সাধারণত আমরা মনে করি, শ্রবণ ক্ষমতায় নারী ও পুরুষের মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই। কিন্তু সাম্প্রতিক একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা জানাল ভিন্ন কথা। ব্রিটিশ ও ফরাসি গবেষকদের যৌথ উদ্যোগে ১৩টি দেশে পরিচালিত সমীক্ষায় দেখা গেছে, নারীরা সাধারণত পুরুষদের তুলনায় গড়ে দুই ডেসিবেল বেশি শ্রবণক্ষম। অর্থাৎ, নারীরা শব্দ বেশি স্পষ্টভাবে শোনেন।
কানে ‘কক্লিয়া’র গঠনেই রহস্য
গবেষকদের মতে, এর পেছনে প্রধান কারণ হলো কানের ভেতরে থাকা ‘কক্লিয়া’ অংশের গঠনগত পার্থক্য। কক্লিয়া হলো একটি তরল-ভরা সর্পিলাকার অংশ, যা শব্দ তরঙ্গকে বৈদ্যুতিক সংকেতে রূপান্তর করে মস্তিষ্কে পাঠায়। নারীদের কক্লিয়ার গঠন পুরুষদের তুলনায় এমনভাবে তৈরি, যা তাদের শ্রবণক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।
হরমোনের প্রভাবও গুরুত্বপূর্ণ
শুধু কানের গঠন নয়, শিশুকাল থেকে যৌবনে প্রবেশের সময় হরমোনের পরিবর্তনও এই পার্থক্যের অন্যতম কারণ হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। নারীদের শরীরে ইস্ট্রোজেনের মতো হরমোন শ্রবণক্ষমতার ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
বেশি শুনতে পারাও সমস্যা ডেকে আনতে পারে!
যদিও এই উচ্চতর শ্রবণক্ষমতা অনেকক্ষেত্রেই উপকারী, তবে সবসময় তা সুখকর নয়। কোলাহলপূর্ণ পরিবেশে নারীরা বেশি শব্দ অনুভব করায় তাদের ঘুমের ব্যাঘাত হতে পারে। এমনকি দীর্ঘমেয়াদে উচ্চ শব্দে বসবাস করলে হৃদযন্ত্রের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
শ্রবণ স্বাস্থ্যের যত্নে আলাদা পদ্ধতি
এই গবেষণা আরও দেখায়, শ্রবণ ক্ষমতা শুধু শারীরিক গঠন দ্বারা নির্ধারিত হয় না, পরিবেশগত প্রভাব এবং ব্যক্তিগত জীবনধারাও এর ওপর প্রভাব ফেলে। তাই শ্রবণস্বাস্থ্য রক্ষায় নারীদের জন্য পৃথক যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা।