গরমের সময়ে ডাল-ভাত সঙ্গে আচার, অথবা পান্তাভাত সঙ্গে আচার। কে না ভালোবাসে? গোটা দেশের বেশিরভাগ অংশেই আচারের প্রচলন রয়েছে। উত্তর ভারত থেকে দক্ষিণ ভারত। গরমের সময়ে এ বস্তুটি পাতে না হলে যেন পাত সম্পূর্ণ হয় না। আপনি জম্মু কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারীকা, পশ্চিমবাংলা থেকে রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ থেকে গোয়া, যেখানে খুশি চলে যান, নানা ধরনের, নানা রকমের আচার চাইলেই পাবেন। এ ছাড়া বহুজাতিক কোম্পানিগুলির প্যাকেজড এবং বডলট আচার রয়েছে। কিন্তু আপনি কী জানেন? গরমের সময়ে রোজ আচার খেলে আপনি স্বাস্থ্যের বারোটা বাজিয়ে ফেলতে পারেন। আচারের পরিমিত ব্যবহার না করতে পারলে কপালে নাচছে ঘোর বিপদ।
বেশি আচার খাওয়ার ক্ষতি
১. লবণের মাত্রা বেশি হওয়ায় শরীরকে ঝাঁঝরা করে দেয়।
লবণ বেশি খাওয়া আমাদের শরীরের পক্ষে ক্ষতি আমরা জানি। কিন্তু আচারের টক-মিষ্টি স্বাদের মধ্যে মিশে থাকা অতিরিক্ত লবণ আমরা ধরতেও পারি না এবং এতে লবণ বেশি আছে বলে মনে করি না। তাই দেদার আচার খাই কিন্তু আচারে থাকা এই লবণ আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত ভয়ঙ্কর। বেশি লবণ খেলে হাইপারটেনশন এবং এর সঙ্গে জড়িত রোগ-ব্যাধির বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এ ছাড়া শরীরে লবণের মাত্রা বেড়ে গেলে ব্যথা অনুভব হয়। শরীরে পুরনো ব্যথাগুলি চাগাড় দিয়ে ওঠে। এটি হাইপারটেনশনের প্রবলেম তৈরি করে। আচার লম্বা সময় পর্যন্ত ঠিক রাখার জন্য, সে কারণে এর মধ্যে লবণ বেশি মাত্রায় ব্যবহার করা হয়। লবণ প্রিজারভেটিভের কাজ করে, অন্যদিকে শরীরকে ঝগড়া করে দিতে পারে।
২. তেলের আধিক্য শরীরের মারাত্মক ক্ষতি
আচার বেশি সময় ধরে রাখার জন্য তাতে তেল বেশি করে দেওয়া হয়। বিশেষ করে ঝাল আচারের তেলের আধিক্য না থাকলে আমাদের মুখে রোচে না অনেকেরই। কিন্তু এই তেল দীর্ঘদিন ধরে থেকে প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে। কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দিতে পারে এবং কোলেস্টেরল বাড়লে কি কি রোগ হতে পারে সেটা আপনি ভালো করেই জানেন।
৩. ক্যান্সারের সূত্রপাত
বেশ কিছু স্টাডি রিপোর্ট বলেছে বেশি পরিমাণে আচার খেলে গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয় বহুলাংশে। যদিও এই তথ্য এখনও পর্যন্ত পুরোপুরি প্রমাণিত হয়নি। এ ছাড়া খাদ্যনালিতেও ক্যান্সার হওয়ার একটা সম্ভাবনা তৈরি করে আচার।
তবে সঠিক মাত্রায় আচার খেলে লাভ
তবে সঠিক মাত্রায় আচার খেলে তার লাভ আছে। অল্প পরিমাণ এবং সপ্তাহে এক অথবা দুদিন আচার খেলে তা শরীরের পক্ষে ভাল। এতে পাচন ক্রিয়া ঠিক থাকে এবং পেটে ঘা হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে, সপ্তাহে বড়জোর দুদিন তার বেশি নয়।