Advertisement

UPSC Examination: বাংলা থেকে IAS, IPS কই? UPSC-র নতুন পাঠ্যক্রম সম্পর্কে কোনও অভিজ্ঞতা নেই

এখন যে সব কোচিং সেন্টার আছে তাদের শীর্ষে আছেন একজন প্রাক্তন আইএএস, যাঁর প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা বিপুল, কিন্তু নতুন পাঠ্যক্রম সম্পর্কে কোনও অভিজ্ঞতা নেই। ফলে তাঁরা জানেন না যে বর্তমানে কর্মরত বা প্রাক্তন আইএএস বা আইপিএস আধিকারিকরা উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিতে অক্ষম।

অমল কুমার মুখোপাধ্যায়, শিক্ষাবিদ ও প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ
Aajtak Bangla
  • কলকাতা,
  • 05 Jun 2023,
  • अपडेटेड 12:41 PM IST
  • প্রশ্ন হল, কেন এই চরম ব্যর্থতা?
  • নতুন পাঠ্যক্রম সম্পর্কে কোনও অভিজ্ঞতা নেই
  • ভাল ছাত্র-ছাত্রীরা সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় আগ্রহ হারাচ্ছেন

সাম্প্রতিককালে পশ্চিমবঙ্গের পরীক্ষার্থীদের ভারতীয় সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় ফল হচ্ছে অতীব শোচনীয়। অবশ্য বর্তমান সরকার সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার্থীদের জন্য একটি কোচিং সেন্টার খুলেছেন এবং বেসরকারি স্তরেও বেশ কয়েকটি কোচিং সেন্টার খোলা হয়েছে। তথাপি গত ১৭ বছরে এ রাজ্যে একজনও আইএএস বা আইপিএস হতে পারেননি। স্বভাবতই উদ্বেগের বিষয়। এখন প্রশ্ন হল, কেন এই চরম ব্যর্থতা?

গত শতকের আশির দশক পর্যন্ত সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার পাঠ্যক্রম ছিল অন্যরকম। এই কালপর্বে যাঁরা নিজ নিজ বিষয়ে পারদর্শী, তাঁরাই সহজে আইএএস বা আইপিএস হতে পারতেন। যেহেতু সে সময়ে ভাল ছাত্র-ছাত্রীদের ভিড় ছিল প্রেসিডেন্সি কলেজে, তাই দেখা যেত এই কলেজের সবচেয়ে ভাল ছাত্র-ছাত্রীরা অনায়াসেই আইএএস বা আইপিএস হতেন। কিন্তু নব্বইয়ের দশকে সতীশচন্দ্র কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তিতে পাঠ্যক্রমে আমূল পরিবর্তন হওয়ায় একটি বিষয়ে বিশেষ পারদর্শী হলেও ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষে সাফল্য লাভ করা সম্ভব ছিল না। ফলে ভাল ছাত্র-ছাত্রীরা সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় আগ্রহ হারান। তাঁরা এখন থেকে উচ্চতর গবেষণার জন্য দেশ ও বিদেশের নামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগ দিতে থাকেন। এই হল ব্যর্থতার কারণ।

দ্বিতীয়ত, এখন যে সব কোচিং সেন্টার আছে তাদের শীর্ষে আছেন একজন প্রাক্তন আইএএস, যাঁর প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা বিপুল, কিন্তু নতুন পাঠ্যক্রম সম্পর্কে কোনও অভিজ্ঞতা নেই। ফলে তাঁরা জানেন না যে বর্তমানে কর্মরত বা প্রাক্তন আইএএস বা আইপিএস আধিকারিকরা উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিতে অক্ষম। তাঁরা এও জানেন না যে, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা অধ্যাপকরাও এই কাজের জন্য উপযুক্ত নন। একমাত্র তাঁরাই উপযুক্ত, যাঁদের বর্তমান সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা সম্পর্কে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা আছে। ফলে সাফল্য আসছে না।

এই দ্বিতীয় কারণটি প্রমাণিত হবে যদি অতীতের একটি ঘটনা উল্লেখ করা যায়। বামফ্রন্ট সরকারের আমলে এ রাজ্য থেকে কোনও আইএএস বা আইপিএস হচ্ছে না দেখে রাজ্য সরকার স্বভাবতই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন এবং এই প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী এ বিষয়ে সদর্থক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তদানীন্তন উচ্চশিক্ষা মন্ত্রীকে অনুরোধ করেন। তদনুযায়ী উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী সত্যসাধন চক্রবর্তী প্রেসিডেন্সি কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষের সঙ্গে বিশদ আলোচনা করে প্রেসিডেন্সিতে 'আইএএস ট্রেনিং সেন্টার অ্যাট প্রেসিডেন্সি কলেজ' নামে একটি রেজিস্ট্রিকৃত সংস্থা গঠন করেন এবং অধ্যক্ষকে এই সংস্থার ডিরেক্টর পদে নিয়োগ করা হয়। উল্লেখ্য, এই অধ্যক্ষ কেন্দ্রের সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার সঙ্গে দশ বছর ও রাজ্যের সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার সঙ্গে পঁচিশ বছর ধরে নানাভাবে যুক্ত ছিলেন। অর্থাৎ, এই দুটি পরীক্ষা সম্পর্কে তাঁর যথেষ্ট প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা ছিল। সেন্টারটির কাজ শুরু হয় ১৯৯৫ সালে। সে বছর ছ'টি ছাত্র ভর্তি হয় এবং প্রথম বছরেই একজন ডাক্তার আইপিএস হন। ১৯৯৭ সালে সেই অধ্যক্ষ অবসর নেন। তবে নতুন অধ্যক্ষ ও সেন্টারের গভর্নিং বডির অনুরোধে তিনিই ডিরেক্টর পদে থেকে যান। প্রতি বছর প্রায় তিনশো ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির জন্য আবেদন করতেন। একটি লিখিত পরীক্ষা ও ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে ৭০ জনকে বাছাই করা হত আর দশ জন থাকতেন ওয়েটিং লিস্টে। পাঁচ বছর পর রাজ্য সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার্থীদেরও ভর্তি করা শুরু হয়। ডিরেক্টর নিজে অনেকগুলি ক্লাস নিতেন এবং সেন্টারের শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে তিনি ছিলেন অতিমাত্রায় সতর্ক। যার ফলে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রায় কোনও শিক্ষককেই এই কোচিং সেন্টারে পড়ানোর সুযোগ দেওয়া হয়নি, কোনও আইএএস ও আইপিএস আধিকারিককে তো নয়ই, অবশ্য তাঁরা মেইনস পরীক্ষায় সফল পরীক্ষার্থীদের মক ইন্টারভিউ নেওয়ার জন্য গঠিত বোর্ডের সদস্য থাকতেন।

Advertisement

ওই ডিরেক্টর ১২ বছর কাজ করে পদত্যাগ করেন এবং তারপরেই কোচিং সেন্টারটি বন্ধ হয়ে যায়। এই ১২ বছরে সাফল্যের খতিয়ান এই রকম ---

আইএএস -- ৩ ( একজনের র‍্যাঙ্ক হয় ২৪ )

আইএফএস - ১

আইপিএস - ২

সেন্ট্রাল সার্ভিসেস - ১১

ডব্লুবিসিএস-এ সাফল্য

ডব্লু বি সি এস ( গ্রুপ A )- ১২ (এঁদের মধ্যে একজন প্রথম হন )

ডব্লু বি সি এস ( গ্রুপ B, অর্থাৎ পুলিশ সার্ভিস )

ডব্লু বি সি এস ( সি গ্রুপ ) - ১৪

আশা করি, মন্তব্য নিস্প্রয়োজন।


 

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement