কোন বিবাহিত মহিলার পক্ষে এটা মেনে নেওয়া মোটেও সহজ নয় যে তার স্বামী অন্য মহিলার প্রেমে পড়েছেন। এই একটি জিনিস তাকে ভেতর থেকে ভেঙে দেয়। সব কিছু ছেড়ে এসে একজন মানুষের সঙ্গে থিতু হওয়ার পর যদি এভাবে প্রতারণার শিকার হন, তাহলে এরপর কী করবেন, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া বেশ কষ্টের।
কোন সন্দেহ নেই যে বর্তমান সময়ে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের ঘটনা খুব বেশি হয়ে গেছে, এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে নিজেকে এই সমস্যা থেকে বের করে আনা যায় তা জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অন্যথায় পরিস্থিতি খুব খারাপ হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন কীভাবে এই ধরনের সম্পর্কগুলোকে আরও ভালোভাবে পরিচালনা করা যায়।
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ক হল ভালবাসা এবং একসঙ্গে থাকার। এই পরিস্থিতিতে আপনার স্বামী অন্য কারো প্রেমে পড়েছেন তা জানতে পারা বেদনাদায়ক। এটি আপনার জন্য কঠিন পরিস্থিতি। কিন্তু এই পরিস্থিতি যতটা কঠিন, ততই গুরুত্বপূর্ণ এটাকে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে পরিচালনা করা। এখানে উল্লেখিত টিপস এমন পরিস্থিতিতে আপনার জন্য সহায়ক হবে।
আপনার আবেগ নিয়ন্ত্রণ করুন
বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন যে এই সমস্যাটির সঙ্গে লড়াই করা যে কোনও মহিলার প্রথমে মনে রাখা উচিত যে তিনি তার ইমোশনকে দমন করবেন না। উপেক্ষা না করে সেই কষ্টকে মেনে নিন। এর কারণে আপনি দু:খ পাওয়া, রেগে যাওয়া বা প্রতারিত বোধ করছেন তা জাস্টিফাই করবেন না। প্রয়োজনে কিছুটা সময় আলাদা থেকে নিজেকে এই সমস্ত ইমোশন প্রসেস করার সুযোগ দিন ।
স্বামীর সঙ্গে খোলাখুলি কথা বলুন
আপনি যদি ১০০% নিশ্চিত হন যে আপনার স্বামী আপনার নয়, অন্য কারো প্রেমে পড়েছেন, তাহলে তার সঙ্গে এটি সম্পর্কে খোলামেলা কথা বলুন। শান্তভাবে তাদের অনুভূতি শেয়ার করার সুযোগ দিন এবং আপনিও আপনার অনুভূতি শেয়ার করুন। যা ঘটেছিল তার পরে আপনি আপনার স্বামীর সঙ্গে শান্তভাবে কথা বলতে নাও চাইতে পারেন, তবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার সঠিক উপায় হল কোনও মিথ্যা ছাড়াই কথোপকথন চালিয়ে যাওয়া। এটির মাধ্যমে আপনারা দুজনেই নিজেদের ভবিষ্যত নিয়ে সহজে এবং আরও ভাল উপায়ে সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হবেন। রাগ ও তিক্ততা আপনাদের দুর্বল হয়ে যাওয়া বিয়েকে ভেঙে দিতে পারে।
পরিবারের কাছ থেকে সাহায্য নিন
বিয়েতে পরিবার বড় ভূমিকা পালন করে। সম্পর্কের মধ্যে আসা প্রতিটি সমস্যা তাদের সাহায্যে সহজেই সমাধান করা যেতে পারে। এমতাবস্থায় স্বামীর সঙ্গে কথা বলার পর এই বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের সামনে রাখুন। এটি আপনাকে এই পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবিলা করবেন সেই বিষয়ে সাহায্য করবে এবং পরিবারের লোকেরা এমনকি আবেগপূর্ণ পরিস্থিতিতেও আপনাকে সামলাতে সক্ষম হবেন।
পেশাদারদের সাহায্য নিতে পারেন
আপনি যদি মনে করেন যে পরিবারের সদস্যরা পরিস্থিতি সঠিকভাবে পরিচালনা করতে সক্ষম হবেন না, তাগলে পেশাদারদের সাহায্য নিন। এটি প্রায়শই ঘটে যে আপনি যখন দুঃখ এবং রাগের মধ্যে থাকেন, কখনও কখনও সঠিক পথা বোঝা যায় না। এই ধরনের পরিস্থিতিতে, একজন রিলেশনশিপ এক্সপার্ট বা একজন ব্যক্তি যিনি আপনার বিষয়ে আবেগগতভাবে জড়িত নন, আপনাকে ভাল পরামর্শ দিতে পারেন। এছাড়াও আপনি তার কাছে নিজেকে প্রকাশ করার জন্য একটি নিরাপদ জায়গা পাবেন।
আপনার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে ভাল করে চিন্তা করুন
অনেক সময় বিয়ের পর নানা ধরনের চাপের মুখে পরকীয়ার পরও স্বামীকে মাফ করে দেন মেয়েরা। তারা সম্পর্ককে দ্বিতীয় সুযোগ দেন। তবে এই দ্বিতীয় সুযোগ কবে তৃতীয় ও চতুর্থ হবে সে বিষয়ে কিছু বলা যায় না। তাই সবসময় আপনার সিদ্ধান্ত ভালভাবে বিবেচনা করুন। এমনকি যদি আপনি আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নেন, আবারও চিন্তা করুন। মনে রাখবেন, এটি আপনার উভয়ের উপর নির্ভর করবে যে আপনি শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে আপনার স্বামী এবং আপনি কী চান সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা গুরুত্বপূর্ণ। তাই আলোচনা করুন, সিদ্ধান্ত নিন এবং আপনার যদি জীবনে এগিয়ে যেতে হয় তবে এগিয়ে যান। সম্পর্কে একতরফা প্রেম থাকলে তা পরবর্তীতে বোঝা হয়ে যায়।