Advertisement

বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের 'প্রধান' ইউনুস হলে ভারতের লাভ না ক্ষতি?

Muhammad Yunus: সোমবার রাতে বাংলাদেশে আন্দোলনকারী ছাত্রদের মূল সংগঠন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রসমাজের তরফে যখন ভিডিও বার্তায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে মহম্মদ ইউনুসের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে, তখন অনেকেই এর পিছনে আমেরিকার হাত দেখতে পেয়েছেন।

বাংলাদেশ হিংসা
Aajtak Bangla
  • কলকাতা,
  • 06 Aug 2024,
  • अपडेटेड 4:15 PM IST
  • এই অর্থনীতিবিদের সঙ্গে আমেরিকারও অত্যন্ত সুসম্পর্ক
  • অনেকেই এর পিছনে আমেরিকার হাত দেখতে পেয়েছেন
  • বাণিজ্যে কী ধরনের সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে?

আন্দোলনকারী ছাত্রদের প্রস্তাব মেনে যদি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ মহম্মদ ইউনুস দায়িত্ব নেন, তাহলে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্কের উন্নতি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। মহম্মদ ইউনুস বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ হিসেবে ভারতে সুপরিচিত, এদেশের অনেক অর্থনীতিবিদের সঙ্গেই তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব। নোবেল বিজয়ী এই অর্থনীতিবিদের সঙ্গে আমেরিকারও অত্যন্ত সুসম্পর্ক, বিশেষ করে ডেমোক্র্যাট নেতৃত্বের সঙ্গে। অতীতে যখন মহম্মদ ইউনুসের সঙ্গে শেখ হাসিনার বিরোধ হয়েছিল, তখন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদের সমর্থনে গোটা বিশ্ব জুড়ে জনমত তৈরির জন্য বিবৃতি দিয়েছিলেন হিলারি ক্লিন্টন থেকে বারাক ওবামা। সোমবার রাতে বাংলাদেশে আন্দোলনকারী ছাত্রদের মূল সংগঠন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রসমাজের তরফে যখন ভিডিও বার্তায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে মহম্মদ ইউনুসের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে, তখন অনেকেই এর পিছনে আমেরিকার হাত দেখতে পেয়েছেন। আমাদের মনে রাখতে হবে, গত কয়েক বছর ধরেই আমেরিকা বাংলাদেশের রাজনীতিতে সুশাসন এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে আসছিল। আমেরিকা খোলাখুলি ইউনুসের পক্ষ নেওয়ায় পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মার্কিন প্রশাসনের উপর যথেষ্টই ক্ষুণ্ণ ছিলেন। 

নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ মহম্মদ ইউনুস অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হলে তিনি যে প্রতিবেশী  ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক চাইবে, সেটা তিনি ইতিমধ্যেই পরিষ্কার করে দিয়েছেন। শেখ হাসিনার পতনের পর এখনও অবধি গ্রামীণ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন প্রধান যা যা বলেছেন, তার থেকে পরিষ্কার তিনি বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চান। আমাদের মনে রাখতে হবে, শেখ হাসিনার সময়েই নয়াদিল্লি এবং ঢাকা, দুই দেশের মধ্যে সেপা (কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট) নিয়ে আলোচনা চলছিল। নীতিগতভাবে দুই দেশই এতে সম্মত হয়ে গিয়েছিল। যদি ওই পথেই আবারও বাংলাদেশ এবং ভারত হাঁটে, তাহলে দুই দেশের মধ্যে যে মুক্ত বাণিজ্য শুরু হবে, তা দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির নমুনা দেখা দেবে। 

Advertisement

বাণিজ্যে কী ধরনের সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে? আমেরিকায় মেক্সিকো এবং ক্যালিফোর্নিয়ার মধ্যে যে ধরনের ইকোনমিক করিডোর তৈরি হয়েছে, অর্থাৎ যেখানে একপক্ষ অন্যের থেকে শুধু কাঁচামালই কেনে না, কোনও বাধা ছাড়া এক দেশ থেকে আর এক দেশে শ্রমিকরা যাতায়াত করতে পারে। এখনই বাংলাদেশে যে ‘গার্মেন্টস’ শিল্প চলে, যে রেডিমেড পোশাক গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে, তার কাঁচামাল অর্থাৎ তুলো যায় ভারতবর্ষের পশ্চিমের রাজ্যগুলি থেকে। কিন্তু মহম্মদ ইউনুস যদি সত্যিই দায়িত্ব নিয়ে মুক্ত বাণিজ্যের প্রসার ঘটান, তাহলে ভারত এবং বাংলাদেশ যুগ্মভাবে যে অর্থনৈতিক ‘পাওয়ার হাউস’-এ পরিণত হবে, তা অবশ্যই চিনকে চ্যালেঞ্জ করতে পারবে। এবং সেটাই হয়তো চিনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া আমেরিকার কাঙ্ক্ষিত হবে। 

ভৌগোলিকভাবে দেখতে গেলে অরুণাচলের ঠিক উপরে চিনের যে এলাকা রয়েছে, সেই গুয়াংঝাউতে বেইজিং তার বড় ‘প্রোডাকশন হাব’ তৈরি করেছে। চিনের এইসব ‘প্রোডাকশন হাব’-এ বহু মার্কিনি কোম্পানির বিনিয়োগ আছে। যদি মুক্ত বাণিজ্যের পথে হেঁটে ভারত এবং বাংলাদেশ ‘ইকোনমিক করিডোর’ তৈরি করতে পারে, তাহলে সেইসব ‘ইকোনমিক জোন’ মার্কিনি বিনিয়োগকে আকর্ষণ করতে পারবে। এবং সেক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অনুঘটকের কাজ করতে পারেন মার্কিনিদের ‘নয়নের মণি’ মহম্মদ ইউনুস। আমাদের মনে রাখতে হবে, আমেরিকার সঙ্গে চিনের টানাপোড়েন শুরু হওয়ার পর থেকেই ভারত পশ্চিমী দেশগুলির বিনিয়োগ টানার চেষ্টা করে আসছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবারে আমেরিকায় গিয়ে ভারতকে একটি বিরাট উৎপাদনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য মার্কিনি বিনিয়োগ চেয়েছেন। 

মহম্মদ ইউনুস ‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়ার যে স্বপ্নের কথা বলছেন, তার সমর্থক বলে পরিচিত তরুণ প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা যে স্লোগান দিচ্ছেন, যদি সেই পথে হেঁটে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ মুক্ত বাণিজ্যের পরিসর তৈরি করেন, তাহলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সত্যিই অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির নতুন দলিল লেখা হতে পারে। এখন দেখার বাংলাদেশে সক্রিয় জামাত বা অন্য কট্টরপন্থীদের বাধা এড়িয়ে মহম্মদ ইউনুস ভারতের সঙ্গে এই বাণিজ্য সম্পর্ক তৈরি করে দিতে পারেন কিনা!

Disclaimer: এই প্রতিবেদন লেখকের ব্যক্তিগত মতামত। bangla.aajtak.in দায় নিচ্ছে না।

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement