Holong Tourist Lodge: ১৫দিন পর খুলতে চলেছে উত্তরবঙ্গের জঙ্গলগুলি। তার আগে বড় সিদ্ধান্ত নিল বন দফতর। বনবাংলোগুলির ভাড়া নিয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে দফতর। পাশাপাশি অত্য়াধুনিক করে গড়ে তোলা হচ্ছে উত্তরবঙ্গের বন বাংলোগুলি। আড়াই মাস আগে ভস্মীভূত হয়েছিল হলং বনবাংলো। সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রায় সমস্ত বনবাংলোর অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাও ঢেলে সাজানো হচ্ছে।
ভাড়া নিয়ে কী সিদ্ধান্ত?
এবার উত্তরবঙ্গের কোনও বনবাংলোর ভাড়া বাড়ানো হবে না। গত বছরের যে হারে ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। সেই ভাড়া এবারও হাল থাকছে। ফলে পর্যটকদের বাড়তি চাপ বহন করতে হবে না। পাশাপাশি নিরাপত্তা নিয়েও অনেকটাই নিশ্চিন্ত থাকতে পারবেন তাঁরা।
কত করে ভাড়া?
এ ব্যাপারে জলপাইগুড়ি বন বিভাগের ডিএফও বিকাশ ভি সংবাদমধ্যমকে জানিয়েছেন, এবার আর বনবাংলোর ভাড়া বাড়ানো হয়নি। এই বনবাংলোর ডিলাক্স, সুপার ও এলিট রুমে থাকতে যথাক্রমে দৈনিক ১৪০০ টাকা, ১৮০০ টাকা ও ২২০০ টাকা ভাড়া দিতে হবে।
দীর্ঘ তিন মাস বন্ধ থাকার পর আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর, সোমবার থেকে খুলে দেওযা হচ্ছে জঙ্গল সহ বনবাংলো। এখন থেকে জঙ্গল ঘুরে দেখা ও বিভিন্ন বনবাংলোতে থাকার সুযোগ পাবেন পর্যটকরা। যেহেতু জঙ্গলের ভিতরে অধিকাংশ বন বাংলোগুলি অবস্থিত, সে কারণে সেগুলিও বন্ধ থাকে। যা ১৬ সেপ্টেম্বর থেকেই খুলছে।
ইতিমধ্যেই গরুমারা বন্যপ্রাণ বিভাগের সবক’টি বনবাংলোর অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নতুন ও অত্যাধুনিকভাবে ঢেলে সাজাতে দমকলের আধিকারিকদের নিয়ে খতিয়ে দেখেন উত্তরবঙ্গ বন্যপ্রাণ বিভাগের বনপাল ভাস্কর জেভি। ইতিমধ্যে জলপাইগুড়ি বন বিভাগের আওতাভুক্ত লাটাগুড়ির নেওড়া জঙ্গল ক্যাম্পের (Neora Jungle Camp) অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি সেখানে থাকা কটেজগুলিকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। নতুন করে রং করার পাশাপাশি বিভিন্ন আসবাবপত্র ও ভিতরের সাজসজ্জাও বেশ কিছু বদল করা হয়েছে বলে বন দফতর সূত্রে খবর।
৬৮ বছরের পুরনো ডুয়ার্সের মাদারিহাটের জলদাপাড়ায় ভিনটেজ হলং বনবাংলো পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে কয়েকদিন আগেই। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু থেকে শুরু করে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রিয় ছিল এই বাংলো। এ ছাড়াও বহু সাধারণ মানুষ, পর্যটনপ্রেমী ও বিখ্যাত ব্যক্তিরা এখানকার ঢাউস উইন্ডো দিয়ে জন্তু-জানোয়ারের আনাগোনা দেখেননি এমন নয়। বাংলো পুড়ে যাওয়ার পরেও পছন্দের স্থাপত্যটির পুড়ে যাওয়া ধ্বংসস্তুপ দেখতেও ভিড় করেছিলেন পর্যটকদের একটা বড় অংশ। সেই সঙ্গে সকলের মনে এই প্রশ্ন ছিল, ঐতিহ্য ও সৌন্দর্যের মিশ্রণএই বাংলোটিকে আবার আগের মতো পাওয়া যাবে কি না। নাকি অনেক বাংলোর মতো পাকা করে দেওয়া হবে আধুনিক করে।
১৯৬৭ সালে মাদারিহাটে জলদাপাড়া জঙ্গলের ভিতর বাংলোটি তৈরি হয়। বিভিন্ন বন্যজন্তু ও পাখিদের সান্নিধ্য উপভোগ করার জন্য দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় ছিল এই বনবাংলো। জঙ্গলের নিস্তব্ধতায় কিছুটা সময় কাটাতে এসেছেন অনেক নামী-দামি মানুষ। প্রায় ৬৮ বছর ধরে এই বাংলোটিতে অজস্র পর্যটক এসে থেকেছেন। বাংলোটি পুড়ে যাওয়ার খবরে পর্যটনমহলেও মন খারাপ। সম্পূর্ণ কাঠের তৈরি এই বন বাংলোটি যেন আগের মতো করেই গড়ে তোলা হয়, সেই দাবি তুলছেন সকলে। অন্যদিকে, হলং বনবাংলোয় আগুন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অভিযোগ জানাবেন বলে দাবি করেছেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ মনোজ টিগ্গা।