Advertisement

Durga Puja 2023: 'যেখানে ঢাকায় মঙ্গল শোভাযাত্রা হয়, সেখানে দুর্গাপুজোয় কেন অশান্তি হবে?'

'ধর্ম যার যার, উৎসব সবার!' এই স্লোগানের পাশাপাশি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুজোয় বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিগুলি বা মৌলবাদী শক্তিগুলি যাতে ঝামেলা বাঁধাতে না পারে, সেই বিষয়েও দেশবাসীকে সতর্ক থাকতে বলেছেন।

দুর্গাপুজো ২০২৩দুর্গাপুজো ২০২৩
Aajtak Bangla
  • কলকাতা,
  • 07 Oct 2023,
  • अपडेटेड 1:12 PM IST
  • এই বছর বাংলাদেশে সংসদীয় নির্বাচন হওয়ার কথা
  • নির্বাচনের আগে হিন্দু সম্প্রদায় আক্রান্ত হলে শেখ হাসিনার দলের জন্য খারাপ হবে

'ধর্ম যার যার, উৎসব সবার!' এই স্লোগানের পাশাপাশি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুজোয় বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিগুলি বা মৌলবাদী শক্তিগুলি যাতে ঝামেলা বাঁধাতে না পারে, সেই বিষয়েও দেশবাসীকে সতর্ক থাকতে বলেছেন। অতি সম্প্রতি তাঁর এক সাংবাদিক সম্মেলনে বাংলাদেশের অন্যতম সামাজিক সংগঠন ‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’-এর প্রধান এবং সেই দেশের বিখ্যাত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় যখন আমাদের প্রতিবেশী দেশের প্রধানমন্ত্রীকে দুর্গাপুজোর বিষয়ে প্রশ্ন করেন, তখন বঙ্গবন্ধু কন্যা এই সতর্কবার্তার কথা মনে করিয়ে দেন। বাংলাদেশে দুর্গাপুজো নিয়ে এত আলোচনার কারণ ২০২১-এ সে দেশে কুমিল্লার একটি মণ্ডপে হাঙ্গামা থেকে যে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ শুরু হয়েছিল তার জের অনেক দূর গড়িয়েছিল। গোটা বাংলাদেশজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় মৌলবাদীরা দুর্গাপুজোর মণ্ডপে ভাঙচুর চালায় এবং হিন্দু সম্প্রদায় আক্রান্ত হয়। বাংলাদেশে পুজোর সময় সংখ্যালঘু নির্যাতনের এই ঘটনা নিয়ে এবঙ্গের রাজনীতিও তোলপাড় হয়েছিল। পুজোর ঠিক পরে পশ্চিমবঙ্গের চারটি বিধানসভা কেন্দ্রে যে উপ-নির্বাচন ছিল, সেখানে গেরুয়া শিবির বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টিকে রাজনৈতিক প্রচারের হাতিয়ার করেছিল। 

এই বছর অবশ্য বাংলাদেশে সংসদীয় নির্বাচন হওয়ার কথা। যেহেতু বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়কে অর্থাৎ ওদেশের সংখ্যালঘুদের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ‘ভোট ব্যাঙ্ক’ বলে ধরা হয়, তাই নির্বাচনের আগে হিন্দু সম্প্রদায় আক্রান্ত হলে শেখ হাসিনার দলের জন্য খারাপ হবে। তাই ২০২৩-এর পুজোর আগে বাংলাদেশের সরকার এবং প্রশাসন সংখ্যালঘুদের জানমানের নিরাপত্তার জন্য বাড়তি সতর্ক।

