
Lepcha King Fort: সপ্তদশ শতাব্দীর শেষ ভাগে ভুটানি আগ্রাসনের মোকাবিলায় লেপচা রাজা পানো গ্যাবো আচিওক তিব্বতের সহায়তায় ডালিম ও দামসাং পাহাড়চূড়ায় দুটি দুর্গ নির্মাণ করেছিলেন। প্রথমদিকে ভুটানি হামলা প্রতিহত করা সম্ভব হলেও, বন্ধুত্বের ছদ্মবেশে ১৬৭৬ সালে লেপচা রাজাকে হত্যা করে তাঁর মুণ্ডুচ্ছেদ করা হয় এবং দেহাংশ চেল নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই ঘটনার পর থেকেই এই দুই দুর্গ লেপচা জনজাতির কাছে আবেগ ও আত্মপরিচয়ের প্রতীক হয়ে রয়েছে।
লেপচা জনজাতির ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে পরিচিত সেই ডালিম ও দামসাং দুর্গ সংরক্ষণের পথে বড় পদক্ষেপ করল রাজ্য সরকার। ন্যাশনাল হেরিটেজ কমিশনের সুপারিশ মেনে এই দুই ঐতিহাসিক দুর্গ সংরক্ষণের প্রাথমিক কাজের জন্য আর্থিক বরাদ্দ করা হয়েছে। শনিবার কালিম্পংয়ে এক অনুষ্ঠানে বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন লেপচা কালচারাল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের চেয়ারম্যান ও কালিম্পংয়ের বিধায়ক রুদেন সাদা লেপচা।
কালিম্পংয়ের মেলা গ্রাউন্ডে লেপচা রাজা পানো গ্যাবো আচিওকের ২৯৪তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দুর্গ সংরক্ষণ প্রসঙ্গে এই ঘোষণা করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী বুলু চিকবড়াইক। তিনি লেপচা জনজাতির সামগ্রিক উন্নয়নের কথা তুলে ধরে জানান, চারকোলবস্তিতে নতুন একটি রাজ্য পরিচালিত একলব্য আবাসিক স্কুল চালু করা হয়েছে। আপাতত অস্থায়ীভাবে স্কুলটি চালু হলেও স্থায়ী ভবন নির্মাণের জন্য ৪৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার।
কালিম্পং জেলা শাসক কুহুক ভূষণ বলেন, নথিপত্র খতিয়ে দেখেই তিনি মন্তব্য করবেন। এদিনের অনুষ্ঠানে পাহাড়ের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা লেপচা নারী-পুরুষরা তাঁদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক ও বাদ্যযন্ত্রে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন, যা অনুষ্ঠানকে বিশেষ মাত্রা দেয়।
রুদেন লেপচা জানান, গরুবাথানের কাছে অবস্থিত ডালিম দুর্গ সংরক্ষণের জন্য পাঁচ কোটি টাকা এবং দামসাং দুর্গের জন্য চার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। দুর্গ দুটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব, ভৌগোলিক অবস্থান এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বিচার করেই ধাপে ধাপে সংরক্ষণ ও আনুষঙ্গিক কাজ শুরু হবে।