Bomb Factory Of West Bengal: ৮ জুলাই অর্থাৎ শনিবার, মানে রাত পোহালেই এ রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট। কিন্তু এখানে ব্যাপক হিংসার পরম্পরা এখনও শেষ হয়নি। গত কিছুদিন থেকে রাজনৈতিক হিংসার একাধিক ঘটনা পশ্চিমবাংলায় সামনে এসেছে। এর মধ্যে রাজ্যের একের পর এক এলাকায় তাজা বোমা উদ্ধার হয়েছে। বোমা বাজারে তা মুড়ি-মুড়কির মতো বিক্রি হচ্ছে। মানবতার শত্রুরা ৫০০ এবং ১ হাজার টাকায় মৃত্যুর এই ভয়ঙ্কর হাতিয়ার বিক্রি করছে।
আজতকের গোপন ক্যামেরায় পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়ে বোমা বিক্রি নিয়ে চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি দিয়েছেন বোমা কারখানার সঙ্গে জড়িত একাধিক ব্যক্তি। যারা বুক ফুলিয়ে সমাজে ঘুরে বেড়াচ্ছেন আর বোম তৈরি যারা করেছেন তারা স্বীকার করেছেন যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় বোমার ডিমান্ড এখন ব্যাপক রয়েছে। ২৪ ঘন্টার মধ্যে বেআইনি বোমা ফ্যাক্টরিতে ১০০ টি বোমা তৈরি করা যায় অর্থাৎ বাংলায় নির্বাচনী হিংসার সময় বোমার ব্যবহার করা হচ্ছে। এর পিছনে পুলিশ প্রশাসনের গাফিলতি সামনে এসেছে।
স্টিং অপারেশনের সামনে সামনে আসা ভয়াবহ সত্যতা
আজতক/ইন্ডিয়া টুডের স্টিং অপারেশনে বাংলায় চলতে থাকা অবৈধ বোমা ফ্যাক্টরির ভয়ংকর সত্যতা সামনে এসেছে। এর মধ্যে আন্ডার কভার টিমের সঙ্গে দেখা হয় বাঁকুড়া জেলার একজন বোমা সাপ্লাইয়ারের সঙ্গে। যিনি বিভিন্ন রকমের দেশি বোমা দেখান। তারা এই বোমার একাধিক পদ্ধতি সম্পর্কে জানায়। এর মধ্যে কৌটা বোম অর্থাৎ কাঁচা বোমা এবং নারকেল বোমা রয়েছে, যার একাধিক গুণ বর্ণনা করে সাপ্লাইয়াররা। বোমার কার্যক্ষমতা এবং ডিমান্ডও জানান। এই সময় সাপ্লায়ারদের দাবি যে, একাধিক রাজনৈতিক দলের কাছে তারা এ রকম বোমা সাপ্লাই করে।
নির্বাচনের সময়ে বেড়ে যায় বোমার ব্যবসা
বোমা সাপ্লাইয়াররা জানিয়েছেন যে, ইলেকশনের সময় তার অবৈধ কারবার কয়েকগুণ বেড়ে যায়। যখনই নির্বাচন আসে তখনই তাদের চাহিদা বাড়ে। এমনিতেই দেশি বোমার ডিমান্ড ক্রমাগত বাড়ছে। এর জন্য সুরক্ষিত সাপ্লাই চেন তৈরি করা হয়েছে। যাতে এই অবৈধ ব্যবসা সম্পূর্ণরূপে গুপ্ত রাখা সম্ভব হয় এবং আইনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখানো যায়।
গ্রেনেডও বেচে এই সাপ্লাইয়াররা
এই সিক্রেট অপারেশনের সময়ে পূর্ব বর্ধমানের এক বোমা সরবরাহকারী জানায় যে তারা পঞ্চায়েত নির্বাচনের ঠিক আগে এক রাজনৈতিক দলকে ২ হাজার বোমা বিক্রি করেছে। যখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে এই দেশি বোমার মধ্যে কী কী মেলে? তখন এই জবাবে সাপ্লায়ার জানায় যে, তাদের কাছে গ্রেনেড এবং দুরকমই পাওয়া যায়।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে আগে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে
২০২১-এ পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে হওয়া হিংসাত্মক ঘটনা পুরো দেশের মনোযোগ আকর্ষণ করে নিয়েছিল। এই হিংসা প্রায় ২৫ জনের মৃত্যু হয় যেখানে শতাধিক লোক জখম হয়েছিলেন। সেখানে শনিবার ৮ জুলাই ২০২৩ হতে চলা পঞ্চায়েত নির্বাচনে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। মুর্শিদাবাদে হওয়া ঘটনা ছিল ২৬ বছরের যুবক আলিম শেখের মৃত্যু হয়েছে। এখানে অন্যরা জখম হন। শুধু তাই নয় এই ঘটনা ঠিক পাঁচ দিন আগে ৭ থেকে ১১ বছরের বয়সী পাঁচটি বাচ্চা মারাত্মকভাবে জখম হয় বোমার আঘাতেই। আসলে এই বাচ্চা দেশি বোমাকে খেলার সামগ্রী মনে করে খেলছিল। সেখানে উত্তর ২৪ পরগনার একটি প্রাইমারি স্কুলের কাছে চারটি বোমা পাওয়া যায়। এছাড়া কোচবিহার, মালদা সহ একাধিক জায়গায় লাগাতার বোমা উদ্ধারের পরম্পরা চলছে।