দৈনন্দিন রীতি অনুযায়ী স্নান করে দুপুরের খাবার খেতে বসেন সকলে। কিন্তু এর উল্টোটাও অনেকে করে থাকেন। অর্থাৎ দুপুরে খাওয়া-দাওয়া সেরে স্নান করতে যান। এমন ঘটনা বহু বাড়িতেই হয়ে থাকে। এর জন্য বড়দের থেকে মাঝেমধ্যেই বকাও শুনতে হয়। কারণ বড়দের মতে কখনই খাওয়ার পর স্নান করা উচিত নয়। সবসময় স্নান করে খেতে বসা উচিত।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভরপেট খেয়ে স্নানের অভ্যাস অত্যন্ত ক্ষতিকর। এর ফলে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। কিন্তু অনেকেই এটাকে অভ্যাস বানিয়ে ফেলেন। যাঁদের এই অভ্যাস আছে তাঁরা দেখে নিন কী হয় ভরা পেটে স্নান করলে। আর শীঘ্রই নিজেদের এই অভ্যেস ত্যাগ করুন।
আয়ুর্বেদ মতে
আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞদের মতে, খাবার খাওয়ার পরপরই স্নান করলে শরীরের রক্তসঞ্চালন ধীর হয়ে যায়, যার ফলে হজম প্রক্রিয়াও ধীর হয়ে যায়। কারণ খাবার হজমের জন্য আমাদের শরীরে প্রচুর এনার্জি এবং পেটে রক্ত প্রবাহের প্রয়োজন হয়। তাই আয়ুর্বেদ অনুসারে, লাঞ্চের পর স্নান করা একেবারেই উচিত নয়।
চিকিৎসা বিজ্ঞান মতে
চিকিৎসা বিজ্ঞানও আয়ুর্বেদের সঙ্গে সহমত পোষণ করে। কারণ রক্ত সঞ্চালনে বাধা পড়লে শরীরের তাপমাত্রাও ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে, যে কারণে হজম প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: Bathing Tips For Freshness: স্নানের সময় এই ৫টি জিনিস জলে মিশিয়ে নিন, সারাদিন তরতাজা থাকবেন
খাওয়ার আগে স্নান করুন
পেট ভরে খাওয়ার পর শরীরের তাপমাত্রা এমনিতেই খানিকটা বেড়ে যায়। শরীরের হজম প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য বেশি মাত্রায় রক্ত চলাচল শুরু হয়। আর, এই সময়ে স্নান করলে শরীরে তাপমাত্রা আরও বেড়ে যেতে পারে। তার উপর স্নান করলে কখনও কখনও হৃদ্স্পন্দনও বাড়ে। স্নানের ফলে যেহেতু শরীরের তাপমাত্রা এমনিই বেড়ে যায়, তাই হজম প্রক্রিয়ার জন্য বাড়তি রক্তের সরবারহ নাও হতে পারে। এতে হজম প্রক্রিয়া ধীরে হয়ে গিয়ে শরীরে ক্লান্তি আসতে পারে। তাই খাওয়ার পর স্নান না করাই ভাল। খাওয়ার এক থেকে তিন ঘণ্টা আগে স্নান করা উচিত।
স্যালাড বা ফল খেয়ে স্নান করা যায়
যদি বেশি ফ্যাট বা রিফাইন করা কার্বোহাইড্রেট বা অতিরিক্ত ফাইবারযুক্ত খাবার খাওয়ার পর স্নান করেন, তা হলে হজমপ্রক্রিয়া আরও ধীর হয়ে গিয়ে গ্যাস বা অম্বলের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে যদি এই যুক্তি অনুযায়ী বিচার করা হয়, তা হলে স্যালাড বা ফল খাওয়ার পর স্নান করলে তেমন কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।