
Toto Safari Lataguri: ডুয়ার্সের পর্যটন মানেই জঙ্গল, নদী আর চা বাগানের অপূর্ব মেলবন্ধন। শীতকালে পর্যটকের ঢল নামে ঠিকই, কিন্তু বর্ষা এলেই জঙ্গল সাফারি বন্ধ থাকায় পর্যটন ব্যবসা প্রায় মুখ থুবড়ে পড়ে। সেই সময় বিকল্প আয়ের সন্ধানে থাকতে হয় টোটোচালক থেকে শুরু করে পর্যটন ব্যবসায়ীদের। কয়েক বছর আগেও পরিস্থিতি ছিল এমনই।
লাটাগুড়ি বাজার থেকে নেওড়া চা বাগান হয়ে লালপুল রেলসেতু। আবার ধূপঝোরা বাজার ছুঁয়ে বড়দিঘি চা বাগান পেরিয়ে ছোঁয়াফেলি বনবস্তি। কয়েক বছর আগেও এই দু’টি জায়গার নাম খুব কম মানুষই জানতেন। পর্যটন মানচিত্রে এই এলাকাগুলির কোনও উল্লেখই ছিল না বললেই চলে। কিন্তু এখন চিত্র একেবারে বদলে গিয়েছে। সপ্তাহান্ত এলেই এই দুই জায়গায় উপচে পড়ছে পর্যটকের ভিড়।
এই বদলের নেপথ্যে রয়েছেন স্থানীয় টোটোচালকরা। যাঁদের উদ্যোগে আজ লাটাগুড়ির পর্যটন শুধু চেনা জঙ্গল সাফারির মধ্যেই আটকে নেই। বরং পর্যটকরা একবার হলেও ‘এক্সপ্লোর’ করছেন এই নতুন অফবিট স্পটগুলি।কয়েক বছর আগে এক বর্ষার মরশুমে আচমকাই এই স্পট দুটি নজরে আসে। খানিকটা নাটকীয়ভাবেই। পর্যটক লাটাগুড়িতে এসে জঙ্গল সাফারি বন্ধ থাকায় কোথায় ঘুরবেন, বুঝতে পারছিলেন না। তখন কয়েকজন টোটোচালক নেওড়া নদীর ধারে লালপুল বা ছোঁয়াফেলি বনবস্তিতে নিয়ে যান। সেখানে ময়ুরের দল এমনিই ঘুরে বেড়ায়। ঘুরে এসে পর্যটকরা এতটাই মুগ্ধ হন যে, মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে এই দুই জায়গার নাম। ধীরে ধীরে বর্ষা ছাড়াও অন্য সময়েও পর্যটকরা সেখানে যেতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। তখনই চালু হয় ‘টোটো সাফারি’। বর্তমানে প্রায় ৫০ জন টোটোচালক নিয়মিত এই রুটে পর্যটকদের নিয়ে যান।
ছোঁয়াফেলি বনবস্তিতে মাঝেমধ্যেই দেখা মেলে ময়ূরের। ভাগ্য ভালো হলে ময়ূরের নাচও দেখতে পান পর্যটকরা। কখনও নদীর ধারে হাতি বা বাইসনের দল বেরিয়ে পড়লে সেটাই হয়ে ওঠে বাড়তি পাওনা। এই সবই পর্যটকদের কাছে রোমাঞ্চের অন্যতম আকর্ষণ। যে টোটোচালকরা এক সময় সারাদিন ভাড়া পাওয়ার অপেক্ষায় বসে থাকতেন, এখন বিকেল হলেই তাঁদের জন্য পর্যটকরা অপেক্ষা করেন।