Dooars North Bengal And Assam: ব্রিটিশ আমলে ডুয়ার্স বলতে বোঝাতো এ রাজ্যের উত্তরবঙ্গ ও নিম্ন অসমের একটা বিস্তীর্ণ অঞ্চল। স্বাধীন ভারতে রাজ্যভাগের পর তা স্বাভাবিকভাবেই আলাদা হয়ে যায়। ফলে দীর্ঘদিনের অনভ্যাসে এখন আর কেউ ডুয়ার্স বলতে অসমের অংশকে বোঝে না। কিন্তু এবার ফের একযোগে গোটা পুরনো ডুয়ার্স ঘোরানোর বন্দোবস্ত করছে পর্যটন সার্কিট। যা এই জোনের পর্যটনের ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ বলে গণ্য় হতে পারে।
পর্যটনকে হাতিয়ার করে অসম এবং পশ্চিমবঙ্গে ব্রিটিশ জমানার ডুয়ার্সকে এক সুতোয় বাঁধতে চাইছে ইস্টার্ন ডুয়ার্স ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন নামে একটি পর্যটন সংগঠন। এ নিয়ে কাজও শুরু করেছে তারা। রবিবার এবিষয়ে লংকাপাড়া ইকো পার্কে সংস্থার একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে অসম এবং পশ্চিমবঙ্গের একঝাঁক পর্যটন ব্যবসায়ী সংস্থার সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ সাহা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, পর্যটনের বিকাশে ইস্টার্ন ডুয়ার্সকে ফের এক সুতোয় বাঁধতে চাইছেন তাঁরা।
সংস্থাটির বক্তব্য, ব্রিটিশ আমলে অসমের ধানসিঁড়ি থেকে সেবক পর্যন্ত এলাকাটিকে ডুয়ার্স হিসেবে গণ্য করা হত। কিন্তু পরে পরিস্থিতি পালটে যায়। বিশেষ করে পর্যটনের ক্ষেত্রে পূর্ব ডুয়ার্স ক্রমে পিছিয়ে পড়ছে। সেক্ষেত্রে বিশেষ ‘সুবিধা’ পাচ্ছে লাটাগুড়ি, মালবাজার। ‘খরা’ কাটাতে ধানসিঁড়ি থেকে সেবক পর্যন্ত পর্যটন এলাকাগুলিকে সংস্থাটি ১৩টি সেক্টরে ভাগ করেছে। এগুলির মধ্যে দুটি রয়েছে অসমে। অসমের মানস সেক্টরের কোঅর্ডিনেটর তাপস বর্মন সংবাদমাধ্যমকে জানান এখন আর সংকোশ নদীর ওপারের অসম এলাকাটিকে কেউ ডুয়ার্স হিসেবে গণ্য করে না। এজন্য ট্যুরিজম সংস্থা এবং ট্যুর অপারেটররা দায়ী। অথচ সেখানে একাধিক অভয়ারণ্যে বিরল বন্যপ্রাণীর সম্ভার রয়েছে।
মূলত ডুয়ার্সের জনজাতিগুলির সংস্কৃতির সঙ্গে পর্যটকদের পরিচিতি ঘটানোর লক্ষ্যে রায়মাটাং, লংকাপাড়া, কুমারগ্রাম ও পানার মতো দূরের অপরিচিত এলাকাগুলিকে সংস্থাটি তালিকাভুক্ত করেছে। ইস্টার্ন ডুয়ার্সের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ সাহার দাবি, শুধুমাত্র পাহাড়, চা বাগান আর নদী নয়, পর্যটনে থাকা উচিত সংস্কৃতিও। উত্তরবঙ্গের বেশিরভাগ জনজাতি আলিপুরদুয়ার জেলায় রয়েছে। সেটাকেও প্রমোট করতে হবে।
আলিপুরদুয়ারে জেলার মাদারিহাটের জলদাপাড়া, আলিপুরদুয়ারে বক্সা, জয়ন্তী, কালচিনিতে রায়মাটাং এবং জয়গাঁয় প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য ও সৌন্দর্যের বিরাট ভাণ্ডার এখনও ততটা পরিচিত নয়। পর্যটকদের একটা বড় অংশ ডুয়ার্স ভ্রমণ বলতে মালবাজার বিশেষ করে লাটাগুড়ির এলাকাগুলির বাইরে তেমন জানেন না। প্রচার ও প্রসারের অভাবে এই সমস্য়া তৈরি হয়েছে বলে সংগঠনের দাবি। এই পরিস্থিতি কাটিয়ে সংস্থাটির পরিচালকরা পর্যটকদের পূর্ব ডুয়ার্সমুখী করতে চাইছেন। পর্যটন গঠন ‘এতোয়া’র সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস মৈত্র বলেন, ডুয়ার্সের প্রত্যন্ত এলাকাগুলির প্রাকৃতিক, সাংস্কৃতিক সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যকে পর্যটকদের সামনে তুলে ধরতে গেলে পর্যটন সংস্থা এবং ট্যুর অপারেটরদের সিডিউলে দিনসংখ্যা বাড়াতে হবে।