে, তবে তা গুরুতর হতে পারে।' প্রধান বিজ্ঞানী কিরণ চাড্ডা বলেন, 'ঘাটতি প্রাথমিকভাবে লক্ষণহীন হতে পারে, তাই নিয়মিত পরীক্ষা জরুরি। ক্যালসিয়াম ও প্যারাথাইরয়েড হরমোনের মাত্রা পরীক্ষা করে সঠিক কারণ নির্ণয় করা যায়।'
সমাধান
ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি কাটাতে বিশেষজ্ঞরা নিয়মিত সূর্যালোক, পুষ্টিকর খাদ্য (যেমন দুধ, ডিম, মাছ) এবং প্রয়োজনে সম্পূরক ভিটামিন গ্রহণের পরামর্শ দেন। নিয়মিত স্ক্রিনিং এবং সচেতন খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে ভারতের জনগণ এই স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে পারে।