২০২১-এর ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে অবশ্য ২০২২ থেকেই বাংলাদেশের সরকার এবং শাসকদল আওয়ামী লিগ বাড়তি সতর্কতা নিয়েছিল। গত বছর পুজোর সময় ঢাকায় কাটিয়ে দেখেছি বনানী গুলশানের বিরাট দুর্গাপুজোর আয়োজন থেকে ঐতিহ্যশালী ঢাকেশ্বরী মন্দিরেও নিরাপত্তার আয়োজনে কোনও খামতি ছিল না। পুলিশ ছিল, বাংলাদেশের বিশেষ শান্তিরক্ষা বাহিনীর নজরদারি ছিল, এর পাশে শাসক দল আওয়ামী লিগ আবারও গোটা দেশ মুড়ে দিয়েছিল ফ্লেক্স আর ব্যানারে, যেখানে লেখা ছিল তাদের পুরনো স্লোগান, ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।’ গত বছরই ঢাকেশ্বরী মন্দিরে যখন বাংলাদেশের রাজনৈতিক কর্মী, জাতীয় পার্টির নেত্রী শাহিন আরা সুলতানা বা সমাজকর্মী ফজলে রাব্বি পলাশের সঙ্গে দেখা হয়েছিল, তখন তাঁরা প্রতিবেশী দেশের বাঙালি সংস্কৃতি এবং ধর্মনিরপেক্ষ ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখার ওপরে জোর দিয়েছিলেন। তাঁরা মনে করিয়ে দিয়েছিলেন, যে দেশের রাজধানী শহর ঢাকায় নববর্ষকে কেন্দ্র করে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’র আয়োজন হয়, সেখানে কেন দেশের সংখ্যালঘু, হিন্দুদের প্রধান উৎসব দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক অশান্তির ঘটনা ঘটবে!

Advertisement

আরও পড়ুন

২০২১-এ দুর্গাপুজোর সময় হাঙ্গামা এবং ঝামেলা বাঁধানোর দায় অবশ্য সে দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছে শাসকদল। আবার বাংলাদেশের বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি বিএনপির অভিযোগ, শাসক আওয়ামী লিগের নেতাকর্মীরাই অধিকাংশ সাম্প্রদায়িক হাঙ্গামার পিছনে রয়েছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং আইনজীবী খন্দকার আহসান হাবিব যেমন বলেন, 'আওয়ামী লিগ আসলে জানে যতক্ষণ হিন্দুরা দেশে আছে ততক্ষণ ভোটার তাদের, আর হিন্দুরা দেশ ছেড়ে পালালে জমি বাড়ি আওয়ামী লিগের।' বিরোধীরা এই কথা বলেন বলেই শাসক আওয়ামী লিগ ২০২২ থেকেই বাড়তি সতর্কতা নিয়েছে। সরকারের এবং দলের ঘোষিত ‘নম্বর থ্রি’, সে দেশের তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে কীভাবে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরির চেষ্টা করা হয় সেই বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন। হাছান মাহমুদের এই অভিযোগ অবশ্য মিথ্যে নয়। ২০২১-এ কুমিল্লায় গণ্ডগোলের সূত্রপাত হয়েছিল একটি ফেসবুক লাইভের ঘটনা থেকে। আমাদের মনে রাখতে হবে সেই সময় নিউ ইয়র্ক টাইমসের সমীক্ষা দেখিয়েছিল দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে অন্তত ৩০০টি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হাঙ্গামার পিছনে উস্কানি হিসেবে কাজ করেছিল সোশ্যাল মিডিয়া।

সামনে নির্বাচন। এবার পুজোর সময় বাংলাদেশে গণ্ডগোল এড়াতে যে শাসকদল আওয়ামী লিগের বাড়তি প্রচেষ্টা থাকবে সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তবে তার পাশাপাশি দরকার সামাজিক স্তরে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সেতু বন্ধন। এই ধরনের সংগঠন হিসেবে কাজ করে চলা ‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’-এর প্রধান পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বা সচিব স্বপ্নিল মনে করেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে, জেলায় জেলায় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের কাজকর্মই বিদ্বেষ এবং বিভেদকে রুখতে পারে।

Read more!
Advertisement
Advertisement