দেশজুড়ে অনেকেরই অভ্যাস, সকালে টিফিন মানেই শিঙাড়া আর জিলেপি। মুচমুচে আর মিষ্টি এই খাবারগুলো যেমন মুখের স্বাদ বাড়ায়, তেমনই এগুলো পুষ্টির দিক থেকে মোটেও ভালো নয়। এগুলো ভাজা হয় গভীর তেলে, থাকে প্রচুর ক্যালোরি, চিনি আর অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট। ফলে এগুলিতে ফাইবার বা দরকারি পুষ্টি খুব কম থাকে।
লিভারের উপর প্রভাব
ব্যাঙ্গালোরের স্পর্শ হাসপাতালের এইচপিবি ও লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট বিশেষজ্ঞ ডা. গৌতম কুমার বলেন, “শিঙাড়া আর জিলেপি ভাজা এবং অতিরিক্ত চিনি‑সমৃদ্ধ হওয়ায় এগুলো নিয়মিত খাওয়া শরীরের জন্য ভালো নয়। যদি কেউ একটানা ১৫ দিন খায়, তাতে বড় সমস্যা না হলেও, দীর্ঘ সময় ধরে চালিয়ে গেলে শরীরে ফ্যাটি লিভার, ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স, অতিরিক্ত ওজন এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। অতিরিক্ত তেল ও ট্রান্সফ্যাট স্মৃতিশক্তি কমাতে পারে, হজম ধীর করে দেয় এবং শরীরে ক্লান্তি আনে।”
হৃদপিণ্ডের উপর প্রভাব
দিল্লির শ্রী বালাজি অ্যাকশন মেডিকেল ইনস্টিটিউটের কার্ডিওলজিস্ট ডা. অমর সিংহল বলেন, “অতিরিক্ত শিঙাড়া ও জিলেপি খেলে ওজন বাড়ে এবং কোলেস্টেরল বাড়ে। উদ্ভিজ্জ তেলে ভাজার ফলে ট্রান্সফ্যাট ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট বেড়ে যায়, যা হৃদপিণ্ডের জন্য ক্ষতিকর। এলডিএল (খারাপ) কোলেস্টেরল বাড়ে এবং এইচডিএল (ভাল) কোলেস্টেরল কমে যায়। দীর্ঘমেয়াদে এই অভ্যাস হৃদরোগ, ব্লকেজ, হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।”
১৫ দিন খেলে কী হতে পারে? ডাক্তারদের মতে, মাত্র ১৫ দিনে বড় ক্ষতি না হলেও ওজন বাড়তে শুরু করবে। শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমবে। কোলেস্টেরল বাড়তে পারে। লিভারে চাপ বাড়তে পারে। হৃদপিণ্ডের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করবে।
মাসে একবার স্বাদের জন্য খাওয়া যেতে পারে, তবে প্রতিদিন খাওয়া উচিত নয়। যতটা সম্ভব বাড়িতে কম তেলে বানান অথবা এয়ার ফ্রায়ার ব্যবহার করুন। স্বাদের জন্য স্বাস্থ্যকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবেন না। লিভার আর হৃদপিণ্ডকে দীর্ঘদিন ভালো রাখতে এই অভ্যাস থেকে দূরে থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ।