সব রাস্তা না থাকলেও পৌঁছে যেতে পারবেন পাহাড়ের আনাচে-কানাচে। এমনই বন্দোবস্ত করতে চলেছে দার্জিলিং পাহাড়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসন গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (GTA). কথার কথা বা প্রস্তাব নয়,রীতিমতো ডিপিআরও তৈরি করে ফেলেছে প্রশাসন। কিন্তু বন্দোবস্তখানা কী? আসুন জেনে নিই।
কীভাবে পৌঁছবেন পাহাড়ে?
রাস্তা খারাপ ও নিত্যদিন লেগে থাকা ধসের কারণে দার্জিলিং পাহাড়ে পৌঁছনোর বিকল্প বন্দোবস্ত করছেন তাঁরা। কী সেই বন্দোবস্ত? আসলে হেলিকপ্টারে পাহাড়ের একাধিক জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করছে রাজ্য। তার জন্য ইতিমধ্যেই হেলিপ্যাড তৈরির কাজ শুরুর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। মিরিকে থাকা পুরনো হেলিপ্যাডটি সংস্কার করা হচ্ছে। নতুন হেলিপ্যাড তৈরি হচ্ছে দার্জিলিংয়ের (Darjeeling) দুতেরিয়া এবং কালিম্পংয়ের (Kalimpong) ডেলোতে।
জায়গা চিহ্নিত করার পাশাপাশি ডিটেইলড প্রোজেক্ট রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরির কাজও শেষ করেছে পরিবহণ দফতর। নতুন বছরের আগেই দার্জিলিং এবং কালিম্পংয়ে হেলিপ্যাড তৈরির কাজ শুরু করে দেওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী দফতরের কর্তারা। ফলে হেলিকপ্টারে চেপে পাহাড় দর্শনের সুযোগ পেতে পর্যটকদের বেশিদিন সময় লাগবে না।
রাজ্য পরিবহণ কর্তৃপক্ষের যুগ্ম সচিব তথা দার্জিলিংয়ের আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক সোনম লেপচা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, প্রোজেক্ট রিপোর্ট তৈরি হয়ে গিয়েছে। কাজ শুরু হতে বেশি সময় লাগবে না। দ্রুততার সঙ্গে কাজ শেষও করা হবে। বাগডোগরা বিমানবন্দরের সম্প্রসারণের কাজ শেষ হলে পাহাড়ের সঙ্গে সমতলের আকাশপথে যোগাঘোগ ঘটবে বলেও মনে করছেন তিনি।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই পরিবহণ দফতর ঘিসিংয়ের চিহ্নিত করা দূতেরিয়াতে জমিতে হেলপ্যাড তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়। কালিম্পংয়ের ডেলোতেও হেলিপ্যাড তৈরির ক্ষেত্রেও এমন প্রত্যেকটি বিষয় খুঁটিয়ে দেখা হয়েছে। মিরিকের হেলিপ্যাড আগেই তৈরি ছিল। আপাতত সেখান থেকে ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলক যাত্রা সফল হয়েছে। ফলে পরিষেবা শুরু করতে খুব বেশি বেগ পেতে হবে না বলেই মনে হচ্ছে।
দার্জিলিং এবং কালিম্পংয়ে হেলিপ্যাড তৈরি হওয়ার পর তিন জায়গা থেকে যদি হেলিকপ্টার সার্ভিস চালু হয়, তবে পর্যটনশিল্প উপকৃত হবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। উল্লেখ্য, পর্যটনে নজর রেখে হেলিকপ্টার পরিষেবার ক্ষেত্রে নজর দিয়েছে সিকিম। পর্যটকদের নিয়ে সিকিমের এক পাহাড় থেকে আরেক পাহাড়ে টেক-অফ করছে হেলিকপ্টার। এই পরিষেবা চালু হলে, পর্যটনের পাশাপাশি জরুরি পরিস্থিতিতে পর্যটকদের রেসকিউ করার কাজও করা যাবে।
প্রায় দুই দশক আগে দার্জিলিং গোর্খা হিল কাউন্সিলের চেয়ারম্যান থাকাকালীন চেষ্টা করেছিলেন সুবাস ঘিসিং। কিন্তু সুখিয়াপোখরি ব্লকের দুতেরিয়াতে হেলিপ্যাড তৈরি করতে পারেননি। তাঁর অসমাপ্ত কাজকে বাস্তবের মুখ দেখাতে চাইছেন গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের চেয়ারম্যান অনীত থাপা।