Historical Buxa Fort About To Open For Tourist: ৫০ বছর প্রায় ভগ্নপ্রায় অবস্থায় পড়ে থাকার পর অবশেষে পুরনো চেহারায় ফিরতে চলেছে ডুয়ার্সের ঐতিহাসিক বক্সা ফোর্ট। ফোর্টটির ১০০ বছর আগের যে রকম চেহারা ছিল, ঠিক সেই রকম রূপ ফিরিয়ে দিতে কাজ শুরু করেছে। রাজ্য সরকার উদ্দেশ্য একটাই-এর হেরিটেজ তকমা রক্ষা করা এবং পাশাপাশি পর্যটন আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে বক্সাকে এর পুনর্স্থাপন করার কাজ কিছুদিন আগেই শুরু হয়েছে। মাঝে বর্ষার জন্য এই কেল্লা সংস্কারের কাজ কিছুটা থমকে গিয়েছিল আবার তা শুরু হতে চলেছে।
পর্যটকদের জন্য কবে থেকে খুলবে ফোর্ট?
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম ধাপের কাজ আপাতত শেষ। বর্তমানে দফতরের দায়িত্বে রয়েছে। ওই দফতর থেকে সংস্কারের কাজ করানো হচ্ছে। বক্সার কাজের বিষয়ে পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়াররা জানিয়েছেন যে, বক্সা ফোর্টের দ্বিতীয় ধাপের সংস্কারের কাজ আগেই শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। তবে বর্ষার জন্য কাজ খানিকটা থমকে গিয়েছে। নভেম্বরের মধ্যে তাঁদের কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করছেন তাঁরা। ফলে এবার ইচ্ছে থাকলেও পুজোর আগে পর্যটকদের জন্য খোলা গেল না। তবে শীতে পর্যটন মরশুমের আগে যেন বক্সা ফোর্টকে খুলে দেওয়া যায় সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।
আড়াই বছর ধরে চলছে সংষ্কার
২০২০ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে বক্সা ফোর্ট সংস্কার শুরু হয়েছে। এই ফোর্টটি দীর্ঘদিন অবহেলায় প্রায় ভগ্নদশায় পরিণত হয়েছিল। আড়াই বছর ধরে এটি বিভিন্ন ভাবে মেরামত করা হচ্ছে। আপাতত এখানে পর্যটকদের ঢোকা নিষেধ রয়েছে। আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক আর বিমলা জানিয়েছেন কাজ শেষ হলেই তা পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
বক্সা দুর্গের ইতিহাস
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় এই দুর্গ প্রায় ২৭০০ ফুট উঁচু। এটি জেলার অন্যতম ঐতিহাসিক জায়গা। রাজ্যের ঐতিহাসিক সৌধগুলির মধ্যে একটি। যেখানে জড়িয়ে রয়েছে অনেক রক্ত, ঘাম, জল জড়ানো স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস। তার আগেও অবশ্যই এর ঐতিহাসিক ভ্যালু ছিল। ভুটান রাজার হাত থেকে কোচ রাজারা নেয়। সেখান থেকে ব্রিটিশদের হাতে আসে।ভারতে তিব্বতিদের শরণার্থী শিবিরের সাক্ষী এই বক্সা ফোর্ট। ব্রিটিশদের দখলে আসার পর থেকে এটিকে কারাগার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল। বহু স্বাধীনতা-সংগ্রামীদের এখানে বন্দী করে রাখা হয়েছিল। দুর্গ সংস্কারের জন্য প্রথম ধাপে প্রায় তিন কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল রাজ্য সরকার। বক্সা, অফিস, বন্দী শিবির, সৈন্য ব্যারাক সংস্কার হয়েছে। পুরনো তিনটি রাস্তা ও নিকাশি ব্যবস্থা আগের রূপে ফেরানো হয়েছে। বিগত বছর জুন মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম ধাপের কাজের উদ্বোধন এবং দ্বিতীয় ধাপের কাজের রান্না করেছিলেন। দ্বিতীয় ধাপের জন্য প্রায় দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। সেই কাজে চলছে।
বক্সা নিয়ে পর্যটক সহ ইতিহাসপ্রিয় মানুষের উৎসাহ এবং আগ্রহের শেষ নেই। এই ফোর্টটি খুলে গেলে স্বাধীনতা সংগ্রাম সহ পুরনো বাংলার ইতিহাসের অনেক পৃষ্ঠা উন্মোচিত হবে। পাশাপাশি এর পর্যটন ভ্যালু এবং সৌন্দর্য কম নয়।